আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অধ্যুষিত জেলার উজিরপুর উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা শিবপুর। শিবপুর ও আশপাশের গ্রাম পশ্চিম সাতলার পুরুষেরা কৃষি কাজ ও মাছ চাষ করে তা বিক্রির মাধ্যমে জিবীকা নির্বাহ করে আসছেন। ওই এলাকার বাসিন্দাদের পূর্ব পুরুষের আমল থেকে ভোগদখলীয় সম্পত্তির ওপর লোলুপ দৃষ্টি পরেছে প্রভাবশালী এক ভূমিদস্যুর।

প্রতারক চক্রের মাধ্যমে ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে ওইসব এলাকার কৃষকদের সহায় সম্পত্তির মালিকানা দাবি করে দীর্ঘদিন থেকে মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানী করে আসছেন চিহ্নিত ভূমিদস্যু। ইতোমধ্যে লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ প্রায় অর্ধশতাধিক নিরীহ পরিবারের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের সহায় সম্পত্তি দখল করে গ্রাম থেকে উৎখাত করা হয়েছে। স্থানীয় অসংখ্য আওয়ামী লীগ নেতাসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবারের সম্পত্তি দখলে ব্যর্থ হয়ে ভূমিদস্যু ও তাদের সহযোগিরা দেশের বিভিন্ন থানায় অসংখ্য মামলা দায়ের করে হয়রানী করে আসছেন।

সকল অভিযোগের তীর এক সময়ের জাহাজের ক্যাপ্টেন পদে চাকরি করে আলাদিনের চেরাগ পেয়ে একটি বেসরকারী ব্যাংকের মালিকসহ বর্তমানে শিল্পপতি দাবিদার বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর গ্রামের বাসিন্দা এম মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুলের বিরুদ্ধে। ভূক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, হঠাৎ করে বিশাল বিত্ত বৈভবের মালিক বনে যাওয়া এম মোয়াজ্জেম হোসেন গত দুই মাস যাবত আওয়ামী লীগ নেতা দাবি করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসন থেকে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে তোরণ নির্মান, ব্যাপক পোষ্টারিং ও ফেস্টুন সাটিয়ে নিজেকে জানান দিচ্ছেন প্রার্থী হিসেবে। এমনকি তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ত্রী আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি’র ছবি সংবলিত ব্যানার বানিয়ে হাতির পিঠে বেঁধে গণসংযোগের নামে জাতীয় নেতাদের অবমূল্যায়ন করে চলেছেন। আর এতে মোটা অংকের টাকা পেয়ে উৎসাহ যোগাচ্ছেন স্থানীয় সুবিধাবাদী কতিপয় নেতা।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বসন্তের কোকিলের ন্যায় নির্বাচনী মাঠে এসে আপত্তিকর কর্মকান্ডের মাধ্যমে ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম হোসেনের উত্তপ্ত করে তোলার বিষয়টি ভালো চোখে দেখছেন না খোঁদ দক্ষিণাঞ্চলের আওয়ামী লীগের একমাত্র অভিভাবক খ্যাত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি। এজন্য তিনি কয়েকজন নেতাকে শ্বাসিয়েছেন বলেও সূত্রগুলো দাবি করেছেন।

সরেজমিনে শিবপুর ও পশ্চিম সাতলা গ্রাম ঘুরে জানা গেছে, একসময় জাহাজের ক্যাপ্টেন হিসেবে চাকরি করা এম মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুলের নানা অপকর্মের বিস্তার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি সময়ে তার (মোয়াজ্জেম) ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনী তান্ডব চালিয়ে সংখ্যালঘুসহ প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারের সহয় সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে। তান্ডবের একপর্যায়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন ওইসব পরিবারের সদস্যরা।

শিবপুর গ্রামের নৃপেন বাড়ৈ জানান, তাদের বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্বেও ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম তার সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে তাদের দুই একর জমি জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে। জাল জাঁলিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র বানিয়ে তাদের আরও ৭৮ শতক জমির উপর মিথ্যা মামলা দিয়ে জবরদখল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাসুম বিল্লাহ বলেন, ২০১০ সাল থেকে ভূমিদস্যু ক্যাপ্টেন এম মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল আমাদের ক্রয়কৃত ও পৈত্রিক ওয়ারিশসূত্রের ১২ একর সম্পত্তি দখলের পায়তারা শুরু করেন। বেশ কয়েকবার ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আমাদের জমি দখলের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মোয়াজ্জেম আমাকে (মাসুম) সহ অন্যান্য ওয়ারিশদের সম্পত্তি দখল করার জন্য বিভিন্ন থানায় মোট সাতটি মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করে হয়রানি করছে।

তিনি আরও জানান, ১৯৩৮ সাল থেকে তারা সম্পত্তির বৈধ মালিক হিসেবে ভোগদখল করে আসলেও ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম তা ভূয়া ডিক্রির মাধ্যমে ক্রয়সূত্রে মালিকানা দাবি করেন। তার দাবি অনুযায়ী ১৯৬৯ সালের ৩৮৫ নং দেওয়ানী মোকদ্দমার ডিক্রির সাচির্ংয়ে কোন কেচ নেই বলেও আদালত থেকে তাদের লিখিতভাবে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তার পরেও অবৈধ টাকার বিনিময়ে মোয়াজ্জেম হোসেন তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে তাদের সহয় সম্পত্তি দখল করার জন্য হামলার পর এবার একের পর এক মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানী শুরু করেছে।

সাতলা ইউনিয়নের ৩নং (শিবপুর) ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেনা সদস্য কাঞ্চন হাওলাদার বলেন, জাহাজের ক্যাপ্টেন এম মোয়াজ্জেম হোসেন ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা দীর্ঘদিন থেকে আমার ভোগ দখলীয় জমি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। তার অবৈধ দখলে বাঁধা প্রদান করায় সে আমার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করে হয়রানি করে আসছে।

শিবপুর গ্রামের মরিয়ম বেগম ও আলেয়া বেগম বলেন, ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীরা আমাদের ক্রয়কৃত এবং পৈত্রিক সম্পত্তি দখলের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে। মিথ্যে মামলায় হয়রানীর শিকার হয়ে এখন আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহিম হাওলাদার বলেন, পৈত্রিক ও ক্রয়কৃত তিন একর সম্পত্তি দখলের জন্য ভূয়া ডিক্রি করে ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম ইতোমধ্যে আমার বিরুদ্ধে পাঁচটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন।

পশ্চিম সাতলা গ্রামের বাসিন্দা ও উপজেলা যুবলীগের সদস্য ইকবাল বালী জানান, তার ক্রয়কৃত দশ একর ৬৮ শতক সম্পত্তি দখল করার জন্য মোয়াজ্জেম তার বিরুদ্ধে পাঁচটি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে। এছাড়া তাকে হত্যার জন্য হুমকি অব্যাহত রাখায় তিনি (ইকবাল) এখন ভূমিদস্যু মোয়াজ্জেম ও তার বাহিনীর হামলা এবং মামলায় গ্রেফতার আতংকে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

শিবপুর গ্রামের বজলুর রহমান, ফজলুল হক ও আজিজুল হক জানান, তাদের ক্রয়কৃত ও পৈত্রিক প্রায় তিন একর জমি দখল করার জন্য মোয়াজ্জেম তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে। তাদের এখন সব সময় হামলা ও মামলার আতংকে দিন কাটাতে হচ্ছে।

একই এলাকার শাজাহান বেপারী জানান, তিনিসহ তার অন্যান্য ভাইদের চার একর সম্পত্তি দখলের জন্য দীর্ঘদিন থেকে মোয়াজ্জেম বিভিন্নভাবে পায়তারা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসে ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে তিনটি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ওই এলাকার ফরিদ শাহ জানান, তার নিজের ক্রয়কৃত ও পৈত্রিক তিন একর সম্পত্তি দখলের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে মোয়াজ্জেম তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ তিনটি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে।

পশ্চিম সাতলা গ্রামের বাসিন্দা ও আওয়ামী ওলামা লীগের প্রচার সম্পাদক মাওলানা মোঃ রুহুল আমীন জানান, তার পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া চার একর সম্পত্তি দখল করার জন্য মোয়াজ্জেম হোসেন তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ আটটি মামলা দায়ের করেছে।

শিবপুর গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান জানান, তার পৈত্রিক সম্পত্তিত্বে তিনি দুইবছর পূর্বে মুরগীর ফার্ম নির্মান করায় ক্ষিপ্ত হয়ে মোয়াজ্জেম হোসেনের তার নামে একাধিক মিথ্যে মামলা দায়ের করেছে। মিথ্যে মামলায় গ্রেফতার এড়াতে এখনও তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

একই গ্রামের মৈজদ্দিন বেপারীর কন্যা বেগম বিবি বলেন, পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া তার এক একর সম্পত্তি দখল করে নিয়েছেন ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগে জানা গেছে, পশ্চিম সাতলা ও শিবপুর এলাকার প্রায় দুই হাজার একর জমির ওপর দীর্ঘদিন থেকে লোলুপ দৃষ্টি পরেছে ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম হোসেনের। ইতোমধ্যে ভূয়া ডিক্রির মাধ্যমে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে অর্ধশতাধিক পরিবারের সম্পত্তি দখল করে তাদের উৎখাত করা হয়েছে। এছাড়া পাঁচ শতাধিক পরিবারের সম্পত্তি দখল করার জন্য একের পর এক মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে। এছাড়াও মোয়াজ্জেম হোসেন ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে শিবপুরের সীমান্তবর্তী কান্দি এলাকার অসংখ্য পরিবারের সহয় সম্পত্তি দখল করে উচ্ছেদ করার অভিযোগ রয়েছে।

সূত্রে আরও জানা গেছে, ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম হোসেন বিভিন্ন সময় থানা পুলিশের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে ভূক্তভোগীদের হুমকি প্রদর্শন করে আসছেন। ভূমিদস্যু ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেমের হাত থেকে রেহাই পেতে ভূক্তভোগীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ত্রী আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি সহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

গত ১৪ অক্টোবর উজিরপুর উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসে গিয়ে জানা গেছে, ওইদিন সেটেলমেন্ট অফিসে প্রায় ৪০টি মামলার শুনানীর দিনধার্য্য ছিলো। এরমধ্যে ৩৬টি মামলাই হচ্ছে ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম হোসেন বনাম শিবপুরবাসীর মধ্যে।

এ ব্যাপারে উপজেলা সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা আব্দুস সালামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিরিহ গ্রামবাসীকে মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি যতোদিন চেয়ারে আছি ততোদিন ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম হোসেন কেন যতো বড় প্রভাবশালীই হোকনা কেন আমাকে দিয়ে কেউ অবৈধ সুযোগ নিতে পারবেনা।

তিনি আরও বলেন, ১৪ অক্টোবরের প্রতিটি মামলার শুনানী ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে গেছে।

অভিযুক্ত ক্যাপ্টেন এম মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিফ না করায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে মোয়াজ্জেম হোসেনের ছোট ভাই মেহেদী হাসান সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য সংবাদকর্মীদের অনুরোধ করে একসাথে বসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের প্রস্তাব দিয়েছেন।

সূত্রমতে, গত ১৯ সেপ্টেম্বর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বানারীপাড়া থানা পুলিশ উপজেলার ইলুহার গ্রামে অভিযান চালিয়ে জাল দলিল প্রস্তুতের মূলহোতা মুহুরী আব্দুল মান্নান তালুকদারকে আটক করে। পরবর্তীতে তার দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মান্নানের সহযোগী বাবুল চৌকিদার, শাহজাহান হাওলাদার ও নজর আলী মৃধাকে আটক করে।

আটককৃতদের কাছ থেকে পুলিশ বিপুল পরিমাণ ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমল থেকে দলিল প্রস্তুতের স্টাম্প, বিভিন্ন অফিস-আদালতের স্টাম্প ও সিল, অসংখ্য জাল দলিল, আদালতের রায়ের কপি, ডিক্রি, শত শত ফলি কাগজ ও ভূয়া ওয়ারেন্টসহ অন্যান্য কাগজপত্র জব্দ করেন।

আটককৃতরা দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে জাল দলিল, ভূয়া ডিক্রিসহ জজ কোর্ট, ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্ট, রেকর্ড রুম, ভূমি অফিসের ভূয়া কাগজপত্র প্রস্তুত করে বিভিন্ন অপরাধমুলক কর্মকান্ডের সহযোগিতা করে আসছিলো।

ভুক্তভোগীরা জানান, ওই প্রতারক চক্রের মাধ্যমেই ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম হোসেন নিরিহ গ্রামবাসীর সহয় সম্পত্তি ভূয়া ডিক্রি ও জালজালিয়াতির মাধ্যমে মালিকানা দাবি করে আসছে।

(টিবি/এসপি/অক্টোবর ১৫, ২০১৮)