রূপক মুখার্জি, নড়াইল প্রতিনিধি : দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লোহাগড়া উপজেলার পূর্বাঞ্চলের মধুমতি নদীর কালনা পয়েন্টে অবশেষে ব্রীজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। কালনা ব্রীজটি হবে ছয় লেনের। সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় এই ব্রীজের নির্মান কাজ শুরু হয়েছে।

গত মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, কালনা ফেরিঘাটের লাগোয়া দক্ষিণে নির্মিত হবে ব্রীজটি। এর উভয় পাড়ে ব্রীজের মালামাল আনা শুরু হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও ব্রীজ কর্তৃপক্ষ লোহাগড়ার মদিনা পাড়ায় ভাড়া বাড়িতে তাদের কার্যালয় স্থাপন করেছে। মদিনা পাড়ার একটু পূর্বে গন্ধবাড়িয়া এলাকায় তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ছয় লেনের এই ব্রীজটি হবে এশিয়ান হাইওয়ের অংশ। চারটি মূল লেনে দ্রæত গতির এবং দুটি লেনে কম গতির যানবাহন চলাচল করবে। ব্রীজটির দৈর্ঘ্য হবে ৬৯০ মিটার এবং প্রস্থ ২৭ দশমিক ১ মিটার। উভয় পাশে অ্যাপ্রোচ সড়ক হবে ৪ দশমিক ৩০ কিলোমিটার। ব্রীজটি নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় হবে ৯৫৯ কোটি টাকা। পরবর্তীতে ব্রীজের নির্মাণ ব্যয় বাড়তে পারে। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কর্পোরেশন এজেন্সির (্জাইকা) অর্থায়নে ব্রীজটি নির্মিত হবে। জাপানের টেককেন কর্পোরেশন ও ওয়াইবিসি এবং বাংলাদেশের আব্দুল মোমেন লিঃ যৌথভাবে এই ব্রীজের ঠিকাদার।

প্রকল্পের ব্যবস্থাপক সুমন সিংহ বলেন, গত ২৪ জুন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে ব্রীজ কর্তৃপক্ষের কার্যাদেশ চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। তখন থেকে ৩৬ মাসে অর্থাৎ ৩ বছরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার এই ব্রীজটির নির্মান কাজ শেষ করবেন। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ব্রীজটির পাইলিং শুরু হবে। ডিসেম্বর থেকে ব্রীজের মুল পাইলিং এর কাজ শুরু হবে। এর সাথে সংযোগ সড়কের কাজও চলবে।

ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের পরিচালক কে এম আতিকুল হক বিডি খবর কে বলেন, বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে দৃষ্টি নন্দন ও ব্যতিক্রমী ছয় লেনের ব্রীজ হবে এটি।এমন ব্রীজ দেশে প্রথম নির্মান হচ্ছে বলে তিনি জানান।

ব্রীজটি চালু হলে উভয় পাড়ের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে। এটা এই এলাকার মানুষের স্বপ্নের ব্রীজ। এই ব্রীজ নির্মাণের দাবিতে বহু আন্দোলন কর্মসূচী পালিত হয়েছে। ব্রীজের গুরুত্ব বিবেচনা করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর নড়াইলে এক নির্বাচনী জনসভায় এ ব্রীজটি নির্মানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এ অঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের কালনা ব্রীজ নির্মান কাজ শুরু হয়েছে।

(আরএম/এসপি/অক্টোবর ২৪, ২০১৮)