নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি : আজ ২৫ শে অক্টোবর ঐতিহাসিক বনগ্রাম গণহত্যা দিবস। উপজেলা সদর থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে গয়হাটা ইউনিয়নে যমুনা নদীর শাখা নদী ধলেশ্বরীর পাড়ে গ্রামটির অবস্থান। ১৯৭১ সালের এই দিনে টাঙ্গাইলের নাগরপুরের এই গ্রামটিতে ব্যাপক ধ্বংস যজ্ঞ ও গণহত্যা চালায় পাকিস্থানী বাহিনী। স্বাধীনতার এত বছর অতিক্রান্ত হলেও যেন অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে আছে গণকবরটি। একটি স্মৃতি স্তম্ভ নির্মিত হলেও তা রক্ষনা বেক্ষনের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। গণকবরটিতে যাওয়ার কোন রাস্তা নেই। এলাকাবাসীর জোর দাবী গণকবরটি সরকারীভাবে সংস্কার করে সেখানে যাওয়ার একটি ভালো রাস্তা নির্মাণ করা হোক।

জানা যায়, ১৯৭১ সালের ২১ শে অক্টোবর বনগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান নিয়েছেন এমন সংবাদ পেয়ে সিরাজগঞ্জ থেকে গানবোট নিয়ে এসে পাক হানাদার বাহিনী বনগ্রাম আক্রমন করে। সে সময় তুমুল যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর ১ জন মেজর সহ ৩ জন নিহত হয়। আর মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে শহীদ হন জেলার কালিহাতী উপজেলার নজরুল ইসলাম নজু, মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার জাহাঙ্গীর আলম, আকতারুজ্জামান ও ওহাব আলী সহ ৭জন। অবস্থা বেগতিক দেখে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে ও পাক হানাদার বাহিনী স্ব স্ব ক্যাম্পে ফিরে যায়। পরবর্তীতে পাক হানাদার বাহিনী ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে ২৫ শে অক্টোবর বনগ্রাম আক্রমন করে অগ্নি সংযোগ ও ব্যাপক গণহত্যা চালায়। আবাল, বৃদ্ধ, শিশু ও মহিলা কেউ রেহাই পায়নি হায়েনাদের হাত থেকে, হত্যা করে ৫৭ জনকে এবং ১২৯ টি বাড়িতে অগ্নি সংযোগ করে। পরে তাদেরকে একত্রে মাটি চাপা দেওয়া হয়। স্বাধীনতার পরে ঐ স্থানটি বনগ্রাম গণকবর হিসেবে নাম করন করা হয়।

গণকবর সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সুজায়েত হোসেন জানান, নানা প্রতিকূলতা সত্বেও আমরা এ পর্যন্ত গণকবরে একটি স্মৃতি স্তম্ভ, গেইট ও বাউন্ডারী নির্মান করতে পেরেছি। স্থানীয় জনগণ শহীদদের স্মৃতি ধরে রাখতে বিদ্যালয়, বাজার ও মাদ্রাসা নির্মাণ করেছেন। এখন নাগরপুর-শাহজানী পাকা সড়ক থেকে গণকবরে যাওয়ার শহীদ তাহের সড়কটি পাকা করলে গণকবরটি রক্ষনা-বেক্ষন করা সম্ভব হবে। শহীদ তাহের সড়কটি দ্রুত পাকা করতে উপজেলার সকল মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে আমি প্রশাসনের নিকট আকুল আবেদন জানাচ্ছি ।

(এম/এসপি/অক্টোবর ২৫, ২০১৮)