স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে কারাগারে প্রথম শ্রেণির বন্দির সুবিধা দিতে কারা কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাকে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। সরকারের সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

সোমবার অদেশের পর খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে প্রথম শ্রেণির বন্দির সুবিধা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদেশটি বিশেষ বার্তাবাহকের মাধ্যমে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে।’

কারাগারে ডিভিশন চেয়ে ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেনের স্ত্রী সাজু হোসেনের করা আবেদনের শুনানি শেষে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ আদেশ দেন। আদালতে মইনুলের পক্ষে শুনানি করেন ড. কামাল হোসেন ও অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। ডেপুর্টি অ্যার্টনি জেনারেল মো. মোখলেসুর রহমান।

কারাগারে ডিভিশন চেয়ে করা আবেদনের ওপর রবিবার শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশের জন্য আজ সোমবার দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।

এর আগে সকালে ব্যারিস্টার মইনুলের ডিভিশন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।

এর আগে গত ২৩ অক্টোবর ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালত ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। কারাগারে তাকে সাধারণ বন্দী হিসেবে রাখা হয়। এরপর রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তার ডিভিশন চেয়ে আবেদন করা হয় বলে জানান তার মামা ও সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন।

গত ২২ অক্টোবর রাজধানীর উত্তরায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) নেতা আ স ম আবদুর রবের বাসা থেকে ব্যারিস্টার মইনুলকে গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল। আটকের পরপরই তাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

ডিবি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম জানান, ব্যারিস্টার মইনুলকে রংপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় করা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।

গত ১৬ অক্টোবর একাত্তর টেলিভিশনের টক শো ‘একাত্তরের জার্নাল’ এ ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি প্রশ্ন করেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে আপনি যে হিসেবে উপস্থিত থাকেন- আপনি বলেছেন আপনি নাগরিক হিসেবে উপস্থিত থাকেন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই বলছেন, আপনি জামায়াতের প্রতিনিধি হয়ে সেখানে উপস্থিত থাকেন।’

মাসুদা ভাট্টির এই প্রশ্নে রেগে গিয়ে মইনুল হোসেন বলেন, ‘আপনার দুঃসাহসের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। আপনি চরিত্রহীন বলে আমি মনে করতে চাই। আমার সঙ্গে জামায়াতের কানেকশনের কোনো প্রশ্নই নেই। আপনি যে প্রশ্ন করেছেন তা আমার জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর।’

এ ঘটনার পর রংপুরে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেন মানবাধিকারকর্মী মিলি মায়া। তিনি রংপুর নগরীর মুলাটোল মহল্লার বাসিন্দা। তার পক্ষে রংপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দাখিল করেন সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আইনুল হোসেন। বিচারক আরিফা ইয়াসমিন মুক্তা মামলাটি গ্রহণ করেন। এই মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। একই ঘটনায় বিভিন্ন জেলায় আরও অনেক মামলা দায়ের করা হয়েছে মইনুলের বিরুদ্ধে।

(ওএস/এসপি/অক্টোবর ২৯, ২০১৮)