স্বাস্থ্য ডেস্ক : মেয়েদের ওপর অ্যাসিড ছোঁড়ার ঘটনা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। যে কোনো কারণে কোনো মেয়েকে শিক্ষা দিতে তার মুখে অ্যাসিড ছুঁড়ে মারা হয়। কারো মুখ সারা জীবনের মতো বিকৃত করে দিতে অ্যাসিড নিক্ষেপ ভয়াবহ অপরাধ।

অ্যাসিড সন্ত্রাস থেকে মেয়েদের নিরাপদ রাখতে এক চিকিৎসক উদ্ভাবন করেছেন অ্যাসিডপ্রুফ মেকআপ। এতদিন কেবল সাজগোজের প্রসাধনী হিসেবে মেকআপ ব্যবহৃত হলেও, নতুন উদ্ভাবিত মেকআপ অ্যাসিডের ক্ষতি থেকে ত্বক সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম।

নতুন এই মেকআপ উদ্ভাবন করেছেন যুক্তরাজ্যের ৩২ বছর বয়সি চিকিৎসক ডা. আলমাস আহমেদ। তিনি গত এক দশক ধরে এমন একটি রাসায়নিক উপাদান নিয়ে গবেষণা করেছেন, যা অ্যাসিডে ঝলসে যাওয়া প্রতিরোধ করতে কসমেটিকসে ব্যবহার করা যাবে।

তিনি দাবী করেন, ‘অ্যাক্যারিয়ার’ নামক এই রাসায়নিক উপাদানটি কোনো ক্ষয়কারী পদার্থ যেমন অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়ায় যাবে না। বর্তমানে এটি কেবল ফাউন্ডেশন মেকআপ হিসেবে তৈরি করা হলেও, ডা. আলমাসের প্রত্যাশা ভবিষ্যতে এটি ময়েশ্চারাইজার এবং সানস্ক্রিন ক্রিম হিসেবেও তৈরি করা হবে।

ডা. আলমাস তার উদ্ভাবিত এই পণ্যটি নিয়ে খুব আশাবাদী, যা ত্বকে তরল প্রতিরোধী ও ৪০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপ সহ্য করতে পারে এবং ভবিষ্যতে তিনি ছুরি প্রতিরোধক ময়েশ্চারাইজ ক্রিম উদ্ভাবনে আগ্রহী।

যুক্তরাজ্যের পশ্চিম ইয়র্কশায়ারের ব্রাডফোর্ড এলাকার বাসিন্দা ডা. আলমাস, ২০০৮ সালে টিভি অভিনেত্রী কেটি পাইপারকে প্রাক্তন প্রেমিক অ্যাসিড নিক্ষেপ করে মুখ ঝলসে দেওয়ার ঘটনা থেকে এ ধরনের কোনো কিছু উদ্ভাবনের চিন্তা করেন।

ডা. আলমাস এ ধরনের মেকআপ উদ্ভাবনের গবেষণায় নিজের কাছ থেকে ৬০ হাজার পাউন্ড বিনিয়োগ করেছেন। তিনি আশা করছেন, যুক্তরাজ্যের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা দ্বারা খুব শিগগির এটি অনুমোদিত হবে এবং বিশ্বব্যাপী নারীরা তা ব্যবহার করতে পারবেন।

এই নারী চিকিৎসক বলেন, ‘এই ধারণাটি প্রথমে এসেছিল যখন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলাম এবং কেটি পাইপারের খবরটি শুনেছিলাম। এটি সত্যিই হৃদয় বিদারক ঘটনা ছিল এবং আমার মনে আছে খবরটি নিয়ে আমার বোনের সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। এশিয়ার দেশগুলোতে অ্যাসিড-সন্ত্রাসের বড় সমস্যাটির বিষয়ে সে অবগত ছিল এবং আমাকে এ ব্যাপারে বেশি কিছু জানিয়েছিল। তাই আমি অ্যাসিড প্রতিরোধক পণ্য তৈরি করতে চেয়েছিলাম।’

তিনি আরো বলেন, ‘এটি মূলত একটি ফাউন্ডেশন যা দেখতে এবং ব্যবহারে সাধারণ মেকআপের মতোই কিন্তু তা তাপ প্রতিরোধী এবং অ্যাসিড প্রতিরোধী। এটি ত্বককে ঝলসে যেতে দেবে না।’

ডা. আলমাস বলেন, ‘আমি আশা করি এই পণ্য ব্যবহারে অ্যাসিডে পোড়া এবং স্বাভাবিক পোড়ার মতো ঘটনা অতীতে পরিণত হবে।’

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ০২, ২০১৮)