শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট : বাগেরহাট সদরের ষাটগুম্বুজ ইউনিয়নের সায়েড়া-লক্ষীখালী সেতুটি একমাস ধরে ভেঙ্গে পড়ে রয়েছে। লক্ষীখালী নদীর উপর এলজিইডির নির্মিত এই সেতুটি এক মাস আগে ভেঙ্গে পড়ায় পূর্ব সায়েড়া, পশ্চিম সাড়েয়া, চাকশ্রী, দয়লা, গিলাতলা, আলীপুর, কাশীপুর ও গোবিন্দপুর এই ৮টি গ্রাম প্রায় ২৫ হাজার মানুষ চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। নদী পারাপারের বিকল্পকোন ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভাঙ্গা সেতুর উপর দিয়ে পারাপার হচ্ছেন তারা। ফলে ঝুঁকি নিয়ে ভাঙ্গা সেতু পার হতে গিয়ে প্রায় প্রতিদিন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসিরা। কয়েকদিন আগে ভাঙ্গা সেতু থেকে পড়ে গুরুত্বর আহত হয় পূর্ব সায়েড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেনীর ছাত্র তামিম শেখ। এলজিইডির এই ভেঙ্গে পড়া সেতুটি পূনঃনিম্মান বা বিকল্প কোন ব্যবস্থার না করায় ৮টি গ্রামের মানুষ বিড়ম্বনার শেষ নেই।

সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙ্গা সেতুটির দু’পাশে রয়েছে পূর্ব সায়েড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সায়েড়া মধুদিয়া স্কুল এন্ড কলেজ ও ধোপাবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, চাকশ্রি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও আল মদিনা কিন্ডারগার্টেনের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন। এই ৮টি গ্রামের অধিকাংশ মানুষ মৎস্য চাষের উপর নিভরশীল। আগে তারা এই সেতুটি ব্যবহার করে সদও উপজেলার বারাকপুর, রামপাল উপজেরার চাকশ্রি ও ফকিরহাট উপজেলার ফলতিতা বাজারে মাছ বেচাকেনার জন্য সহজে যাতায়াত করতো। সেতুটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর থেকে তাদের এখন ১০ কিলোমিটার ঘুরে এ সব বাজারে যেতে হচ্ছে।

ভাঙ্গা সেতু পার হতে গিয়ে গুরুত্বর আহত স্কুল ছাত্র তামিম শেখের মা তাসলিমা বেগম বলেন, আমার ছেলেটি পূর্ব সায়েড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেনীর ছাত্র। কয়েক দিন আগে স্কুলে যাবার পথে ভাঙ্গা পার হতে গিয়ে সে নদীতে পড়ে যায়। এসময় ভাঙ্গা সেতুর রডে তার পায়ের বেশ খানিকটা অংশ কেটে যায় এবং সে মাথায় গুরুত্বর আঘাত পেয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। হাসপাতালে নেয়া হলে তার ৭টি সেলাই দিতে হয়েছে।

পূর্ব সায়েড়া গ্রামের ব্রাক কর্মী আকলিমা বেগম বলেন, কজের ক্ষেত্রে প্রতিদিন এ সেতুটি দিয়ে আমাকে পশ্চিম সায়েড়া গ্রামে যেতে হয়। সেতুটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর থেকে বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাকে নদী পার হতে হচ্ছে।

স্থানীয় মৎস্য চাষী সিদ্দিক আলী শেখ বলেন, আগে আমরা ঘের থেকে মাছ ধরে প্রতিদিন এ সেতুটি দিয়ে নসিমন বা মিনি ট্রাক নিয়ে চাকশ্রীসহ বিভিন্ন বাজারে যেতাম। এখন সেতুটি ভেঙ্গে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার ঘুরে মাছ নিয়ে আমাদের বিভিন্ন বাজারে যেতে হচ্ছে। যার ফলে আমাদের অর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি অতিরিক্ত সময় লাগছে।

বাগেরহাট এলজিইডির কর্মকর্তারা বলছেন, ভেঙ্গে পড়া সেতুটি নতুন করে নির্মাণ করতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদন শেষে অর্থ বরাদ্দ হলেই টেন্ডার আহবান করে জনগুরুত্বপূর্ন এই সেতুটি নিমাণ করা হবে।

(এসএকে/এসপি/নভেম্বর ০৪, ২০১৮)