স্টাফ রিপোর্টার : ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রথম জনসভা দুপুর দুইটায়। জনসভাকে কেন্দ্র করে উদ্যান, শাহবাগ ও রমনা এলাকাসহ পুরো রাজধানীতে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ। থানা পুলিশ, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), সাদা পোশাকের গোয়েন্দা পুলিশ নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছেন। শাহবাগ ও টিএসসি মোড়ে প্রস্তুত রাখা হয়েছে পুলিশের সাঁজোয়া যান।

সরেজমিনে শাহবাগ, মৎস্যভবন, হাইকোর্টের সামনের এলাকা, দোয়েল চত্বর, টিএসসি থেকে সোহরাওয়র্দী উদ্যানের প্রতিটি প্রবেশ পথে সতর্ক অবস্থায় দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের। এ ছাড়া প্রতিটি প্রবেশপথেও রয়েছে পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক দল।

ইউনিফর্মের পাশাপাশি সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করছেন বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য। অনুষ্ঠানের কারণে রাজধানীর শাহবাগ মোড়, মৎস্যভবন, দোয়েল চত্বর এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে সব ধরনের যানবাহন চলাচল।

ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘জনসভায় জনসমাগমের কথা মাথায় রেখে পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেয়া হয়েছে। এর বাইরে পুরো ঢাকা শহরেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে ডিএমপি।

এর আগে সোমবার (৫ নভেম্বর) রাতে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের ডিসি মাসুদুর রহমান জানান, জনসভা চলাকালীন নিরাপত্তা, মাইকের নির্দিষ্ট ব্যবহার, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জনসভা শেষ করাসহ বেশ কয়েক শর্তে ঐক্যফ্রন্টকে জনসভা করার অনুমতি দিয়েছে ডিএমপি।

ঢাকা মহানগর পুলিশের মিরপুর বিভাগের দারুসসালাম জোনের এডিসি রুহুল আমিন সাগর বলেন, ‘জনসভাকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা না হয়, সেজন্য রাজধানীর প্রবেশপথ গাবতলীতে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যানবাহনে তল্লাশি ও সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে।’

ঐক্যফ্রন্টের জনসভা সফল করতে মঙ্গলবার ভোর থেকে শুরু হওয়া মঞ্চ নির্মাণ, মাইক স্থাপনসহ সার্বিক প্রস্তুতি দুপুর ১২টার মধ্যে সম্পন্ন হয়। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট সংলগ্ন উদ্যানে দক্ষিণ দিকে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের বসার মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে।

ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন নতুন জোট হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর ঢাকায় এটি তাদের প্রথম জনসভা। দুপুর ২টায় জনসভা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আয়োজনে জনসভা আহ্বান করা হলেও মঞ্চের চারপাশ জুড়ে শুধুই খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার মুক্তির দাবি সংবলিত বড়-ছোট ব্যানার-পোস্টার। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে রাজধানীর বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকার মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপির নেতারা দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ব্যানারে খালেদা-তারেকের ছবির পাশাপাশি নিজেদের ছবিও ছাপিয়েছেন এসব ব্যানারে।

মঞ্চের আশপাশে বিএনপির দলীয় পতাকা ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে কাপড়ে লেখা স্লোগান সংবলিত বিভিন্ন হেডব্যান্ড বিক্রির জন্য উপস্থিত হয়েছেন হকাররা।

সকালের দিকে জনসভাস্থলে উপস্থিতি কম হলেও উপস্থিত ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উদ্যানে জনস্রোতের ঢল নামবে। রাজধানীর বাইরে থেকেও নেতাকর্মীরা জনসভায় যোগ দিতে ছুটে আসছেন।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে এই জনসভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ জোটের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য দেবেন। প্রথমবারের মতো ঐক্যফ্রন্টের মঞ্চে উঠবেন কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।

ওয়ারি বিভাগের ডিসি ফরিদ উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্টের জনসভাকে ঘিরে যাতে কেউ নাশকতা না করতে পারে, সেজন্য নিরাপত্তা জোরদার ও কড়া নজরদারি রাখতে ওপর থেকে নির্দেশনা রয়েছে। আমরা নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি।’

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ০৬, ২০১৮)