বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা সদরের ঐতিহ্যবাহী আরকেডিএস পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কাউকে না জানিয়ে অতিগোপনে গঠন করলেন ম্যানেজিং কমিটি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, অভিভাবক, এমনকি এলাকাবাসীর কেউই জানেন না কখন কিভাবে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত সোমবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কমিটির গঠনের বিষয়টি প্রকাশ পেলে সবাই হতবাক হয়ে যান। 

অভিযোগ রয়েছে, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম হাওলাদার নিজে সহকারী প্রধান থেকে প্রধান শিক্ষক পদে এবং পরবর্তীতে ওই শূণ্যপদে তারই আপন ভগ্নিপতিকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য এই পকেট কমিটি গঠন করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় দুই বছর আগে নিয়মিত কমিটির মেয়াদ শেষ হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) প্রধান করে তিন দফা আহবায়ক (এডহক) কমিটি গঠন করা হয়। এর পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইউএনওকে বাদ দিয়ে গত ৩এপ্রিল মমতাজ বেগম নামের একজনকে আহবায়ক করে পকেট কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটি অতি গোপনীয়তার মাধ্যমে কাগজে কলমে নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তালুকদার রাজা মাহমুদ, আ. হালিম খান, ইব্রাহীম বিন আব্দুর রশিদ ও জাহিদুল ইসলাম নামের চারজনকে অভিভাবক সদস্য হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত দেখান। পারবর্তীতে গত ৩০ আগস্ট মমতাজ বেগমকে সভাপতি মনোনিত করে যশোর বোর্ড থেকে অনুমোদন করান।

এ ব্যাপারে গোপন কমিটির সদস্য তালুকদার রাজা মাহমুদ ও আ. হালিম খানের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমাদের কাছ থেকে একটি কাগজে সাক্ষর নিয়েছিলেন। তবে, কবে কিভাবে ম্যানেজিং কমিটি গঠন হয়েছে তা জানা নেই।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস বলেন, এডহক কমিটি থেকে তাকে বাদ দিয়ে কবে আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়ছে তা জানেন না। কিছুদিন আগে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নির্বাচন প্রক্রিয়ার জন্য প্রিজাইডিং অফিসার চেয়ে আবেদন করলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে কি হয়েছে জানা নেই।

শরণখোলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌমিত্র সরকার জানান, তিনি প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করলেও এসংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র তার কাছে নেই। তবে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বি প্রাথী না থাকায় চারজন অভিভাবককে নির্বাচিত দেখানো হয়।

খোন্তাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও অভিভাবক মো. জাকির হোসেন খান মহিউদ্দিন বলেন, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম হাওলাদার নিজে সহকারী প্রধান থেকে প্রধান শিক্ষক পদে এবং পরবর্তীতে ওই শূণ্যপদে তারই আপন ভগ্নিপতিকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য এই পকেট কমিটি গঠন করা হয়েছে। এব্যাপারে আইনের আশ্রয় নেওয়া হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নূরুজ্জামান খান বলেন, এ কমিটি কবে কিভাবে গঠন হয়ে তা জানা নেই। তবে, ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে বহুল প্রচারনার নিয়ম রয়েছে।

এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম হাওলাদার বলেন, যথাযথ নিয়ম অনুসরন করেই কমিটি গঠন করা হয়েছে। তা দুই মাস আগেই বোর্ড অনুমোদন দিয়েছে।

(এসএকে/এসপি/নভেম্বর ০৬, ২০১৮)