স্টাফ রিপোর্টার : চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে ১৪তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হতে পারে। ফল তৈরির কার্যক্রম চূড়ান্ত পর্যায়ে। নতুন চেয়ারম্যান যোগদান না করায় ফল প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। চলতি মাসে ফল প্রকাশ করা সম্ভব হলে পরবর্তী নিয়োগের জন্য ১৪তম ব্যাচে নিবন্ধিতদেরও সুযোগ দেয়া হবে বলে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) জানিয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে এনটিআরসিএর সদস্য (পরীক্ষা) হুমায়ন করীর বলেন, ‘১৪তম শিক্ষক নিবন্ধনের মৌখিক পরীক্ষা দুই মাস আগে শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যে চূড়ান্ত ফলাফল তৈরি করা হয়েছে। গত দুই মাস ধরে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান না থাকায় এ ফলাফল প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। আগামী ১৩ নভেম্বর নতুন চেয়ারম্যানের যোগদান করার কথা রয়েছে। পরবর্তী দুই-তিন দিনের মধ্যে এ ফল প্রকাশ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে এনটিআরসিএর সাবেক চেয়ারম্যান আজহার হোসেন অবসর গ্রহণ করেন। এরপর গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলালকে জনপ্রশাসন থেকে চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দিলেও তিনি সেখানে যোগদান করেননি। এ কারণে বাধ্য হয়ে গত এক সপ্তাহ আগে অতিরিক্ত সচিব এসএম আসফাক হোসেনকে এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি বিদেশ সফরে। আগামী ১২ নভেম্বর তার দেশে ফিরে যোগদানের কথা রয়েছে।

এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা বলেন, ১৪তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর দুই মাস ধরে মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয়। তিন সদস্য বিশিষ্ট আটটি ভাইবা বোর্ডে মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয়। গত সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয়। এখন শুধু চূড়ান্ত ফল প্রকাশের অপেক্ষা।

এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, চতুর্দশ শিক্ষক নিবন্ধনের মৌখিক পরীক্ষায় মোট ১৯ হাজার ৮৬৩ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও প্রায় ১ হাজার প্রার্থী এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি। এ ছাড়াও প্রায় ১ হাজার প্রার্থী মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে বাদ পড়েছেন। ১৪তম নিবন্ধন পরীক্ষায় চূড়ান্ত ফলাফলে প্রায় ১৮ হাজার প্রার্থী পাস করেছেন।

এনটিআরসিএর সদস্য হুমায়ন কবীর জানান, সারাদেশে বেসরকরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষক শূন্য তালিকা পাওয়া গেছে। এনটিআরসিএ থেকে শিক্ষক নিয়োগের জন্য সুপারিশ পাঠানোর আগে যদি ফলাফল প্রকাশ করা সম্ভব হয় তবে চতুর্দশ শিক্ষক নিবন্ধনে পাস করা প্রার্থীদের মেধা তলিকায় যুক্ত করে নিয়োগের জন্য আবেদন করার সুযোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, চতুর্দশ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় স্কুল এবং কলেজ পর্যায়ে সর্বমোট ১ লাখ ৬৬ হাজার ৩১৮ পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। তার মধ্যে স্কুল পর্যায়ে ১৫ হাজার ৩৬২ এবং কলেজ পর্যায়ে ৩ হাজার ৮৭৭ জনসহ মোট ১৯ হাজার ৮৬৩ প্রার্থী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

গত বছরের ৮ ও ৯ ডিসেম্বর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। দেশের আটটি বিভাগে একযোগে এ পরীক্ষা আয়োজন করা হয়। গত বছরের ৩১ অক্টোবর চতুর্দশ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়।

এতে পাসের হার ছিল ২৬ দশমিক ০২ শতাংশ। এনটিআরসিএ আয়োজিত এ পরীক্ষায় স্কুল পর্যায়ে ৫ লাখ ৩ হাজার ৩৮ এবং কলেজ পর্যায়ে ৩ লাখ ৩ হাজার ৬১২ জনসহ মোট ৮ লাখ ৬ হাজার ৬৫০ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। তার মধ্যে স্কুল পর্যায়ে ১ লাখ ৪ হাজার ৬৯৪ জন এবং কলেজ পর্যায়ে ১ লাখ ৫ লাখ ৫ হাজার ১৮১ জনসহ মোট ২ লাখ ৯ হাজার ৮৭৫ জন উত্তীর্ণ হন।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ০৮, ২০১৮)