চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : নাম তার এসআই এয়ার হোসেন সোহেল। কাজ করতেন চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানাধানী শাহমিরপুর পুলিশ ফাড়িঁর ইনচার্জ হিসেবে। বেশ দাপটে ছিলেন। কর্ণফুলী এলাকার বড়উঠানের অনেক অপরাধী ও ডাকাতের সাথে তার সখ্যতা ছিলো বলে অভিযোগ ছিলো এই আইসির বিরুদ্ধে। মাত্র এক মাস আগে বদলী হলেন। বর্তমানে কর্মরত আছেন নগরীর বায়েজীদ থানার উপ-পরিদর্শক হিসেবে।

অভিযোগ উঠেছে এই পুলিশ কর্মকর্তা ইয়াবা দিয়ে চালান ও অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ঢাকা থেকে এক গৃহবধূকে এনে ধর্ষণ করার। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর আত্মহত্যার চেষ্টা করে ঐ গৃহবধূ। চমেক হাসপাতালের চিকিৎসা শেষে বর্তমানে নগরীর মেট্রোপলিটন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে এই গৃহবধূ।

মেট্রোপলিটন হাসপাতালের রেজিষ্ট্রার ডাক্তার মোহাম্মদ নূরুন নবী জানান, গত ২৭ তারিখ চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বিষ খাওয়া এই রোগী গত ৩০ অক্টোবর আমাদের মেডিকেলে ভর্তি হয়েছে।বর্তমানে তিনি আশংকামুক্ত অবস্থায় আছেন।

ধর্ষণের শিকার হওয়া গৃহবধুর স্বামী জানান, পুলিশের পোশাক কারখানায় চাকরি ও শহরে একটি দোকান নিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।যা বিশ্বাস করে গত ১৫ আগষ্ট স্ত্রীকে সাথে নিয়ে সুদূর ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আসি আমি।

এরপর গত ১৮ আগষ্ট আমার ঘরে ইয়াবা নিয়ে এসে আমাকে ইয়াবা দিয়ে চালান ও মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে আমার স্ত্রীকে ধর্ষণ করে এস আই এয়ার হোসেন। এ নিয়ে ডিসি উত্তর বরাবর একটি অভিযোগও করেছি আমি।

মৃত্যুর পথ বেছে নেওয়া পুলিশের হাতে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ জানান, আমাকে মেরে ফেলার হুমকি ও আমার জামাইকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে সারারাত আটকে রেখে আমাকে ধর্ষণ করে পুলিশের ঐ এস আই। আমাকে জোর করে ইয়াবা সেবন করিয়ে আমার সাথে এ কাজ করেন এয়ার হোসেন।আমি এই পুলিশ নামক জানোয়ারটির বিচার চাই।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য এস আই এয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, সরলাতার সুযোগ নিয়ে এই দম্পত্তি আমাকে ব্লাকমেইল করছে। আল্লাহর কসম আমি এরকম কিছুই করিনি।

অভিযুক্ত এই পুলিশ কর্মকর্তা বিষয়টি স্বীকার না করলেও এঘটনায় তার জড়িত থাকার বিষয়ে তার বেশ কিছু ঘটনার স্বীকারোক্তি মূলক কল রেকর্ড ও তথ্য প্রমান রয়েছে।এমনকি ধর্ষণের শিকার হওয়া গৃহবধূকে মেট্রোপলিটন হসপিটালে ভর্তি ফরমেও স্বাক্ষর ছিল এই পুলিশ কর্মকর্তার, যোগাযোগের জায়গায়ও ছিল তার সরকারি কাজে ব্যবহার করা মোবাইল নম্বরটি। যার একটি কপি আছে আমাদের কাছে।

বিষয়টি নিয়ে নগরীর উত্তর জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ মিজানুর রহমান জানান, ‘আমাদের কাছে এমন একটি অভিযোগ এসেছে। যার তদন্ত ভার এসেছে আমার উপর। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। যদি অভিযুক্ত এই পুলিশ সদস্য এমন জঘণ্য কাজ করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

(জেজে/এসপি/নভেম্বর ০৯, ২০১৮)