স্টাফ রিপোর্টার : নতুন প্রজন্মকে মেজর গণির কীর্তিময় জীবন ও আদর্শ চর্চা করার আহ্বাবান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

তিনি বলেন, মেজর গণির আদর্শ ও কর্ম প্রতিটি বাঙালির জীবনে প্রাতঃস্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে তিনি বাঙালি জাতির কৃতি সন্তান হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

শনিবার ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা, ভাষা আন্দোলনের অগ্র সৈনিক, প্রাদেশিক আইন সভার সদস্য, জাতীয় বীর বঙ্গশার্দুল মেজর আবদুল গণির ৬২ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির শহিদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে মেজর গণি পরিষদ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন নতুন প্রজন্মকে মেজর গণির কীর্তিময় জীবন ও আদর্শ চর্চার জন্য আহ্বান জানিয়েছে বলেন, তিনি ছিলেন প্রকৃত দেশপ্রেমিক। বাঙালি জাতির এক অকুতোভয় সৈনিক। তার হাতে গড়ে উঠেছে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বার্মার রণাঙ্গনে মেজর গণির বীরত্বের কারণে বাঙালিদের নিয়ে আলাদা রেজিমেন্ট গঠনের সূত্রপাত হয়।

তিনি বলেন, মেজর গণি একজন শিক্ষানুরাগী ছিলেন। দেশে আজ যে বিভিন্ন ক্যাডেট কলেজ এবং সামরিক স্কুল তা প্রতিষ্ঠায় তিনিই উদ্যোগী হয়ে প্রাদেশিক পরিষদে দাবি তুলেছিলেন। শিক্ষা বিস্তার, সামাজিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি এবং শোষণমুক্ত সমাজ বির্নিমাণে মেজর গণি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন। তাকে সরকার ১৯৮১ সালে মরণোত্তর স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারে ভূষিত করে শ্রদ্ধা জানায়। রাষ্ট্র ভাষা বাংলার পক্ষে তিনি ছিলেন অত্যন্ত স্পষ্টবাদী। এই গুণী মানুষকে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করে তার পারলৌকিক মুক্তি কামনা করছি।

অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতিকে মেজর গণি পরিষদ সম্মাননা স্মারক তুলে দেন কবি ও লেখক ফৌরদৌসি মাহমুদ।

মেজর গনি পরিষদের সভাপতি আয়কর আইনজীবী মো. হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে এবং সাংবাদিক ফারুক খান ও দিদারুল আলম দিদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন মেজর জেনারেল (অব.) ইমামুজ্জামান বীর বিক্রম, এফবিসিআইআইর পরিচালক হেলেনা জাহাঙ্গীর, সাংবাদিক-গবেষক আবুল কাশেম হৃদয়, অ্যাডভোকেট কাইমুল হক রিংকু, মেজর গনি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ারুল ইসলাম ভূইঁয়া, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. শরীফ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী একলাছ উদ্দিন ভূইঁয়া, অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন, অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন, মুক্তিযোদ্ধা জহিরুল ইসলাম চেয়ারম্যান, অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট এমএ মতিন মোল্লা, অ্যাডভোকেট মমিনুল হক ভূইঁয়া ও মো. কামাল হোসেন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে মেজর গণির আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া পরিচালনা করেন নাগাইশ দরবার শরীফের পীর মাওলানা মোশতাক ফয়েজী।

উল্লেখ্য মেজর গণি ১৯১৫ সালের ১ ডিসেম্বর কুমিল্লার ব্রাক্ষণপাড়া উপজেলার নাগাইশ গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৭ সালের ১১ নভেম্বর জার্মানি সফরের সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৪২ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ১০, ২০১৮)