তৌহিদ তুহিন, চুয়াডাঙ্গা : চুয়াডাঙ্গা সদর ( চুয়াডাঙ্গা-১) আসনে দেশের বড় দুটি দলেই হাইভোল্টেজ প্রার্থী থাকলেও দু’দলেরই মনোনয়ন প্রত্যাশীর লাইন দীর্ঘ হচ্ছে দিন দিন।

একদিকে বর্তমান জাতীয় সংসদের হুইপ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি, অন্যদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু। এ দুজন পাওয়ারফুল নেতা ছাড়াও দুদলের আরো অন্তত ১৪ জন দলীয় মনোনয়ন পেতে নানা ধরণের কার্যক্রম শুরু করেছেন। আছেন তুলনামূলক কম শক্তিশালী দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও। আসনটি দীর্ঘদিন বিএনপির দখলে থাকলেও ২০০৮ সালে আসনটির দখল নেয় আওয়ামী লীগ। বর্তমানেও তা অক্ষুন্ন রয়েছে।তাছাড়াও আ.লীগের সবাই দলীয় মনোনয়ন তুলেছে ।

চুয়াডাঙ্গা সদর (তিতুদহ, গড়াইটুপি ও বেগমপুর ইউনিয়ন ব্যতিত চুয়াডাঙ্গা সদর ও আলমডাঙ্গা উপজেলা) আসনের প্রার্থীরা ইতিমধ্যে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন তৃণমূল থেকে দলের হাইকমান্ড পর্যন্ত। দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। ইতিমধ্যেই তাঁরা নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগের পাশাপাশি নানাভাবে শুরু করেছেন প্রচার প্রচারণা। তাঁরা ছুটছেন নেতাকর্মিদের বাড়ি বাড়ি। অংশ নিচ্ছেন এলাকার বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে। এলাকায় বিভিন্ন সড়কের পাশে গাছে শোভা পাচ্ছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের রংবেরংয়ের ব্যানার, ফেস্টুন।

এ আসনে ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকায় আরো যাদের নাম শোনা যাচ্ছে, তারা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক প্রফেসর ডা. মাহবুব হোসেন মেহেদী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বর্তমান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশাদুল হক বিশ্বাস, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সংসদ সদস্যের সহোদর সাবেক পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সেখ সামসুল আবেদীন খোকন, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের দপ্তর সম্পাদক নাজমুল ইসলাম পানু, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার বর্তমান মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু, আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আলমডাঙ্গা পৌর মেয়র হাসান কাদির গনু এবং ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের স্বত্বাধিকারী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এফবিসিসিআই এর পরিচালক ও বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা।

অন্যদিকে, বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকায় আরো যাদের নাম বিভিন্ন আলোচনায় উঠে আসছে, তারা হলেন- জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস, বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সাবেক যুগ্মসচিব ড. মো. আব্দুস সবুর (এম এ সবুর), পিলখানা বিডিআর বিদ্রোহের সময় প্রাণে বেঁচে যাওয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির নির্বাহী সদস্য লে. কর্ণেল (অবঃ) সৈয়দ কামরুজ্জামান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির নির্বাহী সদস্য শরীফুজ্জামান শরীফ, আলমডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র মীর মহিউদ্দিন, বিএনপি নেতা শহিদুল কাউনাইন টিলু এবং শেষ মূহুর্তে গত সপ্তাহ থেকে মাঠে গণসংযোগ করছে জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল জব্বার সোনা।

এছাড়া, জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে জেলা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন ও জাতীয় পার্টির নেতা এম শহিদুর রহমানের নাম শোনা যাচ্ছে। তবে জামায়াতে ইসলামীর চুড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে অধ্যাপক আব্দুল খালেক ইতিমধ্যেই মনোনীত হয়েছেন। জেলা জাসদের সভাপতি এম সবেদ আলী।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল থাকলেও মনোনয়ন প্রত্যশী এসব নেতা সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- তুলে ধরার পাশাপাশি এলাকায় গণসংযোগ করে জনগণকে নৌকায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন। অন্যদিকে বিএনপি’র অভ্যন্তরীণ কোন্দল থাকলেও থেমে নেই মনোনয়ন প্রত্যশীরা। তবে প্রার্থী চুড়ান্ত হওয়ার পর নির্বাচনী ডামা ডোলে প্রার্থীর রাজনৈতিক চরিত্রের গুনাগুন বিশ্লেষন বিচারের সম্ভাব্য ভোটাররাই নির্ধারণ করবেন। তবে কোথাকার পানি কোন দিকে গড়াবে তা সময়ই বলে দিবে।

(টিটি/এসপি/নভেম্বর ১০, ২০১৮)