নিউজ ডেস্ক : মোটরবাইক চুরি হয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। আর একবার চুরি হয়ে গেলে মোটরসাইকেল ফিরে পাওয়া সে এক কঠিন কাজ। কিন্তু যদি এমন হয়, চোর এসে মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেই স্বয়ংক্রিয় একটা কল চলে যাবে বাইক মালিকের মুঠোফোনে!

একই সঙ্গে মোটরবাইকও সতর্ক সংকেত দিতে থাকবে। এই যন্ত্র বাড়িতে ও দোকানেও ব্যবহার করা যাবে। যিনি তৈরি করেছেন তিনি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার দক্ষিণ মিলিকবাঘা গ্রামের আতাউর রহমান। অবাক হবেন তাঁর বয়স শুনে। আতাউরের বয়স ৬২ বছর।

বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি মেরামতের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে যন্ত্রটি তিনি বানিয়েছেন। আতাউর রহমানের যন্ত্রের তিনটি অংশ মিলে কাজটি করে। প্রধান অংশটির কাজ হচ্ছে চিঁ চিঁ শব্দে সতর্কসংকেত দেওয়া ও মুঠোফোনে কল পাঠানো। বাকি দুটি অংশকে মুখোমুখি করে রাখা হয়। একটির মুখ অন্যদিকে ঘোরালে অথবা দুটির মাঝখান দিয়ে কেউ প্রবেশ করলেই শব্দ উৎপাদক অংশটি কাজ শুরু করে দেয়। মুখোমুখি রাখা দুটি যন্ত্রে সেন্সর বসানো আছে। ফলে এ দুটির মাঝখান দিয়ে কেউ গেলে অথবা অন্যদিকে মুখটা ঘোরালেই সেন্সরে তা ধরা পড়ে এবং প্রধান যন্ত্রটি শব্দ করতে থাকে।

আতাউর রহমান মোটরকে এই যন্ত্রটি ক্ষুদ্রাকারে সংযোজন করতে পারেন। অন্য কোনো চাবি দিয়ে মোটরসাইকেলের হাতল সোজা করলেই দুটি যন্ত্রের মুখ দুদিকে ঘুরে যায়। আর সঙ্গে সঙ্গে তৃতীয় যন্ত্রটি কাজ শুরু করে। আবার নিজের চাবি দিয়ে হাতল খোলার সময় মালিক যন্ত্রটি বন্ধ রাখবেন। তাহলে কোনো শব্দ হবে না। এ জন্য ছোট্ট একটি সুইচ থাকবে। সুইচের অবস্থান শুধু মালিকই জানবেন।

আতাউর রহমান বলেন, দুই হাজার টাকায় যন্ত্রটি মোটরসাইকেলে সংযোজন করা যায়। বাসা বা দোকানের জন্য খরচ হয় তিন হাজার টাকা। এক সারিতে ৩০টি দোকান থাকলে একটি যন্ত্র স্থাপন করলেই চলবে। বাসায় কেউ না থাকলে রিং দেওয়ার পাশাপাশি চেঁচিয়ে যন্ত্রটি প্রতিবেশীর নজর কাড়তে পারবে। আবার বাজারের দোকানের ক্ষেত্রে পথচারীর মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারবে।

দীর্ঘদিন ইলেকট্রনিকস যন্ত্রপাতি সারাইয়ের কাজ করছেন আতাউর রহমান। সেই অভিজ্ঞতা ও ভালোলাগা থেকেই নিজে নিজে নতুন নতুন যন্ত্রপাতি তৈরি করেন। চুরি ঠেকানোর এই যন্ত্র ছাড়াও স্বল্প খরচে লিফট তৈরি করেছেন তিনি। বাঘায় নিজের দোকানে সেটা ব্যবহারও করছেন। তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হচ্ছে একটি গবেষণাগার তৈরি করে সেখানে উৎসাহী যুবকদের উদ্ভাবনী কাজে প্রশিক্ষণ দেওয়া।

(ওএস/অ/জুলাই ১৮, ২০১৪)