মাদারীপুর প্রতিনিধি : গভীর রাতে সন্তানদের দ্বারা রাস্তায় ফেলে দেওয়া বৃদ্ধা মাকে বাঁচানো গেলো না। এমন কি মৃত্যুর আগেও জানা যায়নি সেই মা ও তার সন্তানদের পরিচয়। ১৩দিন পর সোমবার গভীর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মাদারীপুর সদর হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম ও পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদের তত্ত্বাবধানে ঈদগা ময়দানে নামাজে জানাজা শেষে দরগাখোলা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। 

উল্লেখ্য, গত ৩১ অক্টোবর গভীর রাতে পৌর এলাকার শকুনী লেকেরপাড় উত্তর পাশে ৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধা মাকে রাস্তায় ফেলে যায় তার সন্তানেরা। পরদিন সকালে দুই শিক্ষার্থী হাঁটতে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

ঐ বৃদ্ধা প্রথম দিন নিজের নাম জোবেদা খাতুন, স্বামীর নাম অজয় মলিøক, ছেলেদের নাম আলমগীর ও সোবাহান বলেছিলেন। আর তাকে সন্তান-বউ মিলে ফেলে রেখে যাওয়ার কথাটুকুই শুধু বলতে পেরেছিলেন। তারপর থেকে আর কথা বলতে পারেননি।

উদ্ধারকারী সরকারী নাজিমউদ্দিন কলেজের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী বিলাস হালদার ও মেহেদী ইসলাম বলেন, ‘সকালে লেকের পাড় দিয়ে হাঁটার সময় কেউ পড়ে আছে দেখে এগিয়ে যাই। গিয়ে দেখি হাতে-মাথায় রক্তাক্ত অবস্থায় এক বৃদ্ধা পড়ে আছেন। তাৎক্ষণিক বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে দেই।

মাদারীপুর সিভিল সার্জন ডা. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে আমাদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিল। সোমবার দিনের বেলায় খাবারও খেয়েছেন। রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বার্ধক্যজণিত কারণে তিনি মারা যান। হাসপাতালে থাকা অবস্থায় পরিবারের কেউ খোঁজ নিতে আমাদের কাছে আসেনি।’

মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বৃদ্ধা মা সোমবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বার্ধক্য জণিত কারণে তিনি মারা যান। পরে জেলা প্রশাসন ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ মিলে তার নামাজে জানাজা শেষে কবরস্থানে দাফন করা হয়।’

(এএসএ/এসপি/নভেম্বর ১৮, ২০১৮)