স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর : অবৈধ বালু উত্তোলনে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে কৃষি জমি, গাছ-পালা, স্থাপনা, রাস্তা-ঘাট বিধ্বস্ত হচ্ছে। ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ। বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় কিছুই করতে পারছেনা সাধারণ মানুষ। বালু খেকোদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ফুলবাড়ী উপজেলার খয়েরবাড়ী জমিদার পাড়ার সন্নিকটে মধুপুর ঘাটে গাছপালাসহ ফসলি জমির ধার কেটে স্কেবেটার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে উত্তোলন করছে বালু। বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে সাধারণ কৃষকের নদীর ধারের ফসলি জমি। এভাবে অসাধু বালু খোঁকেদের বালু উত্তোলনের ফলে ফসলি জমি গুলো ধ্বংসের মুখে পড়লেও, কোন কথাই বলতে পারছেনা সাধারণ কৃষক। ভুক্তভোগীরা বলছে, বালু উত্তোলনকারীরা ক্ষমতাসীন দলের ও প্রভাবশালী হওয়ায় তারা কোন কথা বলতে পারছেনা। বার বার অভিযোগ দেওয়ার পরও স্থানীয় প্রশাসনও রয়েছে নিশ্চুপ !

বালু উত্তোলন করায় ফসলি জমি হুমকিতে পড়ায় জমির মালিক খয়েরবাড়ী গ্রামের মৃত হীরেন্দ্র নাথে প্রদীপ চৌধুরী ও দীপেন চৌধুরী বলেন,বালু উত্তোলনকারীদের বার বার নিষেধ করলেও তারা তাদের কোন কথাই কর্ণপাত করছেনা।

এই বিষয়ে বালু উত্তোলনকারী খয়েরবাড়ী গ্রামের বাসীন্দা বেনজির হোসেন ডিটুর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের পুর্বেই রাস্তার কাজ শেষ করার জন্য, তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্যের নির্দ্দেশে এই বালু উত্তোলন করছেন। তবে তার এ কথার কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।

এ অবস্থা শুধু মধুপুর নয়, উপজেলার অশ্রুবাড়ী, লক্ষ্মীপুর ও হড়হড়িয়া পাড়া ঘাটেও চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। জানা গেছে খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের আওয়ামী যুবলীগের নেতা মুরাদ হোসেনও অশ্রুবাড়ী ঘাট থেকে বালু উত্তোলন করছে। বিষয়টি নিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন কারী মুরাদ হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ওখানে তার নিজের জায়গা রয়েছে সেখান থেকে তিনি বালু উত্তোলন করছে এতে বালু গ্রাহকরা সল্পমুল্যে বালু ক্রয় কবরতে পারছে,তা নাহলে নির্ধারিত ঠিকাদারের কাছেথেকে বালু ক্রয় করে যাতায়াত খরচ অনেক বেশী হয়।

এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করলেও প্রশাসনের কোন প্রকার নজরদারী দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুস সালাম চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের ছোট যমুনা নদীর বেলতলি ও গোপালপুর ঘাট বালুমহল হিসেবে ইজারা দেয়া আছে। এর বাহিরে বালু উত্তোলন করা সম্পুর্ন বে-আইনি। তিনি বে-আইনি ভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

(এসএএস/এসপি/নভেম্বর ১৪, ২০১৮)