শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুর-৪ আসনে ৭ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সংসদীয় আসন-৯ দিনাজপুর-৪ (চিরিরবন্দর-খানসামা) আসনে আওয়ামীলীগের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি, সাবেক হুইপ মিজানুর রহমান মানু, ডাঃ এম আমজাদ হোসেন, তারিকুল ইসলাম তারিক ও এডঃ সাইফুল ইসলামসহ ৫ জন, বিএনপির সাবেক এমপি আলহাজ্ব আখতারুজ্জামান মিয়া ও মোঃ হাফিজুর রহমানসহ ২ জন প্রার্থী ইতিমধ্যে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ এবং জমা দিয়েছেন।

চূড়ান্ত মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রীয় সিনিয়র নেতাসহ মনোনয়ন বোর্ডের নেতৃবৃন্দের কাছে লোবিং করছেন অনেকেই । অনেকেই কেন্দ্রের সবুজ সংকেতের জন্য সিনিয়র নেতাদের দ্বারস্থ হচ্ছেন। এ মনোনয়ন প্রাপ্তি নিয়ে নিজ নিজ এলাকায় চলছে চুলচেরা বিশেøষন। তৃণমূল নেতাসহ ও সাধারণ জণগনের মধ্যে এ নিয়ে চলছে ব্যাপক জল্পনা কল্পনা। চলছে, চায়ের কাপে ঝড়। তাদের মতে আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পাটি জোটবদ্ধ নির্বাচন করলে বিএনপির ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী মাঠে সুবিধা করতে পারবেনা বলেও কেউ কেউ বলছেন। আবার কেউ বলছেন, জামাতের বেশ দাপট রয়েছে এ আসনে। এ কারণে এ আসনটি বিএনপি উদ্ধার করতে পারে।

এদের মধ্যে এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী পুনরায় মনোনয়ন প্রাপ্তির প্রত্যাশা করছেন। তার পক্ষে নেতা-কর্মীরা নিয়মিত দলীয় কর্মসূচি ছাড়াও নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। এলাকায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার ব্যাপক উন্নয়ন করায় সাধারণ জণগন ও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা তার প্রতি বেশ দূর্বল। পুনরায় তার মনোনয়ন ও জয়লাভের সম্ভাবনা বেশি। তার জনপ্রিয়তা বর্তমানে তুঙ্গে। এলাকায় সকলে বিশ্বাস করেন আওয়ামীলীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় তাকেই মনোনয়ন দেবেন। চিরিরবন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোঃ আহসানুল হক মুকুল ও খানসামা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সফিউল আযম চৌধুরী লায়নসহ মুরব্বী গোছের নেতাকর্মীরা তার পক্ষে থাকায় তার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

অপরদিকে সাবেক হুইপ মো. মিজানুর রহমান মানু তার বিশ্বস্থ মাত্র কয়েকজনের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে পদত্যাগ করে নৌকার বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে টিভি মার্কা নিয়ে নির্বাচন করে এই আসনে মাত্র সাড়ে ৪ হাজার ভোট পাওয়ায় তার জনপ্রিয়তায় কিছুটা ধবস নামে।

এছাড়াও চিরিরবন্দর আমেনা বাকী রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও ঢাকা ল্যাব এইড হাসপাতালের অর্থপেডিক্স বিশেষজ্ঞ মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডাঃ এম আমজাদ হোসেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেতে লবিং শুরু করেছেন।

দিনাজপুর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এডঃ সাইফুল ইসলাম মনোনয়ন প্রাপ্তির জন্য আশা করছেন। ইতিমধ্যে মনোনয়নপত্র জমাও দিয়েছেন তিনি।

অপরদিকে ২০ দলীয় জোটের ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোঃ আখতারুজ্জামান মিয়া আবারও মনোনয়ন পেতে চেষ্টা চালাচ্ছেন। বিএনপিতে তার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। তিনি এই আসনের বিভিন্ন হাটে-বাজারে প্রায় প্রতিদিন দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে থাকায় নেতাকর্মীরা তার প্রতি বিশ্বস্থতায় রয়েছেন।

এছাড়াও লুসাকা গ্রুপের চেয়ারম্যান শিল্পপতি মোঃ হাফিজুর রহমান দলীয় মনোনয়ন পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে তার ঘনিষ্টজনেরা জানিয়েছেন। দীর্ঘদিন এলাকায় না থাকায় তার জনপ্রিয়তা শুন্যের কোঠায়। এক সময় এলাকায় সেমাই,চিনি,কাপড় দিয়ে বিএনপিরসহ অন্যান্য দলের সুবিধাবাদি লোকজনকে তার পক্ষে টানলেও এখন সেই লোকগুলি সমাজে হেয় হয়ে পড়েছে।

তৃণমূল আওয়ামীলীগের নেতাকর্মিরা পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর বাইরে অন্য কাউকে মেনেই নেবেনা বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। এলাকার মুরব্বি গোছের লোকেরা জানান, বিএনপির আখতার“জ্জামান মিয়া ও আওয়ামীলীগের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর মধ্যেই নির্বাচনে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। যে দলের হোক অন্য কোন প্রার্থী মাঠে সুবিধা করতে পারবেনা।

মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ব্যাপক দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। তৃণমূল নেতাদের সমর্থন পেতে এবং মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রীয় নেতাদের আয়ত্ব করতে প্রার্থীরা ইতোমধ্যে নানা তৎপরতা চালাচ্ছেন। অনেকেই কেন্দ্রের সবুজ সংকেতের জন্য সিনিয়র নেতাদের দ্বারস্থ হচ্ছেন।

এদের মধ্যে এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী পুনরায় মনোনয়ন প্রাপ্তির প্রত্যাশা করছেন। তার পক্ষে নেতাকর্মীরা নিয়মিত দলীয় কর্মসূচি ছাড়াও নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন।

অপরদিকে সাবেক হুইপ ও কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো. মিজানুর রহমান মানু নির্বাচনী আলোচনায় রয়েছেন। তিনিও নিয়মিত দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন।

এদিকে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে ২০০১ সালের নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য ও সংস্কারপন্থী নেতা আলহাজ্ব আখতারুজ্জামান মিয়া। তিনি ২০০৬ সালের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রাথী হিসাবে ডাব মার্কা নিয়ে নির্বাচন করে দল থেকে বিছিন্ন হয়ে পরেন। তবে তিনি আবারও মনোনয়ন প্রাপ্তির আশায় মাঠে ময়দানে করছেন।

অন্যদিকে ২০০৮ সালের এক সময়ের ধানের শীষ মার্কা ও পরে দেওয়াল ঘড়ি মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী শিল্পপতি মো. হাফিজুর রহমান হাফিজ এবার প্রার্থী হতে পারেন বলেও নির্বাচনী আলোচনায় রয়েছেন।

(এসএএস/এসপি/নভেম্বর ১৫, ২০১৮)