স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে যে ডকুমেন্টারি তৈরি হয়েছে তা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

শনিবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী অভিযোগ করেন, একের পর এক নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী আচরণবিধি ন্যূনতম অনুসরণ করছেন না-এ বিষয়ে পুরোপুরি নির্বিকার সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন।

তিনি বলেন, আচরণ বিধিমালা ভঙ্গ করে শেখ হাসিনা গণভবনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন। এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র হাসিনা এটেল সিনেমা হলে গতকাল শুক্রবার মুক্তি দেয়া হয়েছে। স্টার সিনেপ্লেক্স, ব্লকবাস্টার সিনেমাস ও মধুমিতা ছাড়াও চট্টগ্রামে স্ক্রিনে দেখানো হচ্ছে শেখ হাসিনাকে নিয়ে ছবিটি। প্রধানমন্ত্রী আগামী নির্বাচনে একজন প্রার্থী, একজন রাজনৈতিক ব্যক্তি, সেই কারণে ইতিহাসের নানা ঘটনা, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ,ক্ষমতার পালাবদল, ব্যক্তি ও রাজনৈতিক জীবনের নানা অভিজ্ঞতা এবং দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি এককেন্দ্রিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা আচরণবিধির চরম লঙ্ঘন।

‘‘আচরণবিধিতে বলা হচ্ছে, এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা যাবে না এতে প্রচারণা শুরুর আগেই নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করবে নিজে প্রার্থী হয়ে নিজেই কীভাবে আচরণবিধি ভঙ্গ করেন তা বোধগম্য নয়।’’

রিজভী বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন আচরণবিধি মালার ১২ ধারায় স্পষ্ট বলা আছে, ভোটগ্রহণের তিন সপ্তাহ পূর্বে কোনো প্রকার প্রচার শুরু করা যাবে না, একইসঙ্গে বিধিমালার ১০ (ঙ) ধারা অনুযায়ী নির্বাচনী প্রচারণার জন্য প্রার্থীর ছবি বা প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণামূলক কোনো বক্তব্য দেয়া যাবে না। তিনি প্রশ্ন রাখেন এই ডকুমেন্টারি ফিল্মটি কী প্রচারণামূলক নয়?

বিএনপির সিনিয়র এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বিধিমালার ৭ (এ) পোস্টার ব্যবহার বিধি নিষেধও আছে সেখানে বলা আছে সিটি কর্পোরেশন এবং পৌর এলাকার কোথাও পোস্টার সাঁটানোর সুযোগ নেই অথচ ডকুফিল্মটি সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অর্থাৎ সিনেমা হলগুলোয় প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত পোস্টারসহ রীতিমত প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ধানমন্ডির সুধাসদনে অবস্থিত সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন সিআরআই পক্ষে ফিল্মটি প্রযোজনা করেছেন দেওয়ান মুজিব সিদ্দিকী ববি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। ঢাকঢোল পিটিয়ে এসব করা হলেও নির্বাচন কমিশন নীরব দর্শকের ভূমিকায়। এছাড়াও বিভিন্ন টেলিভিশন ও রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে সিটি কর্পোরেশন স্থাপিত টিভি স্ক্রিনে শেখ হাসিনার উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক আচরণবিধি ভঙ্গের অসংখ্য প্রমাণ থাকলেও নির্বাচন কমিশনের নীরব ভূমিকার কারণে নির্বাচনের ন্যূনতম লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি হয়নি।

নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, কমিশন সরকারের ইচ্ছা মতই কাজ করছে। আওয়ামী লীগের জগাখিচুড়ি নির্বাচন বিদেশিদের আল করতেই ২০ ডিসেম্বর নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচন ৩ সপ্তাহ পেছানো না হলে বুঝতে হবে সরকারের নীলনকশার এটা অংশ।

এ পর্যন্ত বিএনপি'র ৪৫৮০টি মনোনয়ন পত্র বিক্রি হয়েছে জানিয়ে রিজভী বলেন ,আমরা এখনও জমা নিচ্ছি। জমা নেয়া শেষ হলে সে পরিসংখ্যান জানানো হবে বলেও জানান তিনি। নিজের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ না করায় দলের মধ্যে কোনো গুজব নেই বলেও জানান তিনি।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ১৭, ২০১৮)