সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : দিন, মাস, বছরেরও বেশি সময় ধরে ভোটের আগে মাঠের লড়াই শেষে এখন শুধুই তাদের অপেক্ষার প্রহর গুনার পালা। জনমত জরিপ যাচাইয়ে বিভিন্ন সংস্থার গোপনীয় তথ্য সংগ্রহের পর সব কিছুর চূড়ান্ত মূল্যায়ন করে ফলাফল ঘোষনা করবেন আওয়ামীলীগের পার্লামেন্টারী বোর্ডের সভপতি মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কণ্যা দেশরতœ শেখ হাসিনা। আশা করা যাচ্ছে আগামী সপ্তাহের মধ্যে ঘোষণা করা হবে চূড়ান্ত ফলাফল।

তবে আবার এটিও হতে পারে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশনের তপছিল ঘোষনার ধার্য্য তারিখে মনোনয়নপত্র দাখিলে পর যাচাই বাছাই শেষে চূড়ান্ত ভাবে মনোনীত প্রার্থীকে রেখে বাকিদের মনোনয়পত্র প্রত্যাহার করিয়ে নেয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। দলের বিভিন্ন সূত্রে এসব তথ্য ওঠে এসছে।

তবে এখন মাঠে যারা প্রচার দিচ্ছেন মনোনয়ন পেয়ে গেছেন কিংবা তাকেই দেয়া হবে এটিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এসব কথা গুজব ছাড়া আর কিছুই না। দলের পার্লামেন্টারী বোর্ডের সভাপতি ও আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও বিচক্ষনতা দিয়ে তিনি আগামীর সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার পথ হেটে চলছেন।

এ ক্ষেত্রে কাকে মনোনয়ন দিলে দলের ভেতর নেতাকর্মীদের মধ্যে কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা থাকবে না, কে মনোনয়ন পেলে সকলকে এক নৌকায় উঠিয়ে বৈতরনী পার হতে পারবেন এবং সক্ষম হবেন এক পাতে বসে ভাত খেতে। যে প্রার্থীর কোন গ্রুপিং নেই, যিনি নিজ দলের বাইরেও সকল শ্রেণি পেশার মানুষের কাছে একটা বিশাল আস্তার জায়গা তৈরি করে সর্বজন গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছেন, তাকেই চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে স্বাধীনতার নৌকা প্রতীক তুলে দেবেন তার হাতে।

তৃণমূলের দাবী এবার আওয়ামীলীগ প্রার্থীরা অনেক আগে থেকেই মাঠে নেমেছেন মাঠ জাগাতে। সৃষ্টি করতে নৌকার গণজাগরণ। নেতাকর্মীদের মতে যে প্রার্থী যত বেশি আগে মাঠে নেমেছেন তার যেমন তত বেশি প্রচার হয়েছে, তেমনিই তত বেশি ভুল ভ্রান্তিও হয়েছে। পাশাপাশি দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরাও গ্রুপিংয়ের শিকার হয়েছেন বেশি।

উল্টোদিকে যিনি প্রার্থী হয়ে সব শেষে মাঠে নেমেছেন অথচ কৌশলগত প্রচারনায় সবার মুখে মুখে এখন আছেন, যিনি কোন গ্রুপিং সৃষ্টি করেননি, তার ভুল ভ্রান্তির সংখ্যাও অনেকাংশে কম হয়েছে সে সব প্রার্থীকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

নেত্রকোনা-৩ আসনে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থীর সমর্থকদের পক্ষ থেকে প্রতিদিনই নির্বাচনী এলাকায় বিশেষ বিশেষ বুলেটিং খবর আসছে অমুক পেয়ে গেছেন মনোনয়ন, কেন্দ্র থেকে তার তাকেই সবুজ সংকেত দেয়া হয়েছে। এরকম খবরে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে, কিন্তু মূল কাজের কিছুই হচ্ছে না। এসব খবরের কোন প্রকার সত্যতা নেই বলে দাবী করছেন দলের বিশ্বস্ত সূত্রগুলো।

তাদের মতে চূড়ান্ত প্রার্থীদের ফলাফল পার্লামেন্টারী বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা ছাড়া আর অন্য কারো বিন্দু মাত্র জানার কোন সুযোগ নেই। একদিনই শেখ হাসিনা ঘোষনা করবেন প্রার্থীদের নাম। তাছাড়া পরম করুনাময় সৃষ্টি কর্তা যার কপালে লিখে রেখেছেন নৌকা প্রতীক এবং মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক বিবেচনায় যিনি সবার গ্রহণযোগ্য, তার হাতেই তুলে দেবেন তিনি নৌকা প্রতীক।

প্রতীক পেতে বুক ভরা আশা নিয়ে এখন প্রতিক্ষার প্রহর গুনছেন এদের মধ্যে রয়েছে আওয়ামীলীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রথম প্রতিবাদকারী ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মো: সাইদুর রহমান মানিক, আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রিড়া উপ-কমিটর সদস্য সামসুল কবীর খান, বর্তমান সংসদ সদস্য ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু, সাবেক সংসদ সদস্য মঞ্জুর কাদের কুরাইশি, আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহ সম্পাদক এডভোকেট আব্দুল মতিন, কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সদস্য কেশব রঞ্জন সরকার ও নেত্রকোনা জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য আলমগীর হাসান সহ আরো অনেকেই। তবে এদের মধ্যে কার ভাগ্যে শিকে ছিড়বে তা এ মূহুর্তে কেউই নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না। তাই এখন শুধুই তাদের অপেক্ষার প্রহর গুণার পালা।

(এসবি/এসপি/নভেম্বর ১৯, ২০১৮)