স্টাফ রিপোর্টার : অতীতে দলীয় সরকারের অধীনে যখনই নির্বাচন হয়েছে তখনই ক্ষমতাসীনরা প্রভাব বিস্তার করেছে, পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। এবার দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হচ্ছে। এমন অবস্থায় সরকার তথা মন্ত্রী, এমপিরা যেন নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে না পারেন সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।

সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ পরামর্শ দেন সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।

তিনি বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে হচ্ছে। সরকার মানে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দলীয় সরকারের অধীনে অতীতে যেসব নির্বাচন হয়েছে তখন দেখা গেছে, যে সরকার ক্ষমতায় ছিল তারাই আবারও ক্ষমতায় ফিরে এসেছেন। সেসব নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ ছিল।

তিনি আরও বলেন, সংশয়ের বিষয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে হচ্ছে, তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে। এজন্য ইসিকে শক্ত ভূমিকা পালন ও সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সদিচ্ছা থাকলে ইসি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারে। তাদের অধীনে রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে বলা যায় রোল মডেল। নির্বাচন কমিশনের হাত লম্বা, তারা চাইলে করতে পারেন। তারা সাংবিধানিক পদে নিয়োজিত। সুষ্ঠু নির্বাচন করা তাদের দায়িত্ব।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক দিলীপ কুমার সরকার বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচন হচ্ছে দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায়। সাম্প্রতিক অনুষ্ঠিত কিছু নির্বাচনে প্রশাসন তথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হওয়ায় প্রশাসন তথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রভাবিত হওয়ার ঝুঁকি আরও বেড়ে গেছে। তাই এ বিষয়ে ইসিকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। পাশাপাশি তাদের মনে রাখতে হবে, আগামী নির্বাচন হচ্ছে সংসদ বহাল রেখে। এই নির্বাচনে কোনো কোনো প্রার্থী মন্ত্রী বা এমপি থাকা অবস্থায়ই ভোট চাইবেন। আবার কেউ কেউ ভোট চাইবেন সাধারণ প্রার্থীর অবস্থান থেকে। তাই সতর্ক থাকতে হবে মন্ত্রী বা এমপিরা যেন নির্বাচনী আচরণবিধি যথাযথ মেনে চলেন এবং পদের প্রভাব দেখাতে না পারেন।

তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার মূল দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। তাই সতর্ক থাকতে হবে সাম্প্রতিক কয়েকটি নির্বাচনের মতো তাদের ভূমিকা যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। ইসিকে আইনি ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে নৈতিকতা ও সাহসিকতার সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কোনো ধরনের অনিয়ম দৃষ্টিগোচর হলে অভিযোগ দায়েরের অপেক্ষায় না থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি কোনো অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। মনে রাখতে হবে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইসির নির্লিপ্ত থাকার সুযোগ নেই।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সুজন মহানগর ইউনিটের ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্যামেলিয়া চৌধুরী ও সুজনের মিডিয়া সমন্বয়কারী শামীমা মুক্তা প্রমুখ।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ১৯, ২০১৮)