শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট : বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় কৃষকদের শত-শত একর ক্ষেতের ফলন্ত টমেটো গাছ হটাৎ করেই ‘স্ট্রোক’ করে মারা যাচ্ছে। এই উপজেলায় এ বছর ১ হাজার ৫ শত একর জমিতে চক্র, পানপাতা, মিন্টু সুপার, লাভলী, হাইটম ও বিউটিসহ উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটোর চাষ করেছিল। ভালো ফলন ধরার পরপরই ক্ষেতগুলোর টমেটো গাছে হটাৎ করেই মহামরি আকারে স্ট্রোক রোগে আক্রান্ত হয়ে মরে যাচ্ছে। এত করে চিতলমারীরর কয়েক শত কৃষক ক্ষেতের টমেটো হারিয়ে সর্বশান্ত হয়েগেছে।

চিতলমারী উপজেলা সদর বাজারে একটি চায়ের দোকানে বসে কুরমনি গ্রামে টমেটো চাষি অনুপ বিশ্বাস (৩৫) জানান, শীতকালিন আগাম সব্জি হিসেবে ৩ লাখ টাকা ঋণ করে এক একর জমিতে টমেটো’র গাছ লাগিয়ে ছিলাম। কঠোর পরিশ্রম ও পরিচর্যায় গাছগুলোতে প্রচুর টমেটো ধরেছিল। আশা ছিল এ বছর টমোটে বিক্রি করে সব ধারদেনা পরিশোধ করব। সব ফলন্ত টমেটো গাছ স্ট্রোক করে হঠাৎ করেই মারা গেছে। এখন ঋণের টাকা তো দূরের কথা, পরিবার-পরিজন নিয়ে বাঁচাটাই এখন দুরহ হয়ে দাড়িঁয়েছে।

চিতলমারী উপজেলার কুরমনি, সুরশাইল, পাটরপাড়া, সাবোখালী, দানোখালী, পাঁচপাড়া, শ্যামপাড়া, খড়মখালী, উমাজুড়ি, খলিশাখালী, গরীবপুর, ডাকাতিয়াসহ বিভিন্ন গ্রামে হাজার টমেটো চাষি কিশোর রায়, জোতিন পোদ্দার, শষধর রায়, সুকেশ বাড়ৈ, অসীম বসু, তারক বিশ্বাস, শামসুর রহমান, মাহফুজ হাওলাদার, কামরুল ফকির, আজমল বিশ্বাস, নিখিল বড়াল, তরুন সরকার, অমলেশসহ অনেকে নিজেদের দুখের বর্ননা দিয়ে জানান, এবছর হঠাৎ করে করে স্ট্রোক করে তাদের শত-শত একর জমির ফলন্ত টমোটো গাছ মরে যাওয়ার তারা একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। অঞ্চলের টমেটো চাষিদের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড ভেঙ্গে গেছে। সেই সাথে তারা এবার ঋণ পরিশোধ করতে পারছেনা।

চিতলমারী উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনন্দ বিশ্বাস বলেন, চিতলমারীতে এ বছর ১ হাজার ৫ শত একর জমিতে চক্র, পানপাতা, মিন্টু সুপার, লাভলী, হাইটম ও বিউটিসহ উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটোর চাষ করেছিল চাষিরা। ভালো ফলন ধরার পরপরই ক্ষেতগুলোর টমেটো গাছে হটাৎ করেই মহামরি আকারে স্ট্রোক রোগে আক্রান্ত হয়ে মরে যাচ্ছে। এটি মাটি বাহিত ব্যাটেরিয়া সংক্রান্ত রোগ। এ রোগে গাছের শেকড় একেবারে নষ্ট করে ফেলে। টমেটোর চারা লাগানোর আগে চাষিরা ভালো করে মাটি পরিশোধন না করার কারনেই ক্ষেতে মহামারি আকারে স্ট্রোক রোগ ছড়িয়ে পড়েছে।

(এসএকে/এসপি/নভেম্বর ১৯, ২০১৮)