স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ১৪ নভেম্বর নাশকতার ঘটনা ছিল পুলিশের পরিকল্পিত ছক। তিনি বলেন, আগের দিন নির্বাচন কমিশন আইজিকে নির্দেশ দিয়েছিল বিএনপির শোডাউন বন্ধ করার জন্য। সেই নির্দেশ অনুযায়ী পুলিশ নাশকতার রোডম্যাপ তৈরি করে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে লাখ লাখ নেতাকর্মীদের ভিড় দেখে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের গণভবনে ডেকে নিয়ে বিএনপির সমবেত জনতার ওপর হামলা ও নাশকতার ডিজাইন করা হয়।

বুধবার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী আহমেদ ।

রিজভী আহমেদ বলেন, ‘বর্তমান সরকারের চরম অনুগত নির্বাচন কমিশন দিয়ে কোনোভাবেই সুষ্ঠু ভোট সম্ভব নয়। আরেকটি পাতানো নির্বাচনের পথে হাঁটছে কমিশন। এখন পর্যন্ত নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়ার জন্য প্রধান দায়ী নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ প্রশাসন।’

রিজভী বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পুরো দায়িত্ব পুলিশ বাহিনীর ওপর অর্পণ করেছে হুদা (কে এম নুরুল হুদা) কমিশন। প্রায় সাড়ে ৬ লাখ নির্বাচনী কর্মকর্তার অধিকাংশই আওয়ামী লীগের দলীয় লোকদের বাছাই করে তালিকা প্রস্তুত করছে পুলিশ। ইতোমধ্যে সারাদেশে ৪১ হাজার প্রিজাইডিং অফিসারের তালিকা পুলিশ প্রস্তুত করেছে। এখন দুই লাখ সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও চার লাখ পোলিং অফিসারের তালিকাও প্রস্তুত করার দায়িত্ব পুলিশই পালন করছে। পুলিশের প্রস্তুত করা তালিকা শুধুমাত্র চূড়ান্ত করার পথে তাবেদার বর্তমান নির্বাচন কমিশন।’

রিজভী আহমেদের ভাষ্য, ১৪ নভেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমবেত নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, ভাংচুর ও হেলমেটধারী এজেন্টদের দিয়ে পুুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ও মিছিলের ওপর পুলিশের গাড়ি তুলে দেয়ার পর ইলিয়ড বা ওডিসি’র মতো কাল্পনিক মহাকাব্য রচনা করেছে পুলিশ। হেলমেট পরা হামলাকারীদের এখন বিএনপির নেতাকর্মী বলে চালানো হচ্ছে।

বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘হেলমেটধারীদের আমরা দেখেছি নিরাপদ সড়ক দাবির আন্দোলন কর্মসূচিতে কোমলমতি শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ চালাতে। কিন্তু এখনও সেই হেলমেটধারীদের কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।’

সম্প্রতি বিভিন্নজনকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘রাজধানীর সূত্রাপুর থেকে যে ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলা হয়েছে তাদের ধরা হয়েছে আরও চারদিন আগে। তাদের একজনকে কুমিল্লা থেকে, একজনকে গাজীপুর থেকে, একজনকে মিরপুর আর বাকিদের গ্রেফতার করা হয়েছে শাহজাহানপুর থেকে। আটককৃত ছয়জনকে ভিন্ন ভিন্ন জায়গা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হলেও পুলিশ বলছে, এদেরকে সূত্রাপুর থেকে ধরা হয়েছে।’

রুহুল কবির রিজভী আহমেদ আরও বলেন, ‘নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে যেভাবে প্রশাসন সাজানো হয়েছিল তা সেইভাবেই অক্ষুণ্ন আছে। আওয়ামী লীগের দলবাজ কর্মকর্তাদের রাখা হয়েছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে। এখন পর্যন্ত কোনো এসপি, ডিসি, ইউএনও বা ওসিকে বদলি করেনি নির্বাচন কমিশন।’

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ২১, ২০১৮)