শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট : বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জে একটি ফিশিং ট্রলারের ধাক্কায় বলেশ্বর নদীতে পড়ে নিখোঁজের ৬২ ঘন্টা পর বন বিভাগের বনরক্ষী সোহেল রানা তালুকদারের (৩৭) ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস ও বন বিভাগ।

শুক্রবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে বলেশ্বর নদীর প্রায় এক কিলোমিটার দক্ষিণে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার ভাইজোড়া ইউনিয়নের জলাঘাট সাপলেজা এলাকা থেকে নিখোঁজ বনরক্ষী সোহেল রানার ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টা দিকে নিয়মিত টহলের সময়ে একটি ফিশিং ট্রলারের ধাক্কায় পা পিছলে নদীতে পড়ে ডুবে যাওয়ার পর থেকে ফায়ার সার্ভিস, বন বিভাগ ও কোস্টগার্ড সদস্যরা নিখোঁজ সোহেল রানার খোঁজে তল্লাশি চালিয়ে আসছিলেন। সাঁতার না জানার কারনে সোহেল রানা নদীতে পড়ে ডুবে যায়। কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার মহুরীপাড়া গ্রামের এস.এম আ. হামিদ তালুকদারের ছেলে বনরক্ষী সোহেল রানা তালুকদার ২০০৬ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর বন বিভাগের চাকরিতে যোগ দেন। ২০১৬ সালের ৩ মার্চ বাগেরহাটের সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের বগী স্টেশনে বনরক্ষী হিসেবে যোগদান করেন।

বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক (ডিএডি) মো. মাসুদ সরদার বলেন, শুক্রবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে বলেশ্বর নদীর প্রায় এক কিলোমিটার দক্ষিণে পিরোজপুরের সাপলেজা এলাকায় স্থানীয় জেলেরা একটি মরদেহ ভাসতে দেখে সুন্দরবন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। সেখানে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া মরদেহটি সোহেল রানার বলে সনাক্ত করেছে সুন্দরবন বিভাগের কর্মীরা।

ঘটনার পর থেকে ফায়ার সার্ভিসের সাত সদস্যের ডুবুরি দল নিখোঁজ বনরক্ষী সোহেল রানার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছিল। পরে কোস্টগার্ডও তল্লাশি অভিযানে যোগ দেয়। উদ্ধার হওয়া বনরক্ষী সোহেল রানার মরদেহ বিকালে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জে নিয়ে আসা হয়েছে।

বাগেরহাটের পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থল থেকে জানান, মঙ্গলবার রাতে সোহল রানাসহ চার বনরক্ষী বগী স্টেশন থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দুরে বলেশ্বর নদীতে নিয়মিত টহল দিচ্ছিলেন। রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে বঙ্গোপসাগর থেকে উঠে আসা একটি ফিশিং ট্রলারকে থামানোর নির্দেশ দেয়া হয়।

ট্রলারটি পালিয়ে যাবার সময় বনরক্ষীদের ছোট টহল বোটকে ধাক্কা দিলে সোহেল রানা পা ফসকে নদীতে পড়ে তলিয়ে যায়। বাগেরহাট হাসপাতালে ময়না তদন্ত ও পূর্ব সুন্দরবন বিভাগে নামাজে জানাজা শেষে বনরক্ষী সোহেল রানা মরদেহ শনিবার তার গ্রামের বাড়ী কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার মহুরীপাড়ায় নিয়ে যাওয়া হবে।

(এসএকে/এসপি/নভেম্বর ২৩, ২০১৮)