স্টাফ রিপোর্টার : সরকার ক্ষমতায় থেকে প্রথমবারের মতো দেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হচ্ছে। গ্রেফতার ও হয়রানি বাণিজ্য এখনো চলছে। তাই আস্থা না থাকলেও নির্বাচন কমিশন (ইসি) ছাড়া আমাদের যাওয়ার আর কোনো জায়গা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।

নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবের কাছে তিনটি চিঠি দেওয়ার পর বুধবার (০৫ ডিসেম্বর) বিকেলে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন তিনি।

এ পর্যন্ত যতগুলো চিঠি দিয়েছেন তার কতগুলোর প্রতিকার পেয়েছেন বা আপনারা নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থাশীল কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে আলাল বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনের প্রতি যদি আস্থাশীল থাকতাম, তাহলে তো সরকারে এখন যারা আছেন, সরকারের প্রতিনিধিদের মতো একমাস পরে একদিন আসতাম। যেহেতু আমাদের যাওয়ার আর কোনো জায়গা নেই, তাই প্রতিদিনই আসতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, সরকার ক্ষমতায় থেকে এই প্রথম বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হচ্ছে। ২০১৪ সালের নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ছিল না। যেহেতু পরিস্থিতি ভিন্ন, নির্বাচন কমিশন ছাড়া আমাদের অন্য কোনো জায়গা নেই। সুতরাং আস্থা থাকা না থাকার চেয়েও বড় প্রশ্ন হচ্ছে যে, আমরা যাবো কোথায়? আমাদের তো এখানেই আসতে হবে।

আলাল আরো বলেন, গ্রেফতার-হয়রানি বাণিজ্য এখনো চলছে। বাম্পার ফলন যেভাবে হয়, সেভাবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও গ্রেফতারের বাম্পার ফলন শুরু করা হয়েছে। গতকালও একজন মহিলা কমিশনারসহ কয়েকজন প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মওদুদ আহমদের গাড়িতে সশস্ত্র হামলা করা হয়েছে। এগুলো বন্ধ করতে ইসিকে দ্রুত এবং জরুরি পদক্ষেপ নিতে বলেছি।

খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার বিষয়ে আলাল বলেন, আমরা সর্বশেষ সময় পর্যন্ত আশাবাদী। মুক্ত খালেদা জিয়াকে নিয়েই আমরা নির্বাচনে অংশ নেবো।

আপিল শুনানির সময় তিনদিনের পরিবর্তনে দুইদিন করার প্রস্তাবের ব্যাখ্যায় বিএনপির এ নেতা বলেন, এটা ৮ তারিখ পর্যন্ত না নিয়ে ৬ এবং ৭ তারিখের মধ্যে সম্পন্ন করার জন্য বলা হয়েছে। এটা প্রার্থীদের জন্য মঙ্গলজনক হবে।

জোটের প্রতীকের বিষয়ে আলাল বলেন, জোটের পক্ষ থেকে একটি প্রতীকই দেওয়া হবে। আমরা কমিশনের কাছে জানতে চেয়েছি- একজনকে প্রতীক দিলে অবশিষ্ট জোটভুক্ত বৈধ প্রার্থীরা বাতিল হবেন। অন্যদের বিষয়ে কি চিঠি দিয়ে জানাতে হবে নাকি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়েছে যাবে? তারা বলেছেন, স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়েছে যাবে। আর নিবন্ধিত দলের কেউ না হলে তাকে ব্যক্তিগতভাবে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে হবে। আমরা ১১টি দল জোটগতভাবে ভোট করার সিদ্ধান্ত আগেও জানিয়েছিলাম। আজ আবার মনে করিয়ে দিলাম।

তিনি বলেন, প্রার্থিতার জটিলতা নিষ্পত্তি করতে আমাদের কোনো অসুবিধা হবে না। মহাসচিব বারবার বলার পরেও কোনো একটি জেলার রিটার্নিং অফিসার তার স্বাক্ষর নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। এ ব্যাপারে আমরা বৈষম্যের শিকার হতে পারি। আশঙ্কাটা আমাদের মধ্যে রয়েছে।

ইসিতে আপিল দাখিলের শেষ দিন বুধবার। ৬ থেকে ৮ ডিসেম্বর আপিল নিয়ে শুনানি করবে নির্বাচন কমিশন। ৯ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময়। ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হবে। আর আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

(ওএস/অ/ডিসেম্বর ০৫, ২০১৮)