স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারের আমলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির কথা তুলে ধরে বলেছেন, আমরা কর্মকর্তাদের কথা বিবেচনা করে তারা যেন সুখে-শান্তিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করতে পারে সে বিষয়টি মাথায় রেখে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১২৩ ভাগ বেতন বৃদ্ধি করেছি, যা পৃথিবীর কোনো দেশে এ ধরনের নজির নেই।

তিনি বলেন, আগে প্রশাসনে প্র‌মোশন পদ্ধতিতে প্রচন্ড জটিলতা ছিল। এখন সে জটিলতা কেটে গেছে। আমরা ক্ষমতায় থাকার সময় যেভাবে পদোন্নতি দিয়েছি অতীতের কোনো সরকার এভাবে পদোন্নতি দিতে পারেনি।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমি শাহবাগে আয়োজিত বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমিতে চলমান ১০৭তম, ১০৮তম ও ১০৯তম আইন এবং প্রশাসন কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠা‌নে বক্তব্য রা‌খেন জনপ্রশাসন প্র‌তিমন্ত্রী ইসমত আরা সা‌দেক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণাল‌য়ের স‌চিব ফ‌য়েজ আহমদ। স্বাগত বক্তব্য রা‌খেন বি‌সিএস প্রশাসন একা‌ডেমির রেক্টর মোশাররফ হো‌সেন।

প্র‌শিক্ষ‌ণে অংশগ্রহণকা‌রীদের ম‌ধ্যে প্র‌তি‌ক্রিয়া ব্যক্ত ক‌রে বক্তব্য রা‌খেন রেক্টর অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত স ম আজহারুল ইসলাম স‌নিক, শরীফ আসিফ রহমান ও মুশা‌রেফ হুসাইন। অনুষ্ঠা‌নে প্রধানমন্ত্রী প্র‌শিক্ষ‌ণে অংশগ্রহণকারী‌দের ম‌ধ্যে সনদ বিতরণ ক‌রেন। প্রধানমন্ত্রী‌কে বই ও শু‌ভেচ্ছা স্মারক প্রদান ক‌রেন বি‌সিএস প্রশাসন একা‌ডেমির রেক্টর মোশাররফ হো‌সেন।

বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসনের নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ‌কের প্রশাস‌নের নবীন কর্মকর্তারা হ‌লেন ২০৪১ সা‌লের সৈ‌নিক। ২০৪১ সা‌লের বাংলা‌দেশ কেমন হ‌বে-এটা আপনা‌দেরই নির্মাণ কর‌তে হ‌বে।’

তি‌নি ব‌লেন, ‘আপনারা যখন বি‌ভিন্ন জেলায় দা‌য়িত্ব পালন কর‌বেন তখন কোন জেলায় কী উৎপাদন হয় বা কোন ফস‌লের সম্ভাবনা বেশি তার প্রতি গুরুত্ব দে‌বেন। আপনারা নি‌বে‌দিত প্রাণ হ‌য়ে কাজ কর‌লে বাংলা‌দেশেএগিয়ে যা‌বে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব‌লেন, ‘আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। এদেশের জনগণের টাকায় আপনাদের বেতন দেয়া হয়। আপনারা যখন যে জায়গায় দা‌য়িত্ব পালন করবেন, যে জেলায় কাজ করবেন, সেখানকার জনগণকে মূল্যায়ন করবেন। সেখানকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দেশের উন্নয়ন করবেন।’

প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘রাষ্ট্রপরিচালনায় যারা দায়িত্ব পালন করবেন তাদের অবশ্যই প্রশিক্ষণ নিতে হবে। আমি আপনা‌দের জন্য শুধু দে‌শে নয়, বি‌দেশ থে‌কেও প্র‌শিক্ষণ দি‌য়ে আনতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘প্রশিক্ষণ শেষে আপনারা কর্মস্থলে ফিরে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবেন। আমরা চাই একদম তৃণমূল পর্যায় থেকে বাংলাদেশে উন্নয়ন হোক।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যদিও আমাদের সময় শেষ তারপরও কিছু কিছু দিকনির্দেশনা দিয়ে গেলাম যেন এই নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করা হয়। এই নির্দেশনাগুলো আপনারা প্রশাসন থেকে বাস্তবায়ন করলে বাংলাদেশ দারিদ্র্যমুক্ত হবে।’

আওয়ামী সভাপতি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের দারিদ্র্যের হার এখন আছে ১৮ ভাগ। আর আমাদের দারিদ্র্যের হার ২২ ভাগ। আগামী ২০২১ সাল নাগাদ আমরা দারিদ্র্যের হার ১৬ শতাংশে নামাতে চাই। যদিও যুক্তরাষ্ট্র অনেক বড় রাষ্ট্র, তাদের সঙ্গে আমরা প্রতিযোগিতা করতে পারব না, তারপরও আমাদের ভাবনা যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক শতাংশ কম রাখব দারিদ্র্য হার।’

(ওএস/অ/ডিসেম্বর ০৬, ২০১৮)