স্টাফ রিপোর্টার : গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষক নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসি অধ্যাপক খন্দকার নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ভিসি নিজের মনোনীত প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে নানা অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত অভিযোগ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান বরাবর বিভাগটির নিয়োগ বোর্ডের সদস্য, বিষয় বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিনাত হুদা স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ইউজিসিতে পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে।

চিঠিতে তিনি অভিযোগ করেছেন, গত ১৫ নভেম্বর বশেমুরবিপ্রবি’র সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক নিয়োগ বোর্ডের দিন ধার্য করা হয়েছিল। উপাচার্য অধ্যাপক খন্দকার নাসির উদ্দিন কম যোগ্যতা সম্পন্ন জামায়াত-শিবিরের একাধিক প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের প্রতিবাদের কারণে উপাচার্য সফল হননি।

অন্যদিকে এই বোর্ড বসার আগেই তার পছন্দের জামায়াত-শিবিরের একজন প্রার্থীকে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর ওই শিক্ষককে খণ্ডকালীন হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে যা আইন পরিপন্থী।

ওই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, নিয়োগ বোর্ডের বিষয় বিশেষজ্ঞদের কাছে কোনো অফিসিয়াল চিঠি না দিয়েই ১৭ ডিসেম্বর নিয়োগ বোর্ড বসানোর জন্য দিন ধার্য করেছিলেন উপাচার্য। এছাড়া নিয়োগ বোর্ড বসার আগে যাচাই বাছাইয়ের জন্য প্রার্থীদের সিভি পাঠানো হয়নি। এছাড়া মাস্টার্সের ফল প্রকাশের আগেই কয়েকজন শিক্ষককে ওই বিভাগে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যা সম্পূর্ণভাবে অনিয়ম।

চিঠিতে বর্তমান ভিসির শিক্ষক নিয়োগে এমন স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, ‘অপেক্ষাকৃত কম যোগ্যতাসম্পন্ন কিছু মাদরাসা ব্যাকগ্রাউন্ডের জামায়াত-শিবিরের প্রার্থীকে ভিসি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন। এমন নিয়োগ বাণিজ্য আমরা মেনে নিতে পারি না।’

ওই প্রার্থী জায়ামাত-শিবির কর্মী এটা কীভাবে নিশ্চিত হলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওই প্রার্থী মাদরাসা থেকে পড়াশোনা করেছেন।’

মাদরাসা থেকে পড়লেই জামায়াত শিবিরকর্মী প্রমাণিত হয়? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘যে প্রার্থীকে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সে তো আমার সরাসরি শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ে তার চলাফেরা-চালচলন তো আমি জানি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক খন্দকার নাসির উদ্দিনকে কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ সত্য নয়। বরং যিনি এমন অভিযোগ তুলছেন, তিনিই তার পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে না পেরে বিভিন্ন জায়গায় আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।’

নিয়োগ কমিটির সদস্যদের মতামত না নিয়ে তড়িঘড়ি মৌখিক পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে এমন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, লিখিত সম্মতি নেই তবে অধিকাংশ সদস্যের সঙ্গে মৌখিক আলোচনা করে পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ১৮, ২০১৮)