ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : একাদশ জাতীয় সংসদের পাবনা-৪ আসনে নির্বাচনী মাঠ ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ এমপি এর নৌকার দখলে। অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে প্রাণান্ত চেষ্টা করেও হাবিবুর রহমান হাবিব ধানের শীষের মাঠ চাঙ্গা করতে না পারায় শীতলতম অবস্থন বিরাজ করছে। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতা-কর্মী নিয়ে জামায়াতও নিস্ক্রিয় রয়েছে।

কাক ডাকা ভোর হতে গভীর রাত অবধি প্রতিদিনই আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের শরীক দলের নেতা-কর্মীরা ভোটারের দ্বারে দ্বারে যেয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। পাশাপাশি শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হওয়ার টার্গেট নিয়ে এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন নেতা-কর্মীরা।

এবারে মুক্তিযুদ্দের পক্ষের নৌকার পক্ষে প্রচারণায নেমেছেন বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। ঈশ্বরদী ও আটেয়োড়িয়া উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন, ব্যবসায়ীদের সংগঠন শিল্প ও বণিক সমিতি, বাংলাদেশ কৃষক উন্নয়ন সোসাইটি, সাহিত্য-সংস্কৃতি পরিষদসহ পেশাজীবী সংগঠনগুলো নৌকার পক্ষে আনুষ্ঠানিক সমর্থন জানিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা মাঠে নেমেছেন।

এই আসনে নির্বাচনকে ঘিরে মনোানয়ন নিয়ে পুরোনো ‘সিরাজ বনাম হাবিব দ্বন্দ্ব’ প্রকট আকার ধারণ করেছে। উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র বেশরি ভাগ তৃণমূল নেতা-কর্মী হাবিরের পক্ষে প্রচারণায় নামেন নি। জেলার নেতারা দফায় দফায় হাবিবের সাথে সিরাজ সরদারের দেখা করানো এবং নির্বাচনী মাঠে নামার উদ্যোগ নিলেও সিরাজ বা তাঁর অনুসারী তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা নিস্ক্রিয় রয়েছেন। এদিকে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরাও নিশ্চুপ। জোটের মনোনয়ন না পেয়ে জেলা আমীর আবু তালেব মন্ডল স্বতন্ত্র প্রার্থি হযে মনোনয়ন দাখিল করলেও শেষ পর্যন্ত প্রত্যাহার করেন।

উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জামায়াতের একক প্রার্থি প্রায় ৩৮ হাজার ভোট পেয়ে নিকটতম ৩য়
অবস্থানে ছিলেন। একারণে তারা সব সময়েই এই আসনে মনোনয়ন নিয়ে দরকষাকষি করেন।

জামায়াতের নেতা নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে জানান, সিরাজ-হাবিবের এই দ্বন্দ্বের কারণেই আমরা মনোনয়নের বিষযে একাট্টা ছিলাম। বিএনপি যখথাযথ মূল্যায়ন না করায় তাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভও রযেছে। জেলা আমীর তালেব মন্ডল বলেন, হাবিব কেন্দ্রেই বেশী অবস্থানের কারণে তৃণমূলের নেতা-কর্মী এবং জনগণের সাথে তাঁর মেলামেশা খুবই কম।

গত ১৫ই ডিসেম্বর হাবিবের নিজ গ্রাম সাহাপুরে জেলা কমিটির নেতাদের উপস্থিতিতে ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণায় নামার জন্য বিএনপি’র বর্ধিত সভার আযোজন করা হয়। এই সভায় উপজেলা কমিটির সাধারণ
সম্পাদক আলাউদ্দিন বিশ্বাস ছাড়া উপজেলা সভাপতি, পৌর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা অনুপস্থিত ছিলেন।

সভায় দুই দিনের মধ্যে ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণায় অংশ না নিলে বহিস্কার করা হবে বলে আলটিমেটাম দিয়ে সিদ্দান্ত গৃহীত হয়। এই আলটিমেটামের মেয়াদ শেষ হলেও তৃণমূল নেতা-কর্মীরা পূর্বের অবস্থানে অটল রয়েছেন বলে দলীয় নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছেন।

(এসকেকে/এসপি/ডিসেম্বর ১৯, ২০১৮)