ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : বিএনপি’র মনোনীত হাবিবুর রহমান হাবিব আওয়ামী লীগের কাছে ধানের শীষ বিক্রি করে দিয়েছে। তাই লজ্জাজনকভাবে এবারে এই আসনে হাবিবের ধানের শীষের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। 

ঈশ্বরদী উপজেলা বিএনপি বাতিল এবং পৌর বিএনপি স্থগিত করার প্রতিবাদে শনিবার বিকেলে ঈশ্বরদী পুরাতন বাসষ্টান্ডে অনুষ্ঠিত তৃণমূল বিএনপি’র বিশাল সমাবেশে বাতিলকৃত উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব শামসুদ্দিন মালিথ একথা বলেছেন।

এর আগে ঈশ্বরদী রেলগেটস্থ কার্যালয় হতে নেতাকর্মীরা হাবিবের বিরুদ্ধে ঝাটা বিশাল মিছিলে ‘হাবিবের দুাি গালে , জুতা মারো তালে তালে শ্লোগাণ দেয়। মিছিল শেষে হাবিবের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।

শামসুদ্দিন মালিথা ঈশ্বরদীর মাটিতে হাবিবকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে আরো বলেন, তৃণমূলের জনপ্রিয় পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুকে হাবিবই ষড়যন্ত্র করে ঢাকায় গ্রেফতার করিয়ে কারারুদ্ধ করেছে।

খালেদা জিয়া, জাকারিয়া পিন্টুসহ সকল বিএনপি’র নেতা কর্মীর মুক্তির দাবি করে তিনি আরো বলেন, আওযামী লীগ হতে আসা হাবিব বিগত ২০ বছর ধরে এজেন্ট হিসেবে কাজ করায় এই আসনে ধানের শীষ বার বার পরাজিত হচ্ছে।

বক্তরা এসময় হাবিবের কথায কেন্দ্র কর্তৃক অগণতান্ত্রিকভাবে ঈশ্বরদী উপজেলা বিএনপি বাতিল এবং পৌর বিএনপি স্থগিতের ঘটনার তব্রি প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছন। এসময় তৃণমূলের মনোনীত ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম সরদার, পৌর বিএনপি’র সভাপতি আকবর আলী বিশ্বাস, যুগ্ম সম্পদক আনোয়ার হোসেন জনি, সাবেক চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান আমিনুল ইসলাম কেনেডি, পৌর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন জুয়েলসহ বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের তৃণমূলের প্রায় সহস্রাধিক নেতা-কর্মী উপস্তিত ছিলেন।

একাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি’র মনোানয়ন নিয়ে প্রথম হতেই পুরোনো ‘সিরাজ বনাম হাবিব দ্বন্দ্ব’ প্রকট আকার ধারণ করে। সিরাজকে বাদ দিয়ে কেন্দ্র মনোনয়ন দেয়ায় উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র বেশীর ভাগ তৃণমূল নেতা-কর্মী হাবিরের পক্ষে প্রচারণা হতে বিরত থাকেন। এই অবস্থায় জেলার নেতারা দফায় দফায় হাবিবের সাথে সিরাজ সরদারের দেখা করানো এবং নির্বাচনী মাঠে নামার উদ্যোগ নিলেও সিরাজ বা তাঁর অনুসারী তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা নিস্ক্রিয় থাকেন।

গত ১৫ই ডিসেম্বর হাবিবের নিজ গ্রাম সাহাপুরে জেলা কমিটির নেতাদের উপস্থিতিতে ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণায় নামার জন্য বিএনপি’র বর্ধিত সভার আযোজন করা হয়। এই সভায় উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন বিশ্বাস ছাড়া উপজেলা ও পৌর কমিটির তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা অনুপস্থিত ছিলেন। সভায দুই দিনের মধ্যে ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেয়ার আলটিমেটাম দিয়ে সিদ্দান্ত গৃহীত হয়। এই আলটিমেটামের মেয়াদ শেষ হলেও তৃণমূল নেতা-কর্মীরা পূর্বের অবস্থানে অটল থাকেন। শেষ পর্যন্ত গত ১৯শে ডিসেম্বর বিএনপি’র সহ-দফতার সম্পাদক মুহাম্মদ মুনির হোসেন জেলা কমিটিকে প্রেরীত একপত্রে ঈশ্বরদী উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত এবং পৌর কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করে।

এই ঘটনায় বিএনপি’র তৃণমূলের প্রেক্ষিতে এদিকে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরাও নিশ্চুপ। জোটের মনোনয়ন না পেয়ে জেলা আমীর আবু তালেব মন্ডল স্বতন্ত্র প্রার্থি হযে মনোনয়ন দাখিল করলেও শেষ পর্যন্ত প্রত্যাহার করেন।

জামায়াতের নেতা নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে জানান, সিরাজ-হাবিবের এই দ্বন্দ্বের কারণেই আমরা মনোনয়নের বিষযে একাট্টা ছিলাম। বিএনপি যখথাযথ মূল্যায়ন না করায় তাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভও রযেছে। জেলা আমীর তালেব মন্ডল বলেন, হাবিব সেন্ট্রালে বেশী অবস্থানের কারণে তৃণমূলের নেতা-কর্মী এবং জনগণের সাথে তাঁর মেলামেশা খুবই কম। জামায়াতকেও ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণায় দেখা যাচ্ছে না।

(এসকেকে/এসপি/ডিসেম্বর ২২, ২০১৮)