সোহাগ হোসেন, দুমকি (পটুয়াখালী) : পটুয়াখালীর দুমকিতে বেপরোয়া দখল আর দূষণের কবলে পড়ে অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে ঐহিত্যবাহী পীরতলা খাল। 

অবৈধ দখলদার কতিপয় প্রভাবশালী ভিটি মালিকদের ক্রমাগত দখলে সরকারী রেকর্ডিও খালের তীর ভরাট হতে হতে এখন সরু ক্যানেলে পরিণত হয়েছে। একই সাথে ওই খালে শহরের বর্জ্য আবর্জণা ফেলায় পরিবেশ দূষণের চরম সংকটে পড়েছে।

খালের স্বাভাবিক পানির প্রবাহ না থাকায় একদিকে কৃষিক্ষেতের সেচ কার্যক্রম ব্যহত, অন্যদিকে বেহাত হওয়া সরকারী রেকর্ডি খালের বেশীর ভাগ খাস জমিতে গড়ে ওঠছে পাকা ভবন, অসংখ্যে দোকানপাঠ । অবৈধ দখলদাররা যে যেভাবে পারছে, নিজ ভিটির অগ্রভাগের খাল ভরাট করে রেকর্ডি জমির সাথে গড়ে তুলছে স্থাপনার দোকান-পাট। এভাবে দখল আর দূষণ অব্যাহত থাকলে কিছু দিনের মধ্যেই খালটি পুরোপুরি ভরাট ও বেখলে চলে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

ঐতিহ্যবাহী পিরতলা খালের থানা ব্রিজ এলাকা থেকে উত্তররে প্রায় ১কি.মিটার জুড়ে খালের উভয় তীরে চলছে বেপরোয়া দখল দাড়িত্ব। বাজারের পুরাতন ব্রিজ এলাকা থেকে সৃজনী বিদ্যানিকেতন হয়ে উত্তরে অন্তত: আরও ৩মিটার জুরে খালের প্রায় দু’তৃতীয়াংশ ভিটি মালিকদের দখলে চলে গেছে। বাজারের পুরাতন ব্রিজ থেকে দক্ষিণের ব্রিজ পর্যন্ত খালের উভয় তীর ভরাট করে নিত্য নূতন অস্থায়ী টিনশেড ঘর তুলে ভাড়ায় দোকান বসানো হচ্ছে।

অবশিষ্ট খালে বাজারের ময়লা আবর্জণা ফেলে খালটি রীতিমত খালটি ভাগারে পরিনত হয়েছে। এভাবে অবাধে দখল-দাড়িত্ব চললেও যেন কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই। সরকারী সম্পত্তির সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষন কিম্বা কোন রকম তদারকি না থাকায় একজনের দেখা দেখি অন্যরাও এমন অবৈধ দখলে মেতে ওঠেছে। এ বিষয়ে বাজার ব্যবসায়ীরা যেন কারো কোন তোয়াক্কাই করছে না।

শ্রীরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো: আমিনুল ইসলাম সালাম জানান, অবৈধ দখল ও ময়লা আবর্জণায় এটি মরা খালে পরিণত হয়েছে। খালের পনির প্রবাহ না থাকায় কৃষিকাজে সেচের পানির অভাব অপর দিকে নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হয়ে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। তাই জনস্বার্থে খালটি খুলে দেওয়া একান্ত প্রয়োজন। বিষয়টি শ্রীঘ্রই উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন সভায় উত্থাপণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার কমল সাহা অবৈধ দখল প্রসঙ্গে বলেন, রেকর্ডিও সম্পত্তির অগ্রভাগের খাল ভরাটের খবর পেয়ে সরেজমিনে গিয়ে মৌখিক ভাবে নিষেধ করা হয়েছে। বেশ কয়েকটির কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমরা চলে আসার পরে ফের তারা কাজ করেছে।

এ বিষয় দায়িত্বরত সহকারী কমিশনার (ইউএনও) স্যারকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি খালের পরিমাপ করত: নকসা প্রস্তুত করতে নির্দেশনা দিয়েছেন। এতে যাদের অবৈধ দখল আছে তাদের নোটিশ করা হচ্ছে।

দায়িত্বরত সহকারী কমিশনার (ভূমি), দুমকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রায়হান আহম্মেদ বলেন, অবৈধ দখল উচ্ছেদে জরুরী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে উপজেলা ভূমি অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অবৈধ দখলদার দের প্রাথমিক ভাবে নোটিশ করা হচ্ছে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে খাল মুক্ত রাখা হবে।

(এস/এসপি/ডিসেম্বর ২৭, ২০১৮)