স্টাফ রিপোর্টার : মুরগির দাম বাড়ার পর এবার রাজধানীর বাজারগুলোতে বেড়েছে ডিমের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনে (১২টা) ডিমের দাম বেড়েছে ১৫ টাকা। এর আগে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বয়লার মুরগির দাম কেজিতে বাড়ে ১৫ টাকা।

ডিমের পাশাপাশি সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে কাঁচা মরিচ ও শিমের। তবে কিছুটা দাম কমেছে নতুন আলু, টমেটো, গাজর ও বেগুনের। এ ছাড়া বাকি সবজিগুলোর দাম অপরিবর্তিত।

শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া, খিলগাঁও বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

রামপুরা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, শুধু ডিম বিক্রি করেন এমন ব্যবসায়ীরা এক ডজন ডিম বিক্রি করছেন ১০০ থেকে ১৯৫ টাকায়। এক হালি (৪টা) ডিমের দাম রাখা হচ্ছে ৩৫ টাকা। মুদি দোকানে একটি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়। খিলগাঁও ও মালিবাগ হাজীপাড়াতেও একই নামে ডিম বিক্রি হতে দেখা যায়।

ডিমের দামের বিষয়ে হাজীপাড়া বৌ-বাজারের ব্যবসায়ী মো. সাবু মিয়া বলেন, এক সপ্তাহ আগে এক ডজন ডিম বিক্রি করেছি ৮৫ টাকায়। এখন সেই ডিম ১০০ টাকা ডজন বিক্রি করতে হচ্ছে। সে হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম ডজনে বেড়েছে ১৫ টাকা।

এ ব্যবসায়ী বলেন, বেশ কিছুদিন ডিমের দাম কম ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই গত সপ্তাহে ডিমের দাম বাড়তে থাকে। প্রথমে ৮৫ টাকা থেকে ডজন ৯০ টাকা হয়। এরপর এক লাফে ডিমের ডজন ১০০ টাকা হয়ে গেছে।

ডিমের দাম বাড়ার বিষয়ে একই কথা বলেন খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী জামাল হোসেন। এ ব্যবসায়ীর কাছে ডিমের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে বয়লার মুরগিসহ সব ধরনের মুরগির দাম বেড়েছে। মুরগির দাম বাড়ার কারণেই হয়ত ডিমের দাম বাড়তে পারে।

জামান বলেন, আমরা আড়ত থেকে ডিম কিনে এনে বিক্রি করি। তাই ডিমের দাম বাড়ার পেছনের প্রকৃত কারণ আমাদের জানা নেই। আমরা কম দামে কিনতে পারলে কম দামে বিক্রি করি। আবার বেশি দামে কিনতে হলে বেশি দামে বিক্রি করি। ডিম বা মুরগির দাম কী কারণে বাড়ে বা কমে তার প্রকৃত কারণ খামারিরা বলতে পারবেন।

এদিকে কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে বাজারে সব থেকে দামি সবজির তালিকায় রয়েছে করলা। বাজার ও মানভেদে করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও এ সবজিটির দাম একই ছিল।

বাজারের সব থেকে দামি সবজিটির দাম অপরিবর্তিত থাকলেও কাঁচামরিচের দাম পোয়াতে (২৫০ গ্রাম) বেড়েছে ৫ টাকা। এক পোয়াতে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১০ থেকে ১৫ টাকা। আর শিমের দাম কিছুটা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা কেজি।

তবে গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে বেড়ে যাওয়া বেগুনের দাম কিছুটা কমেছে। মানভেদে বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৫০ টাকা কেজি।

বেগুনের মতো কিছুটা দাম কমেছে পাকা টমেটোর। মানভেদে পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৫০ টাকা। গত সপ্তাহে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া গাজরের দাম কিছুটা কমে ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা।

কয়েকটি সবজির দামে উত্থান-পতন হলেও পেঁয়াজসহ বেশিরভাগ সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। আগের সপ্তাহের মতো পুরাতন দেশি পেঁয়াজের কেজি ২৫ টাকা এবং নতুন দেশি পেঁয়াজ ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি। শালগম বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি।

ফুলকপি বাজার ও মানভেদে পাওয়া যাচ্ছে ১০ থেকে ৩০ টাকায়। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা পিস। মুলা বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি। পালনশাক বিক্রি হচ্ছে ৫-১৫ টাকা। লাল ও সবুজ শাক বিক্রি হচ্ছে ৫-১০ টাকা আটি। লাউশাক পাওয়া যাচ্ছে ২০-৩০ টাকায়।

সবজির দামের বিষয়ে হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী রুবেল বলেন, কাঁচা জিনিসের দাম কখন বাড়ে কখন কমে এটা বলা মুশকিল। যখন যে পণ্যের সরবরাহ বেশি থাকে, সেই পণ্যের দাম কম থাকে। আবার সরবরাহ কমে গেলেই দাম বেড়ে যায়।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ২৮, ২০১৮)