ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : আগামী ৩০ ডিসেম্বরের ভোটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে না, জননেতা শামসুর রহমান শরীফের নৌকাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করতে ঈশ্বরদী ও আটঘোড়িয়া ভোটাররা একাট্টা। 

বহুল আলোচিত ও প্রত্যাশিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে। শন্তিপূর্ণ ও নিরাপদে ভোটাররা যাতে তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার ভোট প্রদান করতে পারে এজন্য নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যেই সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।

নির্বাচনের মাঠে আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনীর পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি এবং সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। যৌথবাহিনী টহল দিচ্ছে। এই নির্বাচনে সরকারের একটাই লক্ষ্য ভোটাররা যাতে নিরাপদে ও উৎসব মূখর পরিবেশে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। ঈশ্বরদী ও আটঘোড়িয়ার সহকারী রিটার্ণিং অফিসার এবং নির্বাচন অফিসার ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।

কাল থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সাথে ভোটের মালামাল এবং ভোটগ্রহনকারী কর্মকর্তারা পৌছে যাবেন। রবিবার সকাল ৮টা হতে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ চলবে। ভোটগ্রহণ শেষেই গণণা শুরু হবে। উপজেলা অফিসে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রূম। ভোটের ফলাফল তৈরীর জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেন্দ্র হতে ফলাফল আসার পর ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফলাফল সংরক্ষণ ও তাৎক্ষণিক বেসরকারীভাবে ঘোষণাও করা হবে।

৭১নং পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘোড়িয়া) এবারে ৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পর পর চারবার নির্বাচিত ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুর রহমান শরীফ মহাজোটের প্রার্থি হয়ে নৌকা প্রতিকে। বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব ঐক্যফ্রন্টের ধানের শীষ প্রতিকে। এছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর হাতপাখা প্রতিক নিয়ে মাওলানা আব্দুল জলিল এবং আম প্রতিকে ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টির আব্দুর রশীদ শেখ।

মান অভিমান ভুলে আওয়ামী লীগের সকল নেতা ডিলু ভাইয়ের নৌকা বিজয়ী করতে কাকডাকা ভোর হতে গভীর রাত অবধি প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচনে এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন । আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে অক্ষুন্ন রাখার পাশাপাশি বিগত সময়ের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড এবং উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখার প্রত্যয় নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে বারংবার নৌকার ভোট ভিক্ষা করছে। এবারে প্রথম হতেই ঈশ্বরদীতে নির্বাচনের ভিন্ন চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে। সকলের প্রিয় নেতা ডিলু ভাইয়ের প্রতি পেশাজীবি সংগঠনগুলো তাঁকে শুধু সমর্থন জানিয়েই ক্ষান্ত হয়নি। নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে মানুষের কাছে ভোট চাইতে দেখা গেছে। যা ঈশ্বরদীর ইতিহাসে ব্যতিক্রম।

বিগত সময়ে ঈশ্বরদী ও আঘোড়িয়ার ব্যাপক উন্নয়নের পাশাপাশি মানুষের সামাজিক শান্তি ও নিরাপত্তা বিধানের ব্যবস্থা গ্রহন করানেই পেশাজীবিরাও ভোটের মাঠ চষে বেরাচ্ছেন। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, শিল্প ও বণিক সমিতি, নাগরিক মঞ্চ, সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদ, প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক সমিতি, ঈশ্বরদী প্রেসক্লাব, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এসেসিয়েশনসহ আরো অনেক সংগঠন এবারে নৌকার পক্ষে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছে।

এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বাররাও নৌকার জন্য এলাকায় এলাকায় সভা-সমাবেশ করে চলেছেন। যেকারণে ঈশ্বরদী ও আঘোড়িয়ার প্রতিটি মানুষের মূখে মূখে নৌকা বিপুল ভোটে বিজয়ী হচ্ছে এবং ধানের শীষের জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

পাশাপাশি হাবিবের ধানের শীষের মনোনয়ন নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে বিএনপি। এরমধ্যে শত চেষ্টা করেও দ্বিধাবিভক্তি দূর না হলে হাবিব কেন্দ্রে অভিযোগ করলে উপজেলা বিএনপির কমিটি বাতিল এবং পৌর কমিটি স্থগিত করে। এতে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বিস্ফোরিত হয়ে বিশাল ঝাটা মিছিল করে হাবিবকে অবাঞ্চিত করে এবং কুশ পুত্তলিকা দাহ করে।

এসময় বিএনপি’র তৃণমূলের নেতারাই বলেন, লজ্জাজনকভাবে হাবিবের ধানের শীষের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। এই অবস্থায় দ্বারে দ্বারে ধানের শীষের ভোট ভিক্ষা করাতো দূরের কথা বেশীরভাগ পৌর এলাকাসহ বেশীর ভাগ স্থানে তাঁর কোন পোষ্টার চোখে পড়েনি। চরম নেতা-কর্মী সংকটে পড়েছে হাবিবের ধানের শীষ।

(এসকেকে/এসপি/ডিসেম্বর ২৮, ২০১৮)