আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় চলতি বোরো মৌসুমে কৃষক আগাম আবাদে নামলেও সড়ক ও জনপথ বিভাগের রাস্তা ও ব্রীজ উন্নয়ন কাজের জন্য উপজেলার প্রধান খালের মুখে দু’টি বাঁধ দেয়ার কারণে পানির সমস্যায় দুই সহস্রাধিক কৃষক ধানের চারা রোপন করতে পারছে না। ফলে উৎপাদন লক্ষমাত্রা ব্যহত হবার পাশাপাশি চরম ক্ষতির মুখে পরেছে কৃষকেরা।  

আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় চলতি বোরো মৌসুমে ইতোমধ্যেই ১হাজার ৭শ হেক্টর জমিতে আগাম বোরো ধান রোপন করেছেন চাষিরা। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৩ হাজার ৩শ ১৩ মে.টন চাল।

উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র মন্ডল জানান, চলতি বছর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে মোট ৯হাজার ৬শ ৬৩হেক্টর জমি ইরি-বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রীড ৬হাজার ৫শ ৪৭হেক্টর ও উফসী ৩হাজার ১শ ১৬হেক্টর জমি। কৃষি বিভাগ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৪৩৩১৩ মে.টন চাল।

রাজিহার গ্রামের চাষি কমলেশ হালদারসহ অর্ধশতাধিক চাষিরা জানান, বরিশাল সড়ক বিভাগের আওতায় উপজেলা সদর থেকে ঘোষেরহাট পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন ও থানার সামনে ব্রীজ নির্মান কাজের জন্য উপজেলা সদর এলাকায় রাজিহার ও গৈলা খালের মুখে দু’টি বাঁধ দেয়ার কারণে বর্তমানে চাষিরা ইরি ব্লকে পানি সেচ দিতে না পেরে ধানের চারা রোপন করতে পারছে না। প্রধান খালে বাঁধ দেয়ায় ওই খালসহ শাখা খালগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় ইরি ব্লকের মেশিনগুলো পর্যায়ক্রমে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। অথচ সেচ কাজের জন্য পৌষ মাস থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত চাষিদের মেশিন চালানো দরকার।

চাষিরা আরও বলেন, উন্নয়ন কাজের জন্য চাষিদের কথা বিবেচনা করে খালে পানি চলাচলের ব্যবস্থা রাখার দরকার ছিল। কিন্তু ঠিকাদার খামখেয়ালী করে বাঁধ দিয়ে পানি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। বাঁধ অপসারণ বা পানি চলাচলের জন্য চাষিরা পুণরায় নির্বাচিত এমপি আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ’র হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

খালে দেয়া ওই দু’টি বাঁধ দ্রুত অপসারণ না করলে উপজেলা সদরের উরাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চল বিশেষ করে রাজিহার ও গৈলা ইউনিয়নের সমগ্র এলাকা এবং বাকাল ইউনিয়নের আংশিক এলাকায় পানি সেচ বন্ধ থাকায় চাষিদের কাঙ্খিত উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পরবে। আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পরবে চাষিরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, বাঁধের কারণে পানি সংকটের জন্য চাষিদের চাষাবাদ সমস্যার কথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। পানির কারণে ক্ষতিগ্রস্থ চাষি ও ব্লকের তালিকাও তাকে দেয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস জানান, বাঁধের কারণে বড় ৩০ থেকে ৩৫টি ব্লক ক্ষতিগ্রস্থর তালিকার পাশাপশি আরও অনেক ছোট ব্লক ক্ষতি হবে। বিষয়টি তার দপ্তরের না হওয়ার পরেও চাষীদের স্বার্থ চিন্ত করে তিনি বরিশাল সওজ কর্তৃপক্ষ, সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদার, জেলা প্রশাসক ও সর্বোপরি স্থানীয় এমপি’র সহযোগিতায় সমন্বয় করে সমাধারে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

(টিবি/এসপি/জানুয়ারি ০২, ২০১৯)