বিনোদন ডেস্ক : বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাশবিক নির্যাতনের স্বীকার হয়েছিলেন লাখো নারী। অনেকেই হারিয়েছিলেন প্রাণ। অনেকেই বেঁচে যান ভয়ংকর এক অভিজ্ঞতা নিয়ে। তাদের কেউ কেউ আজও জীবনের ভার বয়ে চলেছেন।

সেইসব নারীদের জীবনের নীরব সংগ্রামকে পরিচালক লিসা গাজী তুলে ধরেছেন ডকুমেন্টারিতে। সেই ডকু চলচ্চিত্রের নাম ‘রাইজিং সাইলেন্স’- এ।

চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত হতে যাচ্ছে রেইনবো ফিল্ম সোসাইটি আয়োজিত ১৭তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এ উৎসব। সেখানে ১২ জানুয়ারি বিকাল ৫ টায় জাতীয় জাদুঘর মূল মিলনায়তনে এবং ১৮ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে সন্ধ্যা ৭টায় ‘রাইজিং সাইলেন্স’ ডকুমেন্টারিটি প্রদর্শিত হবে।

পরিচালক জানান, ছবির টিকিট পাবলিক লাইব্রেরি থেকে সংগ্রহ করা যাবে। টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা। ছবি শুরু হওয়ার এক ঘণ্টা আগে থেকে টিকিট বুথ থেকে টিকিট সংগ্রহ করা যাবে।

পরিচালক লিসা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতনের শিকার হওয়া নারীদের প্রতি নিজের দায়বোধ থেকে এই তথ্যচিত্রটি তৈরি করেছি আমি। এর টিকিট বিক্রির সকল অর্থ মুক্তিযোদ্ধা বীরাঙ্গনা ও তাদের পরিবারকে প্রদান করা হবে। তাই যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করেন তাদের আহ্বান করছি ছবিটি দেখতে আসার জন্য।’

কি দেখা যাবে ছবিতে? বীরাঙ্গনের উপর নির্যাতনের চিত্র? এমন প্রশ্নের উত্তরে পরিচালক বলেন, যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে কুসংস্কারাছন্ন, পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠির বাংলাদেশে কেমন কেটেছে সেইসব লাঞ্ছিতা নারীদের জীবন সেটাই মূলত ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে এই ছবিতে।

তিনি বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশেও আমাদের নেতিবাচক মানসিকতার জন্য অনেকটা নিভৃতেই দিনযাপন করেছেন সেইসব বীরাঙ্গনারা। কেমন ছিল তাদের অবহেলিত, সংগ্রামী, দারিদ্রতায় পিষ্ট কঠিন জীবন, তার অনেকটাই ধারন করার চেষ্টা করেছি। সাক্ষাতকারে নারীরা জানিয়েছেন তাদের জীবন ধারনের নানা গল্প।

জানা যাবে, জীবন সংগ্রামে পিষ্ট হয়ে এই বীর নারীদের অনেকেই কেমন করে জীবন থেকে হারিয়ে যাচ্ছেন।

প্রসঙ্গত, চলচ্চিত্রের অংশগ্রহণকারী নারীদের মধ্যে দুজন পরিচালক লিসা গাজীর সাথে, ধর্ষণের পরিণতি মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী কর্ম পরিকল্পনার সেমিনারে অংশ নিয়েছেন। তাদের শক্তিশালী কণ্ঠকে তুলে ধরেছেন তারা ধর্ষিতা নারীদের মানসিক শক্তি দেয়ার ভাবনায়।

সেইসব সেমিনারে আত্মত্যাগের স্বীকৃতি লাভের পাশাপাশি বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের সবরকম স্বীকৃতির দাবিও জানান ৭৭ বছর বয়সী বীরাঙ্গনা জাবেদা খাতুন।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ০৭, ২০১৯)