বরিশাল প্রতিনিধি : বরিশাল মাদরীপুর রুটে সোমবার সকাল ৬টা থেকে ২৪ ঘন্টার পরিবহন ধর্মঘট চলছে।  কেন্দ্রীয় বাস মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা এই ধর্মঘট মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত চলবে।

ধর্মঘটের ফলে বরিশাল থেকে আরিচা হয়ে ঢাকাগামী সকল পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে। পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের দাবি মানা না হলে ধর্মঘটের পরিধি বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন, হানিফ পরিবহনের বরিশাল আঞ্চলিক ব্যাবস্থাপক মো. রানা তালুকদার।
বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদে গিয়ে দেখা গেছে সকাল থেকেই ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেওয়া যাত্রীরা কাউন্টারে গিয়ে বাস চলাচল বন্ধ জেনে ফিরে যাচ্ছেন। কেউবা বিকল্প পথে মাওয়া হয়ে ঢাকা যাওয়ার জন্য টিকিট নিয়েছেন। তবে ভোলা থেকে আসা গৃহিনী আসমা বেগম যাবেন নবীনগর। আরিচা হয়ে ঢাকার বাস বন্ধ থাকায় চিন্তিত তিনি। আসমা বেগম জানান, ধর্মঘটের কথা জানা থাকলে বাড়ি থেকে রওয়ানা দিতেন না। এমনি অবস্থা অনেক যাত্রীর।
আইউব আলী মজুমদার নামক এক বাস চালক বললেন, বরিশাল থেকে মাওয়াগামী বিএমএফ (বরিশাল-মাদারীপুর-ফরিদপুর) মালিক সমিতির গাড়ি ছাড়লেও তা ফরিদপুরের ভাঙ্গায় গেলেই ফরিদপুর মালিক শ্রমিক ইউনিয় আটকে দিচ্ছে। এতে করে যাত্রীরা পড়ছেন বাড়তি বিড়ম্বনায়।
এই ধর্মঘটের বিষয়ে হানিফ পরিবহনের আঞ্চলিক ব্যাবস্থাপক রানা তালুকদার বলেন, ১১ জুলাই হানিফ পরিবহনের চাকায় পিষ্ট হয়ে নিহত ১১ জনের জন্য প্রতি পরিবারকে ৬০ হাজার, আহত ২২ জনের প্রত্যেককে ২৫ হাজার, ক্ষতিগ্রস্ত মিশুক মালিক ৮ জনের প্রত্যেককে ৪০ হাজার, ২টি অটোরিক্সার জন্য ১৫ হাজার করে, ২টি রিক্সার জন্য ১০ হাজার করে, ক্ষতিগ্রস্ত ৮ দোকানীর প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে এবং রাজধানী চিকিৎসাধীণ অবস্থায় মৃত রিক্সাচালক আলমগীর হোসেনের চিকিৎসার বকেয়া ও মরদেহ আনার জন্য ৩০ হাজার টাকা মিলিয়ে ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা ধার্য্য করেছিলেন ১৯ জুলাইর অনুষ্ঠিত সভায়। তারা এই ক্ষতিপূরণের অংক কমানোর দাবি করলেও তা মানা হয়নি বলে আজকের এই ধর্মঘট। রানা আরো জানান ক্ষতিপূরণের জন্য ধার্য করা টাকার পরিমাণ কমানো না হলে প্রয়োজনে ধর্মঘট আরো বাড়াতে পারে কেন্দ্রীয় কমিটি। রানা যুক্তি দিয়ে বলেন, সরকারী হিসেব মতে নিহত ব্যক্তির জন্য ২৫ হাজার আর আহতদের জন্য ৮ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। সেখানে কেন তারা এত টাকার ক্ষতিপূরণ দিবেন। এছাড়া কোন চালকই ইচ্ছা করে দুর্ঘটনা ঘটান না। একবার যদি এই অংকের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়, তাহলে এটাই নিয়মে পরিণত হবে। এর প্রতিবাদেই তাদের আজকের পরিবহন ধর্মঘট। এর বিকল্প কিছু করার ছিলনা বলে জানান রানা।
(বিএস/এএস/জুলাই ২১, ২০১৪)