নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশের কবিরা চিরকাল প্রগতির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এক্ষেত্রে বিশ্বের সব ভাষাসংগ্রামী কবি ও কবিতা ধারার সঙ্গে বাঙালি কবিদের লড়াই একই মন্ত্রে গাঁথা। আর সে মন্ত্র আরও উজ্জীবিত করতে আগামী ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে জাতীয় কবিতা উৎসব-২০১৯।

শুক্রবার (১১ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জাতীয় কবিতা পরিষদের আয়োজকরা। এসময় পরিষদের সভাপতি কবি মুহাম্মদ সামাদের সভাপতিত্বে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কবিতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কবি তারিক সুজাত।

লিখিত বক্তব্যে কবি তারিক সুজাত বলেন, দেশের জন্য আত্মোউৎসর্গীয় জ্ঞানতাপস মানুষেরা অনেক সময় তাদের প্রাপ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এ দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ভিত তৈরি হয়েছে যে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির প্রাক্কালে উপনীত হয়েও বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে সংস্কৃতিবিষয়ক কোনো ক্যাডার সার্ভিস আজ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এর ফলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত সৃজনশীল পেশার দক্ষ জনবল তৈরির উজ্জ্বল সম্ভাবনা ব্যাহত হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের ২১ আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। হাজার বছরের সাহিত্য-সংস্কৃতির উত্তরাধিকার বহনকারী বাংলা ভাষা সাহিত্য ও সংস্কৃতির জন্য এই পরিস্থিতি আমাদের আহত করে। এ বিষয়ে আমরা সংস্কৃতিবান্ধব সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

তারিক সুজাত বলেন, কবিতার বৃহত্তম এ ঐতিহ্যবাহী আয়োজন শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এক অনন্য উৎসব যা ইতোমধ্যে সারাবিশ্বে বিশেষ মর্যাদা অর্জন করেছে। এবারও বিভিন্ন দেশ ও ভাষার কবিদের উৎসবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এর মধ্যে ভারত, সুইডেন, তুরস্ক, মালদ্বীপ অন্যতম।

ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে জাতীয় কবিতা উৎসবের জন্য রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত তা চলবে পরিষদের কার্যালয়ে। রেজিস্ট্রেশন ফি হিসেবে ঢাকা অঞ্চলের জন্য ৩০০ টাকা এবং জেলা পর্যায়ের কবিদের জন্য ২০০ টাকা ধরা হয়েছে। এছাড়া এবারের কবিতা উৎসবে কবিতা পাঠসহ থাকছে দু’টি প্রবন্ধ পাঠ ও দু’টি সেমিনার।

ভাষার মাসের প্রথম দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে আয়োজনের উদ্বোধন করবেন কবি আসাদ চৌধুরী। কবিতায় বিশেষ অবদানের জন্য পুরস্কার দেওয়া হবে গত উৎসবে ঘোষিত কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজীকে।

সকালে সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন কবিতা পরিষদের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কবি আসাদ চৌধুরী, কবি কাজী রোজী, নির্বাহী সদস্য কবি আনোয়ারা সৈয়দা হক, কবি আসাদ মান্নান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান সুলতান প্রমুখ। বিগত তিন দশকের বেশি সময় ধরে উৎসব থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশের কবিরা যে মর্মবাণী উচ্চারণ করেছেন তাই সমগ্র জাতির কণ্ঠস্বর হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ১১, ২০১৯)