সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : আমার নাবালিকা মেয়েকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করে তালার তপন চক্রবর্তী নামের এক যুবক। আমি বিষয়টি মেয়ের মুখে শুনতে পেরে তাকে বাড়ি থেকে সরিয়ে দেই। এখন সেই তপন আমার ওপর চাপ দিচ্ছে মেয়েকে নিয়ে আসতে। তাকে বিয়ে করতে চায় সে। আর আমিও আমার পরিবার  এতে রাজী না হওয়ায় তপন পুলিশ দিয়ে ভয় দেখাচ্ছে। তার ভয়ে আমরা আতংকিত হয়ে পড়েছি।

বৃহস্পতিবার বিকালে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে একথা বলেন তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের কাঠবুনিয়া গ্রামের রিনা রানী মন্ডল। এ সময় তার স্বামী সুকুমার মন্ডল উপস্থিত ছিলেন।

রিনা জানান তার তিন মেয়ে। বড় মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পর হাজরাকাটি গ্রামের সুনীল চক্রবর্তীর ছেলে তপন আমার দুই মেয়েকে নানাভাবে কুপ্রস্তাব দিতে থাকে। এখবর জানতে পেরে রিনা তার মেজ মেয়েকে বাড়ি থেকে সরিয়ে দেন। পরে তার বিয়ে হয়। এতে তপন ক্ষিপ্ত হয়ে রিনাদের বাড়িতে যায় এবং তাদের ছোট মেয়ে জ্যোতি মন্ডলের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে। স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় রিনা তার ছোট মেয়েকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে রাখেন। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে তপন চক্রবর্তী রিনার মেয়ের বিকৃত ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। এরপর থেকে সে ঘোষনা দেয় যে সে রিনার মেয়ে জ্যোতিকে বিয়ে করবে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে এলাকায় চরিত্রহীন লম্পট উপাধি পাওয়া তপন চক্রবর্তী সন্ত্রাসের পথ বেছে নেয়।

অভিযোগ করে রিনা বলেন গত ৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় তপন চক্রবর্তী তার স্বামী সুকুমার মন্ডলকে মহান্দি বাজার থেকে জোর করে একটি মাইক্রোতে তুলে আনে। পরে উপজেলা পরিষদের সামনে তপন তার অফিসে আটকে রেখে সুকুমারকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এ সময় ভয় দেখিয়ে ও জোর খাটিয়ে সুকুমারের কাছ থেকে তিনটি সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। এসব ঘটনা জানার পর সুকুমারের মেয়ে জ্যোতি বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। সে এখন মৃত্যু শয্যায়। তিনি বলেন তার জীবনের কোনো ক্ষতি হলে তার জন্য দায়ী থাকবে তপন চক্রবর্তী ।

রিনা মন্ডল বলেন এরই মধ্যে তপন পুলিশের কাছে নালিশ জানিয়ে আমাদের হয়রানি করার চেষ্টা করছে। পুলিশ আমাদের বাড়িতে যেয়ে বলে এসেছে থানায় আসতে। আমরা থানায় না যাওয়ায় তপন পুলিশের মাধ্যমে আরও চাপ প্রয়োগ করছে।

কান্নাজড়িত কন্ঠে রিনা বলেন তার মেয়ের ভবিষ্যত জীবনে সর্বনাশ ডেকে আনার জন্য লম্পট ও চরমপন্থি ক্যাডার তপন চক্রবর্তী নানা ফন্দিফিকির করছে। আমি এ বিষয়ে সরাসরি সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। তার কাছে আমাদের দাবি তপন চক্রবর্তীর ফাঁদে পুলিশ যেনো পা না দেয়। এ ছাড়া পুলিশকে ব্যবহার করে অথবা পুলিশের নাম ব্যবহার করে আমাদের দরিদ্র পরিবারটির ক্ষতি না করতে পারে। তিনি তপনকে জিজ্ঞাসাবাদেরও দাবি জানান।

(আরকে/এসপি/জানুয়ারি ১১, ২০১৯)