স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর শেরে বাংলা নগর এলাকায় চলমান আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা জমে উঠেছে পুরোদমে। ছুটির দিন হওয়ায় অন্যান্য দিনের তুলনায় মেলা প্রাঙ্গণে দর্শনার্থীদের ভিড় বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

শুক্রবার (১১ জানুয়ারি) বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায় এখনও প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়নি স্টলগুলোতে। তবুও দর্শনার্থীদের অভাব নেই। সকাল থেকে দর্শনার্থীদের তেমন উপস্থিতি না থাকলেও জুমার নামাজের পর থেকে আসতে শুরু করে দর্শনার্থীরা।

মেলার বিভিন্ন স্টলের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখনও বেচা-বিক্রি শুরু হয়নি। শুধুমাত্র খাবারের দোকানগুলোতে বিক্রি চলছে। মানুষ এসে দেখছে সব। আর সব স্টল, প্যাভিলিয়নে সব ধরনের পণ্য এখন পর্যন্ত প্রদর্শন করা সম্ভব হয়নি। কারণ তাদের বিক্রির জন্য পণ্যগুলো সাজানো সম্পন্ন পর্যায়ে রয়েছে।

তাদের মতে, আগামীকাল না হলেও পরশু দিন থেকে মেলা একেবারে পরিপাটি থাকবে।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০১৯’র মূল ফটক দিয়ে ঢোকার পর প্রথম সারিতেই রয়েছে ডেলটা ফার্নিশার্সের প্যাভিলিয়ন।

প্যাভিলিয়নটিতে গিয়ে দেখা যায়, এখনও তাদের সাজসজ্জার কাজ সম্পন্ন হয়নি। ডেলটা ফার্নিশার্সের বিক্রেতা সবুজ জানান, আমাদের প্যাভিলিয়ন সাজানোর কাজ প্রায় শেষ। আজকেই পরিপূর্ণ হবে। তবে অনেক দর্শনার্থীরা আসছে, দেখছে ও দাম জানতে চাইছে। তাদের প্রথম প্রশ্নই থাকে ছাড়ের বিষয়ে। কিন্তু মেলার শুরুতে তো কোন ছাড় থাকে না।

মেলায় রামপুরা থেকে আগত সুনীল চক্রবর্তী ও রানী তাদের দেড় বছরের ছোট শিশুকে নিয়ে এসেছেন।

তারা জানান, আমরা ছুটির দিনে ঘুরতে বের হন প্রায়ই। ঢাকা শহরে এমনিতেই ঘোরার জায়গা কম। এ কারণে এই প্রাঙ্গণ খুবই আকর্ষণীয় একটি জায়গা। তাই ঘুরতে এসেছি। কেনাকাটা করলেও মেলার শেষের দিকে করবো। তখন ছাড় থাকে অনেক। এখন দাম বেশি।

এদিকে শুক্রবারে মেলা প্রাঙ্গণে সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে দেশীয় বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, জামা-কাপড়সহ রান্না করার জিনিসপত্রের স্টলে। তাছাড়া অনেক দর্শনার্থীদের অভিযোগ বিদেশি স্টলগুলো সেভাবে চোখে পড়ছে না।

এ বিষয়ে মিরপুর থেকে আগত শারমিন আক্তার টুম্পা নামের এক দর্শনার্থী জানান, বিদেশি স্টলগুলো সেভাবে চোখে পড়ছে না। অথচ পত্রিকায় দেখছি বিভিন্ন দেশের স্টল রয়েছে। আর এই মেলায় ভিন্ন ধরনের পণ্য পাওয়া যায়। আমার রান্না করার কিছু হাড়ি-পাতিল দরকার। সেগুলো কিনতে এসেছি।

বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত রফিকুল আলম বলেন, মেলায় মূলত পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি। আরেকটা লক্ষ্য ছিল বিদেশি স্টলগুলোতে কি কি পাওয়া যায় তা দেখতে। পছন্দ হলে নিয়ে নেবো। কিন্তু যা দেখছি এগুলো সারা বছর দেশে এমনিতেই পাওয়া যায়। পাকিস্তানি ও ভারতীয় বিভিন্ন কাপড়, খাবার এগুলো আমরা হরহামেশা লোকাল মার্কেটে পাই এখানে আরো ভিন্ন কিছু আশা করেছিলাম। এখন তা পাচ্ছি না। আবার সাজানোর প্রক্রিয়াই সম্পন্ন হয়নি এখনও। আশা করছি সাজানো শেষ হলে পাবো নতুন কিছু। আগামী শুক্রবার বা অন্য কোনো ছুটির দিন আসতে হবে।

মেলায় প্যাভিলিয়ন, মিনি-প্যাভিলিয়ন, রেস্তোরাঁ ও স্টলের মোট সংখ্যা ৬০৫টি। এর মধ্যে রয়েছে প্যাভিলিয়ন ১১০টি, মিনি-প্যাভিলিয়ন ৮৩টি ও রেস্তোরাঁসহ অন্যান্য স্টল ৪১২টি। এবার বাংলাদেশ ছাড়াও ২৫টি দেশের ৫২টি প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নিচ্ছে। দেশগুলো হলো থাইল্যান্ড, ইরান, তুরস্ক, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, নেপাল, চীন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, পাকিস্তান, হংকং, সিঙ্গাপুর, মরিশাস, দক্ষিণ কোরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান।

এর আগে বুধবার (০৯ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে ২৪তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এরপর তিনি মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ১১, ২০১৯)