মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে ১ বছর যাবৎ বিদ্যালয়ে যাচ্ছেন না শাহাপুর-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক মোঃ মানিক মিয়া। এ নিয়ে কর্তৃপক্ষ ২টি কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করলেও কোনটির জবাব না দিয়ে বিদ্যালয় অনুপস্থিত থাকছেন তিনি। বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকায় ক্লাস রুটিন তৈরি করতে না পাড়ায় ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। এ নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জেলা ও  উপজেলা শিক্ষা অফিসে অবগত করলেও কোন কাজ হচ্ছে না। 

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে নেত্রকোনার মদন উপজেলার শাহাপুর-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পরিচালিত হয়ে আসছে। বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ ৫জন শিক্ষক কর্মরত থাকার কথা থাকলেও সহকারি শিক্ষক মোঃ মানিক মিয়া দীর্ঘদিন যাবৎ অনুপস্থিত রয়েছেন।

উক্ত বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে মোঃ আনোয়ার হোসেন গত ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ ইং তারিখে অত্র বিদ্যালয়ে যোগদান করার পর থেকেই তিনি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। প্রধান শিক্ষক মোঃ আনোয়ার হোসেন, সহকারী শিক্ষক মোঃ মানিক মিয়াকে তিনবার কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করলেও তিনি কোন সদুত্তর দেননি। নিরুপায় হয়ে প্রধান শিক্ষক উপজেলা শিক্ষা অফিসকে অবগত করলে শিক্ষা অফিস দুইটি কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করেন। এতেও তিনি জবাব দেননি। গত ১ বছর যাবৎ বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকায় ক্লাস রুটিনসহ শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এ প্রতিনিধিকে জানান।

পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ললিত,তীব্র,আয়াতুল হোসেন,সামিয়া মির্জা জানান,মানিক স্যার আমাদের গণিত ক্লাস নিতেন। তিনি অনেক দিন ধরে স্কুলে না আসায় আমাদের গণিত ক্লাসটি অনেক সমস্যা হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান, আমি বিদ্যালয়ে ২৩ জানয়ারী ২০১৮ ইং তারিখে যোগদান করার পর থেকেই সহকারী শিক্ষক মোঃ মানিক মিয়া বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। বিষয়টি লিখিত ভাবে উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিসকে জানিয়েছি। উনি অনুপস্থিত থাকায় বিদ্যালয়ের ক্লাস রুটিন সম্পন্ন করতে না পারায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিষয়টি তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।

বিদ্যালয়ের সভাপতি মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান, মানিক মাষ্টার দীর্ঘদিন ধরে বিনানুমতিতে অনুপস্থিত থাকায় আমি ব্যাক্তিগত ভাবে তাকে কাজে যোগদান করার জন্য একাধিকবার সুপারিশ করলেও যোগদান করবে বলে আর যোগদান করেনি। ফলে বিষয়টি রেজুলেশন করে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে।

অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক মোঃ মানিক মিয়া বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার যোগ্যতা থাকার পরেও আমাকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে বহাল রাখা হয়নি। তাই আমি হাইকোর্টে রিট করেছি। রায় পেয়েই কাজে যোগদান করব।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার সূত্রধর শাহাপুর -২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার সত্যতা স্বীকার করে জানান, সহকারী শিক্ষক মোঃ মানিক মিয়া দীর্ঘ এক বছর যাবৎ বিনানুমতিতে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার মতামত নিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।

জেলা শিক্ষা অফিসার খন্দকার মনসুরুল আলম জানান, মানিক মিয়ার অনুপস্থিতির বিষয়টি আমি অবগত আছি। তবে উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রেরণ না করায় এবং এ বিষয়ে মানিক মিয়া হাই কোর্টে রিট করায় দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না।

(এএমএ/এসপি/জানুয়ারি ১৪, ২০১৯)