অমল তালুকদার, পাথরঘাটা (বরগুনা) : নামেই পাথরঘাটা ৫০ শয্যা হাসপাতাল। টিএইচএ সহ ২৮টি পদের মধ্যে মেডিকেল অফিসার-ই থাকার কথা ১৭জন। অথচ আছে ৬ জন। সেই ৬ জনের ১জন আবার রয়েছেন ট্রেনিংয়ে। সুপার সহ ১৭জন নার্স থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ৮ জন। সেই ৮ জন থেকে আবার ১ জনকে ঝালকাঠির রাজাপুরে ডেপুটিশনে নেয়া হয়েছে বলে জানালেন কর্তৃপক্ষ। 

মাত্র ৭জন নার্সের ৫ জনকেই করতে হচ্ছে নাইট ডিউটি। নার্সরা বললেন আমরা অসহায়।নার্স সংকটের কারনে অসুস্থ্য রোগীরা যথাযথ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে নারী ও শিশুরেগীরা। গাইনি ডাক্তার নাই। টেক্নিশিয়ান নাই। এক্স-রে থাকলেও টেকনিশিয়ান নাই। সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছে ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে ওঠা নানা নামের ডায়গনষ্টিক ও প্যাথলজী সেন্টারগুলো। অপারেশন থিয়েটারের (ওটি) সার্জন নাই। বিশেষাজ্ঞ চিকিৎসক নাই। এক্স-রে রুমের দেয়াল ড্যাম হয়ে আছে। ড্যামের কারণে মেশিনও ভাল আছে কিনা তাও কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।

সম্প্রতি কথা প্রসঙ্গে মেডিকেল অফিসার উপল সেন গুপ্ত স্বীকার করলেন ডাক্তার সহ নানা সংকট ও দৈন্যতার কথা। এই হাসপাতালে প্রায় একশত প্রসুতির সিজার করা হলেও বর্তমানে অভিজ্ঞ ডাক্তার নাথাকায় তা আবার বন্ধ রয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এই হাসপাতালের-ই (টিএইচএ) রফিকুল ইসলাম দিপু শতাধিক প্রসুতির সফল সিজার করেছিলেন। তিনি চলে যাওয়ার পরে এখানে আর সিজারিয়ানে চিকিৎসক আসেননি। আর সেই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়েছে স্থানীয় প্রাইভেট ক্লিনিকগুলো। অদক্ষ ডাক্তার দ্বারা সিজার করাতে গিয়ে ওইসব ক্লিনিকগুলোতে অসংখ্য প্রসূতি মা ও তার শিশুকে অকালে পরপারে যেতে হয়েছে। কখনওই দায়ী ক্লিনিক মালিক আর চিকিৎসকরা বিচারের কিংবা আইনের আওতায় আসেননি। ফলে এখানকার মানুষদের পুজি করে এজাতিয় দুর্বৃত্তায়ন চলছেই।

পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জড়াজীর্ন অবস্থা থেকে নতুন ভবন আর ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও তার অন্যান্য সংকটের কোনো পরিবর্তন হয়নি। অবস্থার প্রেক্ষিতে ভুক্তোভোগীরা মনে করেন দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে হাসপাতালের চিকিৎসাটা-ই করানো দরকার আগে। কিন্তু কে করবে এমনতরো চিকিৎসা! এলাকার সুশীল সমাজ সাংবাদিকদের মাধ্যমে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মহোদ্বয়ের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। পাথরঘাটার গণমানুষের দাবীর কথা ভেবে তিনি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে তাদের দাবী।

(এটি/এসপি/জানুয়ারি ১৪, ২০১৯)