মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুরের কালকিনির পৌরসভার ঝাউতলা এলাকায় মঙ্গলবার সকালে কালকিনি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের এসএসসি পরীক্ষার্থী সুখতারা আক্তার নামের একজন স্কুল ছাত্রীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মক জখম করেছে বখাটেরা। 

আহত স্কুল ছাত্রীকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য দুপুরে বরিশাল সেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। তবে পারিবারিকভাবে দাবী করেছে, প্রবাসী স্বামীকে ডিভোর্স দেয়ায় সুখতারার শ্বশুরবাড়ির লোকজন এই ঘটনা ঘটিয়েছে।

পারিবারিক, স্থানীয় ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে বাড়ি থেকে প্রাইভেট পড়তে যাচ্ছিল স্কুলছাত্রী সুখতারা। পৌরসভার ঝাউতলা এলাকার উকিল বাড়ীর পাশে রাস্তায় এলে তাকে একা পেয়ে কয়েকজন বখাটে যুবক ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয়রা অজ্ঞান অবস্থায় ঐ ছাত্রীকে উদ্ধার করে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। স্কুল ছাত্রীর মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পরে সুখতারাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

স্কুল ছাত্রীর চাচী জানান, কালকিনির সাহেবরামপুর এলাকার সালাম আকনের ছেলে ইতালি প্রবাসী রুমন আকনের সাথে উত্তর রমজানপুর গ্রামের মোফাজ্জেল হাওলাদারের মেয়ে সুখতারা আক্তারের দেড় বছর আগে উভয় পরিবারের সম্মতিতে মোবাইলে বিয়ে হয়। বিয়ের ৭/৮ মাস পরে সুখতারা তার স্বামী রুমনকে ডিভোর্স দেয়। আর এই কারণেই সুখতারাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করেছে ওর শ^শুর বাড়ীর লোকজন। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।

সুখতারার চাচী আরো জানান, সুখতারার জ্ঞান ফিরে আসলে ও আমাদের জানায়, প্রবাসী রুমন আকনের ভাই শামন আকন ও আরেক ছেলে পিছন থেকে মাথায় হঠাৎ আঘাত করে। এতে সুখতারা মাটিতে পড়ে যায় এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। সুখতারাকে এখন উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুরোপুরি সুস্থ্য হওয়ার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

অভিযুক্ত প্রবাসী রুমনের ভাই শামন আকন বলেন, আমার ভাই সোমবার বিদেশ থেকে ঢাকা নেমেছে। এখনো আমরা ঢাকাতে আছি। আমি বা আমরা এ কাজ কিভাবে করবো। আমাদের ফাসানোর জন্য এই কাজ করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে আমাদের পরিবারের কেউ জড়িত নয়।

কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. রেজাউল করিম বলেন, স্কুল ছাত্রীর মাথার আঘাত একটু গুরুতর। শরীরের বিভিন্ন অংশেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমরা আমাদের সাধ্যমত চিকিৎসা দিয়েছি। এখন পরিবারের লোকজন উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে নিয়ে গেছে।

কালকিনি থানার ওসি মোফাজ্জেল হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বিষয়টি বিয়ে সংক্রান্ত জেরে হয়েছে। মেয়ের পরিবার যদি মামলা বা আইনগত ব্যবস্থা নিতে চায়, তাহলে আমরা ব্যবস্থা নিব।

(এএসএ/এসপি/জানুয়ারি ১৫, ২০১৯)