স্টাফ রিপোর্টার : সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ৫৭টি চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি ট্রাফিক আইনের সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হবে। শিগগিরই নগরীর ফুটপাত দখলমুক্ত করতে পরিচালিত হবে বিশেষ অভিযান। ভাবা হচ্ছে অ্যাপসভিত্তিক চলাচলরত যানবাহন নিয়ন্ত্রণের কথাও।

মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) রাজধানীর গুলিস্তানে 'ট্রাফিক শৃঙ্খলা পক্ষ- ২০১৯' উদ্বোধনকালে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া একথা জানান। প্রধান অতিথি হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

ডিএমপি কমিশনার জানান, গত বছর নিরাপদ সড়কের দাবিতে দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়েছিল। যার ধারাবাহিকতায় এবারের ট্রাফিক শৃঙ্খলা পক্ষ ঘোষণা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, গত কয়েক মাসের অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে এখন রাস্তায় হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল আরোহী নেই বললেই চলে। ইতোমধ্যে নগরীর ১৩০টি বাস স্টপেজ চিহ্নিত করা হয়েছে। স্টপেজগুলো সুন্দর করতে সিটি করপোরেশন কাজ করে যাচ্ছে। গত বছর পরিচালিত অভিযান নগরবাসীকে ফুটওভারব্রিজ-আন্ডারপাস ব্যবহারসহ নানাবিধ সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।

এবার ট্রাফিক শৃঙ্খলা পক্ষ উপলক্ষে নগরীজুড়ে বিভিন্ন পয়েন্টে ৫৭টি চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যার মাধ্যমে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সচেতনতা তৈরি করাই মূল উদ্দেশ্য।

‘ঢাকায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ চলছে, যার ফলে সঙ্গত কারণেই যানজট রয়েছে। কিন্তু এই যানজট সহনশীল রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ। ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের সাড়ে চার হাজার কর্মী সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু জনসাধারণের প্রত্যাশার কাছাকাছি যেতে পারিনি।’

‘আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে কিন্তু তারচেয়ে বড় সমস্যা আমাদের আইন না মানার সংস্কৃতি। আমরা আইন প্রয়োগ করছি এবং করবো। কিন্তু এটি সমাধান নয়। সবাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলে শত সমস্যারও ধীরে ধীরে সমাধান হয়ে আসবে।’

কমিশনার বলেন, এ কার্যক্রমই শেষ নয়, বছরব্যাপী এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। এই ট্রাফিক শৃঙ্খলা পক্ষ পালনের পরই আমরা নগরীর ফুটপাত দখলমুক্ত করার অভিযানে নামবো। উবার-পাঠাওসহ বিভিন্ন রাইড শেয়ারিং অ্যাপসগুলো বিপুল সংখ্যক পরিবহন নামিয়েছে। এদের নিয়ন্ত্রণে আনার চিন্তা-ভাবনাও রয়েছে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ট্রাফিক শৃঙ্খলা পক্ষ উদ্বোধন করে বলেন, ১৫ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি এ কার্যক্রম চলবে। ট্রাফিক সদস্যরা সড়কে শৃঙ্খলা আনতে অহর্নিস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে বাসচালক, হেলপার, পথচারীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করবো।

‘এবারের কার্যক্রমে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রেড ক্রিসেন্ট সরাসরি আমাদের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। প্রয়োজনে পরে রোভার স্কাউটকেও যুক্ত করা হবে।’

গত বছর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট থেকেই ট্রাফিক সপ্তাহ ঘোষণা করা হয়েছিল। যা সারাদেশে ব্যাপক সাড়া ফেলে। এবার ট্রাফিক শৃঙ্খলা পক্ষের মাধ্যমে আমরা সেটাই আবারো মনে করিয়ে দিতে চাই।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ১৫, ২০১৯)