জকিগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি : জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার কসকনকপুর ইউনিয়নের কায়স্থকাপন ইনামতি গ্রামের বৃদ্ধ রিয়াজুর রহমান উরফে আয়াছ আলীর আধাপাকা বসতঘরটি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে আপন ভাতিজা মাওলানা আব্দুস সোবহান।

বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বার ও থানা পুলিশকে জানিয়ে কোনো প্রতিকার না পেয়ে এলাকার উত্তেজিত জনতা গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে অভিযুক্ত সোবহানকে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

নির্যাতনের শিকার আয়াছ আলী, প্রতিবেশী তাজুল ইসলাম, শিহাব উদ্দিন, আতাউর রহমান প্রমুখ জানান, আয়াছ আলীর ভাই মৃত আজিজুর উরফে রহমান ছায়াদ আলীর ছেলে আব্দুস ছোবহান গত বছরের আগস্টে ১০ লাখ ৩৬ হাজার টাকায় একটি যৌথ সম্পত্তি বিক্রি করেন। চাচা আয়াছ আলীকে তা থেকে ৫ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা দেয়ার কথা থাকলেও দেয়া হয় ২ লক্ষ ১২ হাজার টাকা।

পরবর্তীতে এই ২ লক্ষ ১২ হাজার টাকাও ছোবহানকে দেয়ার জন্য ছাপ দেন ছোবহান। এক পর্যায়ে এই টাকা না দিলে ভয়ভীতি প্রদান করলে বাধ্য হয়ে বিবাহ উপযুক্ত মেয়ে, ছেলের বউকে নিয়ে পার্শবতী তাঁর এক মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেন। কিছুদিন পর প্রতিবেশী সিরাজ উদ্দিনের মধ্যস্থতায় বড়িতে ফিরেন তিনি। গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর আব্দুস ছোবহান, নজু আহমদসহ ৫/৬জন ব্যক্তি সাথে নিয়ে দা, শাবল, হাতুড়ি, রডও লাঠিসোটা নিয়ে আয়াছ আলীকে জোর পূর্বক ঘর থেকে বের করে দেন এবং বসত ঘরটি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেন। অভিযুক্তরা ঘরের আসবাবপত্র, মালামাল, স্বর্ণালংকার, দলিলপত্র সবই নিয়ে যান। শুধু তাই নয় অভিযুক্তরা কেটে নেয় বাড়ির মূল্যবান অনেক গাছও। সব মিলিয়ে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার।

বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক রিয়াজ ও জকিগঞ্জ থানা পুলিশকে জানিয়ে কোনো প্রতিকার পাননি। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি বর্গ বারবার বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন এবং উল্টো মামলা ও হয়রানির শিকার হন। ১৩ জানুয়ারি বিষয়টি লিখিতভাবে সিলেটের পুলিশ সুপারকে অবগত করেন আয়াছ আলী।

জকিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়কে বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেন পুলিশ সুপার। বুধবার পুলিশ এ ঘটনায় নোমান উদ্দিন, সবু মিয়া ও মঈন উদ্দিন নামে ৩ জনকে আটক করে।

স্থানীয় ইউনিয়ন বাজারের ব্যাবসায়ী নজরুল ইসলাম জানান, সরকারি জায়গা দখল করে বাজারের মাঝখানে ঘর তৈরী করায় এলাকাবাসী সেই ঘরটি ভেঙ্গে দিলে ১৬ জন অভিযুক্ত করে চাঁদাবাজির মামলা করেন আব্দুস সোবহান। মাওলানা নামধারী এই সুবহান দীর্ঘ দিন থেকে এলাকাতে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে এলাকার জনগণকে হয়রানী করে আসছেন। এমনকি তার আপন দুই ভাইকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে তিনি নিজে তাদের জায়গা সম্পত্তি দখল করে ভোগ করছেন। তার নিজ ভাই শিক্ষক মাওঃ আব্দুল করিম ও তার নিজ মা কে বাড়ি থেকে বের করে দেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় জানান, এ ঘটনায় মুল আসামীসহ ৪জনকে আটক করা হয়েছে। তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা

(ওএসপি/এসপি/জানুয়ারি ১৭, ২০১৯)