গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা জুড়ে ইরি-বোরো রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। শীত উপেক্ষা করে এখন দিন-রাত জমিতে সেচ ও চাষ দেয়া, বীজতলা থেকে চারা তোলাসহ বোরো ধান চাষের নানা কাজে এখন দারুণ ব্যস্ত তারা।

মাঠে ব্যস্ততা দেখে ও তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে চাষাবাদ করে বাম্পার ফলনের মধ্য দিয়ে তারা বিগত সময়ের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চান।

এদিকে কয়েক বছর ধরে ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় অনেক কৃষক অন্য ফসলের দিকে ঝুঁকছেন বলেও সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে।

উপজেলার গড়েয়া গ্রামের হষরত, ফরকান্দপুর গ্রামের তাহের, ও কয়ের পাড়া গ্রামের আমজাদসহ অনেক চাষি জানান, গত ২ বছর যাবত ধানের মূল্য না পাওয়ায় তারা বাধ্য হয়ে ভুট্টা, শাক-সবজিসহ অন্যান্য ফসল চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন।

কৃষকরা আরও জানিয়েছেন, বর্তমানে ধানের চারা থেকে শুরু করে ডিজেল ও সারের সঙ্কট না থাকায় বিভিন্ন মাঠে বোরো ধানের চারা রোপণের কাজ অনেকে ইতোমধ্যেই শেষ করে ফেলেছেন আবার কেউ কেউ শুরু করছেন।

উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের কৃষক আবুল বাশার লিটন, বেনজির ইসলাম, আনারুল হোসেন ও লিটন ইসলাম জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর অনেক কৃষক তাদের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণ করেও চারা বিক্রয় করতে পারবেন। কিন্তু কৃষকদের শঙ্কা শুধু ধান-চালের ন্যায্য মূল্য নিয়ে।

বরিশাল ইউনিয়নের ভবনিপুর গ্রামের আমজাদ জানান, তিনি ৩ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপন করবেন বলে সব প্রস্তুতিই প্রায় সম্পন্ন করেছেন। এরই মধ্যে প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ধানের চারা বাবদ ৮শ’ টাকা, জমি চাষ করা বাবদ ৮শ’ টাকা, দিনমজুর বাবদ ১ হাজার ৫শ’ টাকা, সার কেনা বাবদ ১ হাজার ৫শ’ টাকা।

এছাড়া ৩ মাস পানি সেচ বাবদ ২ হাজার টাকা, নিড়ানী ও কিটনাশকসহ নানা ওষুধ বাবদ আরও প্রায় ১ হাজার টাকাসহ ধান কাটা-মাড়াইসহ আরও প্রয়োজন ২ হাজার টাকা। এ নিয়ে প্রতি বিঘা জমিতে চাষাবাদ বাবদ সর্বমোট খরচ হবে প্রায় ৯ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা। ফলন ভালো হওয়াসহ দাম ভালো পাওয়া গেলে এই খরচ আর পরিশ্রম দুই স্বার্থক হবে।

(এসআইআর/এসপি/জানুয়ারি ১৯, ২০১৯)