আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য কর্মীর বিরুদ্ধে সরকারী ঔষধ জনগণকে না দিয়ে বস্তা ভর্তি করে ফেলে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বস্তা ভর্তি বিপুল পরিমান সরকারি ঔষধ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। উপজেলা হাসপাতাল প্রধানের ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস।

১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সঞ্জয় রায়, কালাম হাওলাদার, ক্লিনিক প্রতিবেশী অনুপ আইচসহ অনেকেই জানান, সোমবার সকালে রাজিহার কমিউনিটি ক্লিনিকের সামনের খালপাড়ে তারা একটি বস্তা দেখতে পান। ওই বস্তা খুলে তারা ক্লিনিকের সরকারী বিভিন্ন প্রকার ঔষধ দেখতে পান। ওই ঔষধগুলো এলাকার সাধারণ রাগীদের মধ্যে ক্লিনিকের স্বাস্থ্য কর্মীর মাধ্যমে বিতরণ করার কথা থাকলেও তিনি তা না করে বস্তা ভর্তি করে ফেলে দেয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। খালপাড় থেকে উদ্ধার করা ঔষধগুলো উর্ধতন কর্মকর্তাদের দেখানোর জন্য স্থানীয়রা নিজেদের জিম্মায় রেখেছেন। সোমবার ১১টার দিকে বস্তাভর্তি সরকারী ঔষধ উদ্ধার করা হলেও ওই ক্লিনিকে তখন পাওয়া যায়নি স্বাস্থ্য কর্মী ফাতেমাকে। ক্লিনিক ছিল তালাবদ্ধ।

ঔষধ উদ্ধার করা লোকজন জানান, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে জনগনের স্বাস্থ্যসেবা দোড় গোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকার রাজিহার গ্রামে বাজারের পূর্ব পাশে কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করেন। সেখানে বর্তমানে ফাতেমা আক্তার নামের এক স্বাস্থ্য কর্মী দ্বায়িত্ব পালন করছেন। অভিযোগ রয়েছে, ওই স্বাস্থ্য কর্মী নিয়মিত কমিউনিটি ক্লিনিকে না আসার। গ্রামের সাধারণ রোগীরা অফিস চলাকালিন সময়ে স্বাস্থ্য কর্মী ফাতেমাকে পাচ্ছেন না তারা। ফলে সরকারের মহৎ উদ্যেশ্য দোড় গোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে তাদের এদিকে উদ্ধার করা ঔষধগুলো দেখা গেছে মেয়াদ উত্তীর্ণ। রোগীদের জন্য সরকারের বিনামূল্যে বিতরণের ঔষধ রোগীদের না দিয়ে বস্তা ভর্তি করে ফেলে দেয়ায় চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

স্বাস্থ্য কর্মী ফাতেমা আক্তার বলেন, সোমবার একটি প্রশিক্ষনের জন্য তিনি উপজেলা হাসপাতালে অবস্থান করায় ক্লিনিকে ছিলেন না, প্রশিক্ষন চলবে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। সপ্তাহে ছয় দিনই অফিস করেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন ২০১৭ সালের মার্চ মাসে তিনি এই ক্লিনিকে যোগদান করেছেন। বস্তাভরা ঔষধগুলো ২০১৬ সালে মেয়াদ উত্তীর্ণ। বিষয়টি আগের স্বাস্থ্য প্রধান ডা. আলতাফ হোসেনকে জানানো হয়েছিল। তিনি ওই ঔষধ রিসিভ করেন নি। তার যোগদানের আগের ঔষধগুলো অন্যকেউ ফেলতে পারে। ওখানে দীর্ঘ দিন কোন স্বাস্থ্য কর্মী ছিল না। ক্লিনিক দিয়ে পানি পড়াসহ স্থানীয় পরিবেশের বেশ কিছু সমস্যার কথাও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের প্রধান একেএম মনিরুল ইসলাম বলেন, নিয়মিত মাসিক সভায় যোগদানের জন্য তিনি জেলা শহর বরিশাল রয়েছেন। কমিউিনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য কর্মীরা তার আওতায় থাকার কথা জানিয়ে মঙ্গলবার তিনি সরেজমিনে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস প্রদান করেন।

(টিবি/এসপি/জানুয়ারি ২১, ২০১৯)