পাবনা প্রতিনিধি : পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বুধবার (২৩ জানুয়ারি) শিক্ষক সমিতির নির্বাচন। আর এ নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের ব্যানারে দু’টি প্যানেল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। 

একটি প্যানেল নিজেদেরকে বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত আদর্শের চেতনায় বিশ্বাসী দাবী করে মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান শিক্ষক সমিতির সভাপতি আওয়াল কবির জয় বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ-নীল দল প্যানেলের সবাই বঙ্গবন্ধু পরিষদ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য দাবী করে বলেন, অপর প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী ড. মো. ওমর ফারুক এক সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া পরিষদের সঙ্গে জড়িত ছিল। এতে বোঝা যায় তারা বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত আদর্শ থেকে বিচ্যুত। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে বিচ্যুত প্যানেলটিকে মদদ দিচ্ছেন পাবিপ্রবি’র উপাচার্য প্রফেসর ড. এম রোস্তম আলী।

সংবাদ সম্মেলনে নীলদলের সভাপতি প্রার্থী ড. হাসিবুর রহমান লিখিত বক্তব্যে দাবী করেন, বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর এম. রোস্তম আলী নীল দলের বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং নগ্ন হস্তক্ষেপের মাধ্যমে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়াতে নীল দলের প্রার্থীদের হুমকি ধামকি দিচ্ছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনের অভিযোগ করেন।

এদিকে পাবিপ্রবি’র শিক্ষক পরিষদের ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী ড. মো. ওমর ফারুক বলেন, মিথ্যা ও অপপ্রচার রটাচ্ছে একটি চক্র। তিনি বলেন, ২০০১ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের সক্রিয় সদস্য ছিলাম। তিনি বলেন, আমার প্যানেলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিচ্যুত কেউ নেই।

আমি আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান দাবী করে তিনি বলেন, পাবিপ্রবি’র বঙ্গবন্ধু পরিষদে ইচ্ছে মাফিক সদস্য তৈরি করে রাখা হয়েছে। আদৌত যারা সদস্য হয়েছেন, তারা নিজেরাই জানেন না তারা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সদস্য।

পাবিপ্রবির প্রতিবাদ

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবাদ পাঠানো হয়েছে। দপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ ফারুক হোসেন চৌধুরী স্বাক্ষরিত ওই প্রতিবাদ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, পাবনা প্রেসক্লাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষকদের সংবাদ সম্মেলনের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে। এ ধরনের সংবাদ সম্মেলনে ভাইস চ্যান্সেলরের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখান করে এর প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে। সেই সাথে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য এখানে তুলে ধরা হলো-

ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম রোস্তম আলী যোগদানের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৮০ কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকান্ডের সূচনা হয়েছে। ইতোমধ্যে নতুন অ্যাম্বুলেন্স ক্রয় করা হয়েছে। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ডের মধ্যে একটি মহল ঈর্ষান্বিত হয়ে এ ধরনের সংবাদ সম্মেলন করছেন বলে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়। সংবাদ সম্মেলনে ভাইস-চ্যান্সেলরের বিরুদ্ধে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন নিয়ে যে সকল অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণরূপে ভিত্তিহীন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করাসহ শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করার পাশাপাশি ভাইস-চ্যান্সেলরের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্যই একটি গোষ্ঠীর নোংড়া পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এই সংবাদ সম্মেলন। শিক্ষক সমিতির নির্বাচন পুরোপুরি শিক্ষকদের নিজস্ব বিষয়।

এখানে ভাইস-চ্যান্সেলরের হস্তক্ষেপের কোন সুযোগ নেই। যেহেতু ভিসি ভোটার নন, সেহেতু তার পক্ষে কোন প্যানেলকে ভোট দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত অভিভাবক হিসেবে তার পক্ষে কোন প্যানেলের পক্ষ নেওয়া কোন সুযোগ নেই। তিনি কেবল সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

(পিএস/এসপি/জানুয়ারি ২২, ২০১৯)