রানীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি : কোন ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই যত্রেতত্রে ঠাকুরগায়ের রানীশংকৈলে হচ্ছে গবাদি পশু জবাই। যেন দেখার কেউ নেই? এতে রুগ্নসহ নানান রোগে জর্জরিত গবাদি পশু জবাই করে সেই গোশত (মাংস) বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। এ গোশত খেলে সাধারণ মানুষের বিভিন্ন রোগের আক্রান্ত হওয়ার আশংকা থেকে যায়। পৌর শহর জুড়ে একটি কসাই খানা থাকলেও সেটি তদারকীর অভাবে সঠিক ব্যবহার না হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সম্প্রতি ভোরে পৌর শহরের বন্দর ব্রীজ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একের পর এক পশু জবাই করা হচ্ছে। একই ভাবে বন্দর কলেজ বাজারে পশু জবাই করা হচ্ছে। তবে এসময় সংশ্লিষ্ট পশু চিকিৎসক স্যানেটারী ইন্সপেক্টর কিংবা পৌর কৃর্তপক্ষের কেউ নেই।

জানা যায়,পৌর শহরে বন্দর ব্রীজ এলাকায় চারজন কলেজ হাটে একজন চাঁদনী সিনেমা হলে একজন শিবদিঘী যাত্রীছাউনিতে দুজন শান্তিপুরে একজন পৌর মার্কেটে কয়েকজন ছাগল জবাই করে গোশত বিক্রি করে আসছেন। সে হিসেবে এখানে গড়ে প্রতিদিন ৮ থেকে১০ গরু এবং ৫ থেকে ৬টি ছাগল জবাই করে গোশত বিক্রি করা হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থা কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ ফিরোজ আলম বলেন,রোগান্ত পশুর গোশত খেলে মানুষের খাদ্য বিষক্রিয়া ঘটে এতে ডায়রিয়া পেট ফেপে যাওয়া সহ বিভিন্ন ধরনের গুরুতর রোগ সংক্রামক হওয়ার আশংকা থাকে। তাই এধরনের পশুর গোশত খাওয়া একে বারে নিষেধ।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা যায়, যত্রতত্রে ও সনদ ছাড়াই পশু জবাই শাস্তি যোগ্য অপরাধ। এ অপরাধ ব›েধ পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রন বিল-২০১১ নামের নতুন আইন করা হয়। কেউ এই আইন অমান্য করিলে তিনি অনুর্ধ্ব এক বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড বা নুন্যতম ৫ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা আর্থিক দন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন।

অথচ এ আইন বাস্তবায়নে পৌর কতৃপক্ষের কোন উদ্যোগ নেই। এ বিষয়ে পৌর কতৃপক্ষের উদাসীনতায় কসাইরা তাদের ইচ্ছেমত পশু জবাই করে চলছেন।

গত রবিবার এ বিষয়ে কথা বলতে দায়িত্বে থাকা পৌর লাইসেন্স পরির্দশক নজরুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন,আমি ট্রেনিংয়ে আছি বিষয়টি তদারকির জন্য প্রধান সহকারী ডালিম শেখের সাথে যোযোযোগ করেন। পরে তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন,এক সময় পশুর স্কাস্থ্য পরীক্ষা করে জবাই হতো তবে এখন অজ্ঞাত কারণে হচ্ছে না। তবে তিনি বলেন,বিষয়টি দায়িত্বপ্রাপ্ত স্যানিটারী ইন্সপেক্টর ভালো বলতে পারবেন।

দায়িত্ব প্রাপ্ত স্যানেটারী ইন্সপেক্টর সারোয়ার হোসেন মুঠোফোনে বলেন, পৌর ও প্রাণি সম্পদ কতৃপক্ষের উদাসীনতায় আমি দায়িত্ব পালন করতে পারছি না। বিশেষ করে পৌরসভা কতৃপক্ষ এগিয়ে আসলে আমি যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে প্রস্তুত রয়েছি।

প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ রায়হান আলী গতকাল বুধবার মুঠোফোনে বলেন, আমার দপ্তরের জনবল সংকট। তারপরও পৌর কতৃপক্ষ যদি সহযোগিতা চাই এবং আমার লোকের সামান্য সন্মানীর ব্যবস্থা করে তাহলে আমাদের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত অস্থায়ী চিকিৎসক দিয়ে কাজটি চালানো যেতো।

তবে বুধবার বেলা দুইটার দিকে পৌর মেয়র আলমগীর সরকারের বক্তব্য নিতে ফোন দিলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। আর পৌর সচিব পদটি আপাতত ফাকা থাকায় তারও বক্তব্য নেওয়া সম্বভব হয়নি। সচিবের দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রকৌশলী জাবেদ আলীকেও পাওয়া যায় নি পৌর কার্যালয়ে।

(কেএএস/এসপি/জানুয়ারি ২৩, ২০১৯)