রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত, টাঙ্গাইল : ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলাধীন রেলসেতু ও  পৌলী ব্রিজ সংলগ্ন নদী তীরে ভেকু বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় চরম হুমকির মুখে পড়েছে ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মহাসড়ক সেতু। অবৈধভাবে মাটি কাটার ফলে মহাসড়ক ও রেল সেতুর দুই পাশ থেকে মাটি সরে গিয়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।

এছাড়া অবৈধ মাটি কাটায় আশপাশের এলাকায় বর্ষা মৌসুমে ব্যাপক ভাঙনের কবলে পড়ে দেড় শতাধিক পরিবার ভিটেবাড়ি ছাড়া হয়েছে। গত বর্ষা মৌসুমে রেলসেতুর দক্ষিণ পাশের নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় ঢাকার সাথে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার পৌলী নদীর ওপর কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত সড়ক ও রেল সেতুর অদূরে ১টি ভেকু বসিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে পুংলী নদীর ওপর পাশাপাশি নির্মিত সড়ক ও রেল সেতু দুইটি হুমকির মুখে রয়েছে। এভাবে মাটি কাটার ফলে যেকোন সময় নদীর ওপর সেতু দুটি দেবে যেতে পারে।

এলাকাবাসী জানায়, রাজাবাড়ী গ্রামের প্রভাবশালী ব্যাংক কর্মকর্তা জাকির হোসেন মাসুম ও দাদন ব্যবসায়ি সোহেল সিকদার প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে দেধারছে চালাচ্ছে অবৈধভাবে মাটি কর্তন ও বিক্রির মহোৎসব।

মাটি খেকোরা পুংলী নদী থেকে কর্তন করা কোটি টাকার মািট বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে। ভেকু দিয়ে মাটি কাটার কারণে গত বছর দু’বার তিতাস গ্যাসের মূল পাইপলাইন ভেসে উঠে টাঙ্গাইল, গাজিপুরসহ আশপাশের জেলাগুলোতে গ্যাস সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে সাধারণ জনগণকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়। ওই সময় নদীতে বালু উত্তোলন বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হলে সাময়িকভাবে মাটি বিক্রি বন্ধ হয়।

পরে পাইপ লাইন মেরামত করা হলে আবার অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে প্রভাবশালীরা। এভাবে ভেকু দিয়ে মাটি কাটার ফলে গ্যাসপাইপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, লোক দেখানোর জন্য মাঝে মধ্যে নদী থেকে মাটি বিক্রি বন্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চালানো হলেও ভ্রাম্যমান আদালত চলে যাওয়ার পর পরই আবার শুরু হয় মাটি বিক্রি করার মহোৎসব। এতে রেলসেতু, কবরস্থান, বসতভিটা ও স্কুলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কতিপয় ব্যবসায়ী জানান, মাটি কাটতে তাদেরকে প্রশাসন কোন অনুমতি না দিলেও কতিপয় প্রশাসনের লোকের সাথে যোগাযোগ করেই আমরা ব্যবসা পরিচালনা করছি।

এ ব্যাপারে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিত দেবনাথ বলেন, তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না। এভাবে নদীতে অবৈধ পন্থায় কেউ মাটি বিক্রি করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে

(আরকেপি/এসপি/জানুয়ারি ২৬, ২০১৯)