আন্তর্জাতিক ডেস্ক : স্তনের বৃদ্ধি ঠেকাতে কিশোরীদের বুকে গরম পাথর দিয়ে আয়রন করার আফ্রিকান এক পদ্ধতির দিকে ঝুঁকে পড়েছে ব্রিটেন। পুরুষের অনাকাঙ্ক্ষিত চাহনি, যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের হাত থেকে বাঁচাতে কিশোরীদের বুকে গরম এই পাথর আয়রন ব্রিটেনে ছড়িয়ে পড়ছে।

লন্ডন, ইয়র্কশায়ার, অ্যাসেক্স ও পশ্চিম মিডল্যান্ডের কমিউনিটির কর্মীরা দেশটির প্রভাবশালী দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানকে এসব তথ্য দিয়েছেন। বেদনাদায়ক, নিপীড়নমূলক ও কার্যত অফলপ্রসূ এই প্রথা আফ্রিকার বেশ কিছু দেশে চালু রয়েছে। যেখানে স্তনের গঠন ও বৃদ্ধি ঠেকাতে কিশোরীদের বুকে গরম পাথরের আয়রন করা হয়।

ব্রিটিশ নারী ও শিশু উন্নয়নবিষয়ক সংস্থা কেম উইমেন অ্যান্ড গার্লস ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের প্রধান মার্গারেট এনইয়ুদজিরার দেয়া তথ্য বলছে, ব্রিটেনে কমপক্ষে ১ হাজার নারী ও শিশু গরম পাথরের এই আয়রনের শিকার হয়েছেন। তবে এ ব্যাপারে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য বা পরিসংখ্যান তারা সংগ্রহ করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন।

জাতিসংঘ কিশোরীদের বুকে আয়রন করার এই পদ্ধতিকে বিশ্বের লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার পাঁচ অপরাধের একটি হিসেবে উল্লেখ করেছে। কিশোরীদের মায়েরা মনে করেন, এটা একটি ঐতিহ্য; যা তাদের সন্তানকে অনাকাঙ্ক্ষিত পুরুষের লোলুপ দৃষ্টি, যৌন হয়রানি ও ধর্ষণ থেকে রক্ষা করবে।

তবে মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞ এবং আয়রনের শিকার কিশোরীরা এ কাজকে শিশু নির্যাতন বলে দাবি করেছেন। এর ফলে কিশোরীদের শারীরিক এবং মানসিক ক্ষত, সংক্রমণ, সন্তানকে দুধপানে অক্ষমতা, স্তনের বিকৃতি এবং ক্যান্সারও হতে পারে।

দেশটির এক কর্মী বলেন, সম্প্রতি সাউথ লন্ডনের ক্রয়ডন শহরে এ ধরনের ১৫-২০টি ঘটনা সম্পর্কে তথ্য পেয়েছেন তিনি। কিশোরীদের মা, চাচী এবং দাদিরা মনে করেন, স্তনের দ্রুত বৃদ্ধি ঠেকাতে গরম পাথরের অায়রনের মাধ্যমে স্তনের টিস্যু ভেঙে ফেলা হয়।

তিনি বলেন, অনেক সময় তারা এটা প্রত্যেক সপ্তাহে একবার অথবা দুই সপ্তাহে একবার করেন। তবে এটা নির্ভর করে স্তনের বৃদ্ধি কীভাবে হচ্ছে তার ওপর।

সোমালিয়ান বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ মনোবিজ্ঞানী লিলা হুসেইন বলেছেন, উত্তর লন্ডনের ক্লিনিকে তিনি অন্তত পাঁচজন নারীর সঙ্গে কথা বলেছেন, যারা স্তন আয়রনের শিকার হয়েছেন। তিনি বলেন, তারা সবাই ব্রিটিশ নারী, সবাই ব্রিটিশ নাগরিক। এর ফলে ওই নারীদের একজনের স্তন চ্যাপ্টা হয়ে গেছে। দ্য গার্ডিয়ান।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ২৭, ২০১৯)