রানীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি : বর্তমান সরকার গ্রামকে শহর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছেন যার মধ্যে অন্যতম হলো গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা। সরকার গ্রামের অলিগলির ছোট ছোট কাচা সড়কগুলো পর্যন্ত নতুন করে পাকা করে দিচ্ছেন গ্রামকে শহর হিসেবে গড়ে তোলার অংশ হিসেবে। আর কাজগুলো বাস্তবায়ন করছেন সরকারের অতি গুরত্বপূর্ণ দপ্তর স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগের মাধ্যমে। অথচ এত দায়িত্বশীল একটি দপ্তরের প্রধানের বিরুদ্বে ঠাকুরগায়ের রানীশংকৈল উপজেলায় অভিযোগের শেষ নেই।

উপজেলার রাতোর ইউনিয়নে ধামের হাট নামক এলাকা থেকে ১.৩১ কিলোমিটার নতুন সড়ক পাকাকরণের কাজ চলছে। সেখানে সড়কের শুরুর কিছুদুরে প্রায় ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি বক্স কার্লভাট নির্মাণ কাজ চলছে। এ বক্স কালভাটের সড়কের সাথে সংযোগস্থলের মুল ঢালাই সম্প্রতি হয়েছে। দৈর্ঘ্য ২২ প্রস্থ ১৬ ফিটের বক্স কালভাটটি ঢালাই কাজের সময় উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগের দুজন র্কায সহকারী ছাড়া দায়িত্ব শীল কোন প্রকৌশলী সেখানে উপস্থিত থাকতে দেখা যায় নি।

স্থানীয়দের অভিযোগ গ্রামে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলেও প্রকৌশলী না থাকায় আমরা হতবম্ব কারণ ঠিকাদার সব সময় চুরি করতে চাইবে আর আমরা সেটা সহজে বুঝতে পারবো না। প্রকৌশলী থাকলে তিনি বুঝতে পারতেন। কাজটি হয়তবা ভালো হতো কিন্তু উপজেলা প্রকৌশলী তারেক বিন ইসলাম সেদিন সেখানে অজ্ঞাত কারণে উপস্থিত হন নি। কালভাটটি উপজেলা প্রকৌশলী ছাড়াই ঢালাই সর্ম্পূণ হয়েছে।

ঢালাইয়ের সময় এ প্রতিবেদক সেখানে উপস্থিত ছিলেন, সে-সময় দেখা যায় কম মুল্যর নিন্ম মানের সিমেন্ট ও নেটিং করা ছাড়া পাথর দিয়ে ঢালাই করা হচ্ছে। এ সময় মালামাল সংর্কীণ হওয়ায় ঘন্টদুয়েক করে থেমে থেমে কাজটি সর্ম্পণ হয়। ঢালাই কাজের সময় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাউকে দেখতে পাওয়া যায় নি। তাই বলা যায় ঠিকাদার আর উপজেলা প্রকৌশলীর অনুপস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বক্স কালভাটের ঢালাই কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেছে যা নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এছাড়াও ঐ এলাকার আব্বাস শফিকুল সহ একাধিক ব্যক্তি বলেন,কালভাটটি তো যেমন তেমন করে হচ্ছে কিন্তু ইতিমধ্যে যে সড়কটির কাজ হয়েছে সেখানে সাব-ব্যাজে খোয়ার বদলে বালু মাটি বেশি দিয়ে দায়সারা ভাবে কাজ করা হয়েছে। এ নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলীকে অভিযোগ করলেও তিনি কোন কর্ণপাত করছেন না । এ কাজটির নিয়োগপ্রাপ্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জেলা সদরের মেসাস রেহেনা ট্রের্ডাস। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি উপজেলার রাতোর ও লেহেম্বা ইউনিয়ন মিলে মোট দুই কিলো তিনশত মিটার সড়ক নির্মাণ কাজ প্রায় দেড় কোটি টাকায় চুক্তিবদ্ব হয়েছে।

এদিকে উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদ এলাকা হয়ে জগদ্দল পর্যন্ত দুই কোটি আশি লক্ষ টাকা ব্যয়ে প্রায় চার কিলো আটশত মিটার নতুন সড়কের প্রথম স্তরে বালু দেওয়ার কথা থাকলেও মাটি দেওয়ার অভিযোগ মিলেছে। সম্প্রতি সে সড়কে প্রতিবেদক মোটর সাইকেল যোগে ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য নির্মাণাধীন সড়কে গাড়ী চালিয়ে সড়কটি ঘুরে দেখেন। সে-সময় দেখা যায়, সড়ক নির্মাণের জন্য মাটি ঘুরে বালু দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হচ্ছে মাটি। এ সড়কের উপর দিয়ে হার হামেশায় পথচারীরা গাড়ী চালিয়ে যাচ্ছেন। অথচ বালু দেওয়া হলে একটি বাইসাইকেল চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নই বলে মনে করেন এলাকার বাসিন্দারা। এ নিয়েও উপজেলা প্রকৌশলীকে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী তারেক বিন ইসলামের বক্তব্য মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বালুর বদলে মাটি আমি দেখতে পায় না। আর বক্স কালর্ভাটে আমি ছিলাম না তাতে কি হয়ছে কার্য সহকারীরা তো ছিলো। এটা কোন ব্যাপার না।

(কেএএস/এসপি/জানুয়ারি ২৮, ২০১৯)