ইমাম উদ্দিন সুমন, নোয়াখালী : নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীর হাউজিং এলাকায় রাহেনা বেগম (১৯) নামে এক গৃহকর্মীকে বাসায় আটকে রেখে অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায় অ্যাসিডে শরীর ঝলসে দেওয়ার পাশাপাশি অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে মুমুর্ষ অবস্থায় চট্টগ্রামের কালুরঘাট ব্রিজের নিচে ফেলে রাখা হয়। পরে তাঁর স্বজনরা তাঁকে উদ্ধার করে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। 

নির্যাতিতার গ্রামের বাড়ি হাতিয়ার চানন্দি ইউনিয়নের চরনঙ্গলিয়া এলাকায়।

খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে তাঁর প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মো. সাহাব উদ্দিন, মিজানুর রহমান সুমন, আলেয়া বেগম, রীনা আক্তার ও পলি বেগম(২৮) নামে পাঁচজনকে আটক করেছে। তাদেরকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নির্যাতিতা ও তার পরিবার জানায়, তাঁদের প্রতিবেশি রিনা আক্তার প্রায় চার মাস আগে তাকে বাসায় কাজ দেওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে ভাগিয়ে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদী নিয়ে আসে। এরপর রিনা তার পরিচিত আলেয়া বেগম নামের এক মহিলার বাসায় তাকে কাজ করতে বাধ্য করেন। প্রথম মাস মাইজদী নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আলেয়ার বাসা ছিল। সেখান থেকে তিন মাস আগে বাসা পরিবর্তন করে শহরের বালুরমাঠ-সংলগ্ন মাইজদী হাউজিং এষ্টেটে একটি নতুন বাসা ভাড়া নেন। সে থেকে গত তিন মাস ভালোভাবেই ওই বাসায় কাজ করেছিলেন। কিন্তু মাস খানের আগে গৃহকর্তী তাকে বাসায় অসামাজিক কাজ করার জন্য চাপ দেন। এতে রাজি না হলে তার উপর মারাত্মক নির্যাতন চালানো হয়, যা মধ্যযুগীয়তাকে হারমানায়।

নির্যাতিতা রাহেলা জানান, তাকে রড দিয়ে পিটিয়ে পুরো শরীরে আঘাত করা হয়। মুখের ভেতর ওপরের পাটির বেশ কয়েকটি দাঁত তুলে ফেলা হয়। তারপরও তিনি অনৈতিক কাজে রাজি না হওয়ায় গত প্রায় ৮-১০ দিন আগে রাতের বেলায় তার শরীরে অ্যাসিড ঢেলে দেওয়া হয়। এতে তার বুক, পেট, পিটসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়। পরে ঝলসে যাওয়া শরীরের অংশ থেকে পঁচন ধরলে তাকে বাসযোগে চট্টগ্রাম নিয়ে কালুরঘাট এলাকার একটি ব্রিজের নিচে ফেলে আসা হয়।

(এস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৯)