সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : ঝুলে পড়া প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে এবং গতি ফিরিয়ে আনতে এমপি, ইউএনও ঐক্যমত হয়ে বিশেষ তৎপর ভূমিকা শুরু করছেন। এ প্রক্রিয়ায় সময়মতো সরকারি নিয়মে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া না করার অভিযোগে ৪৭ শিক্ষক-শিক্ষিকাকে কারণ দর্শাও নোটিশ দেয়া হয়েছে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাগণ শিক্ষকদের পেশাগত কাজে অবহেলার অভিযোগ এনে এ নোটিশ দেন। এর পর থেকে শিক্ষক শিক্ষিকারা সরকারি নিয়মের কাছাকাছি এসে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া শুরু করেছেন।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো: জিয়াউল হক জিয়া জানান, কেন্দুয়া উপজেলায় ১শ ৮২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে ৩১ জন প্রধান শিক্ষক ও ৫৫ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। এছাড়া ৭ জন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার মধ্যে আছেন মাত্র ৩ জন। অফিস সহকারী ৩ জনের মধ্যে আছেন মাত্র ১ জন।

তিনি আরো জানান, প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা নতুন করে ঢেলে সাজাতে ও গতি ফিরিয়ে আনতে ইংরেজী নতুন বছরের প্রথম দিকেই নেত্রকোনা-৩ আসনের এমপি অসীম কুমার উকিল বিশেষ উদ্যোগ নিতে মতবিনিময় করেছেন। তার পাশাপাশি উদ্যোগে অংশ গ্রহণ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-ইমরান রুহুল ইসলাম। তিনি বিভিন্ন বিদ্যালয় পরিদর্শন করে সময়মতো বিদ্যালয়ের না আসার অভিযোগে গত ১৬ জানুয়ারি ১৮ জন, ১৭ জানুয়ারি ২১ জন, ১৮ জানুয়ারি ৫ জন ও ২৩ জানুয়ারি ৩ জনকে কারণ দর্শাও নোটিশ দেয়ার নির্দেশ দেন। এই তৎপরতায় অংশ নেন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তারাও।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জিয়াউল হক জিয়া বুধবার জানান, প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে এম.পি অসীম কুমার উকিল আমাদেরসঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। মতবিনিময় কালে তিনি বলেছেন শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের উন্নয়নে যা যা সহযোগিতা দরকার সবই করা হবে। তবে শিক্ষকদেরকে সময়মতো বিদ্যালয়ে না এসে অন্যান্য কাজে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকলে তাদের বিরোদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে কোন আপোস করবেননা বলে সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। একই কথা বলেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-ইমরান রুহুল ইসলাম। তিনি নিজেই বিদ্যালয় পরিদর্শন করে ঝুলেপড়া শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নের চেষ্টা করছেন।

এলাকার ছাত্র অভিভাবকগণ জানান, অনেক শিক্ষক শিক্ষিকাগণে বিদ্যালয়ে দেড়িতে আসা যাওয়া বিষয়টি নিয়মেই পরিনত হয়েছিল। তারা নিজেদেরকে রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িয়ে রেখে প্রক্সি শিক্ষক ভাড়া করে ক্লাশ চালাতেন। এতে প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল দশা বিরাজ করে আসছিল। রাজনৈতিক তদবিরের কারণে শিক্ষা কর্মকর্তাগণ প্রাথমিক শিক্ষা ঢেলে সাজাতে এতদিন কোন পদক্ষেপই নিতে পারছিলেন না।

শিক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর প্রাক্রিয়ায় ইউএনও আল ইমরান রুহুল ইসলাম বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় গতি আনতে আমাদের কোন পিছুটান নেই। এমপি অসীম কুমার উকিল নিজেও বলেছেন তিনিও বিদ্যালয় পরিদর্শন করবেন। তিনি চান সুন্দর শিক্ষা ব্যবস্থা এবং শিক্ষক শিক্ষিকাদের সরকারি নিয়মে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করা। এজন্যে আমরা প্রতিনিয়ত বিদ্যালয় পরিদর্শন করছি। আগামী দিনেও করব, আমাদের এ প্রক্রিয়া একটি নতুন চলমান প্রক্রিয়া তা চলতেই থাকবে।

(এসবি/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৯)